বাকী ব্যবসা করায় ৮ বীমা কোম্পানিকে ২.১৯ কোটি টাকা জরিমানা

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাকীতে বীমা ব্যবসা করায় নন-লাইফ খাতের ৮ কোম্পানিকে জরিমানা করেছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) । ২০২১ সালের বিভিন্ন সময় কোম্পানিগুলোর ওপর এসব জরিমানা আরোপ করা হয় বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষের পরিদর্শন ও পরিবীক্ষণ শাখা। গত ১৩ জানুয়ারি এ সংক্রান্ত একটি তালিকা কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।

নিয়ন্ত্রক সংস্থার তথ্য মতে,  কর্তৃপক্ষের পরিদর্শন দল দেশজুড়ে বিভিন্ন নন-লাইফ বীমা কোম্পানির অফিসে দৈবচয়নের ভিত্তিতে পরিদর্শন করে বাকীতে ব্যবসাসহ নানান অনিয়ম খুঁজে পায়। পরবর্তীতে এসব অনিয়মের বিষয়ে কর্তৃপক্ষে দ্বিপক্ষীয় শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানির সিদ্ধান্ত অনুসারে ২০২১ কোম্পানিগুলোকে সর্বমোট ২ কোটি ১৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

বাকী ব্যবসার জন্য ২০২১ সালে জরিমানা প্রাপ্ত বীমা কোম্পানিগুলোর তালিকায় রয়েছে- কর্ণফুলী ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, ফেডারেল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, মেঘনা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, ইস্টার্ণ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, বাংলাদেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, পিপলস ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, গ্রীন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি এবং ইসলামী কমার্শিয়াল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি।

আইডিআরএ’র পরিদর্শন ও পরিবীক্ষণ শাখার তথ্য অনুসারে, কর্ণফুলী ইন্স্যুরেন্সের দিলকুশা শাখা, নবাবপুর শাখা, নিউমার্কেট শাখা এবং লোকাল অফিসে বাকীতে ব্যবসার প্রমাণ পায় পরিদর্শন দল। রিভিউ শুনানি শেষে বীমা কোম্পানিটিকে ১৩ লাখ টাকা জরিমানা আরোপ করা হয়। জরিমানার এ অর্থ পরিশোধ করেছে কর্ণফুলী ইন্স্যুরেন্স।

ফেডারেল ইন্স্যুরেন্সের দিলকুশা শাখা ও মতিঝিল শাখায় কমিশন সংক্রান্ত অনিয়ম এবং বাকীতে ব্যবসার প্রমাণ পায় কর্তৃপক্ষের পরিদর্শন দল। অভিযোগের বিষয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে শুনানি হয়। শুনানিতে ফেডারেল ইন্স্যুরেন্সকে ১৯ লাখ টাকা জরিমানা আরোপ করা হয়। যা এরইমধ্যে পরিশোধ করেছে কোম্পানিটি।

অনিয়ম, জালিয়াতি এবং তহবিল তছরূপ করেছে মেঘনা ইন্স্যুরেন্স। কোম্পানিটির প্রধান কার্যালয় ও ১০টি শাখা কার্যালয়ে এসব অনিয়ম সংঘটিত হওয়ার প্রমাণ পেয়েছে কর্তৃপক্ষের পরিদর্শন দল। এরই ভিত্তিতে শুনানি ও রিভিউ শুনানি শেষে কোম্পানিটিকে ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা জরিমানা আরোপ করে কর্তৃপক্ষ। জরিমানার এ অর্থ কিস্তিতে দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে।

ইস্টার্ণ ইন্স্যুরেন্সের আগ্রাবাদ ও খাতুনগঞ্জ শাখায় বাকী ব্যবসার প্রমাণ পেয়েছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়াও কোম্পানিটির আগ্রাবাদ শাখার ম্যানেজারের বিরুদ্ধে অসৌজন্যমূলক আচরণের প্রমাণ মিলেছে কর্তৃপক্ষে। এসব কারণে বীমা কোম্পানিটিকে সর্বমোট ৩০ লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এরই মধ্যে জরিমানার অর্থ কোম্পানিটি পরিশোধ করেছে।

বাংলাদেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের সৈয়দপুর শাখা এবং চট্টগ্রামের আন্দরকিল্লা শাখায় পরিদর্শনকালে বাকী ব্যবসার তথ্য পায় নিয়ন্ত্রক সংস্থার পরিদর্শন দল। পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে কর্তৃপক্ষে অনুষ্ঠিত শুনানিতে বীমা কোম্পানিটিকে সর্বমোট ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এরইমধ্যে জরিমানার অর্থ পরিশোধ করেছে কোম্পানিটি।

পিপলস ইন্স্যুরেন্সের সৈয়দপুর শাখায় বাকী ব্যবসার জন্য ১ লাখ টাকা জরিমানা করে আইডিআরএ। এ ছাড়াও কোম্পানিটির বগুড়া শাখায় বাকীতে ব্যবসা, মানি রিসিটে জালিয়াতি, মেরিন কভার নোটে জালিয়াতি, ট্যারিফ রেইট লংঘনসহ বিভিন্ন অনিয়মের জন্য কোম্পানিটিকে আরো ১২ লাখ টাকা জরিমানা করে কর্তৃপক্ষ। জরিমানার সব অর্থ কোম্পানিটি পরিশোধ করেছে।

গ্রীন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্সের নীলফামারীর সৈয়দপুর শাখায় বাকীতে ব্যবসা পরিচালনার জন্য গেলো বছর ১ লাখ টাকা জরিমানা করে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ। জরিমানার এ অর্থ বীমা কোম্পানিটি এরইমধ্যে পরিশোধ করেছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষের পরিদর্শন ও পরিবীক্ষণ শাখা।

ইসলামী কমার্শিয়াল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিকেও বাকী ব্যবসা পরিচালনার জন্য গেলো বছর ২ লাখ টাকা জরিমানা করে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ। তবে জরিমানার এই অর্থ এখনো অপরিশোধিত রয়েছে বলে জানিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইডিআরএ।