সফলতা অর্জনে ন্যাশনাল লাইফের ৩৮ বছর

তাফহিমুল ইসলাম: ‘ঘরে ঘরে এনএলআই, জনে জনে এনএলআই’ এই স্লোগানকে সামনে নিয়ে ১৯৮৫ সালে প্রতিষ্ঠিত ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স প্রতিষ্ঠার ৩৮ বছরে দেশের শীর্ষতম লাইফ বীমা কোম্পানি হিসেবে গৌরব অর্জন করেছে। দীর্ঘ এই ৩৮ বছরে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক নানান স্বীকৃতি অর্জন করেছে কোম্পানিটি। একই সঙ্গে মানসম্মত সেবা দিয়ে গ্রাহকের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে কোম্পানিটি।

গ্রাহকদের আস্থা ধরে রাখতে বদ্ধ পরিকর ন্যাশনাল লাইফ কর্তৃপক্ষ বলছে, অতীতে তারা গ্রাহকদের যেভাবে সেবা দিয়েছে, ভবিষ্যতে তার চেয়ে আরো ভালো সেবা দেয়ার চেষ্টা করবে। বীমার মাধ্যমে অধিক ঝুঁকি নির্বাহের জন্য প্রয়োজনে আরো নতুন প্রোডাক্ট চালু করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে ৩৮ বছরে পদার্পনকারী এ বীমা প্রতিষ্ঠানটি।

ন্যাশনাল লাইফ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দীর্ঘ এই ৩৮ বছরে তারা প্রায় ৬০ লাখ বীমা পলিসি বিক্রি করেছে এবং গ্রাহকদের কাছ থেকে ২০২১ সালে ১৪ হাজার ২৩ কোটি টাকা প্রিমিয়াম সংগ্রহ করেছে। অন্যদিকে সারভাইভাল বেনিফিট, মেয়াদ উত্তীর্ণ ও মৃত্যুদাবিসহ সর্বমোট ৮ হাজার কোটি টাকার বীমা দাবি পরিশোধ করেছে। 

তথ্য মতে, ন্যাশনাল লাইফের ২০২১ সালে সম্পদের পরিমাণ ৫ হাজার ২৯৮ কোটি টাকা। ২০২১ সালে সরকার নির্ধারিত বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করেছে ৪ হাজার ৭০০ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। কোম্পানিটির লাইফ ফান্ডের পরিমাণ ২০২১ সালে ৪ হাজার ৩৮৩ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। আর পরিশোধিত মূলধন ১০৮ কোটি ৫২ লাখ টাকা।

সাফল্যের ধারাবাহিকতায় ন্যাশনাল লাইফ কাওরানবাজারস্থ ১২ তলা নিজস্ব ভবন এনএলআই টাওয়ারে প্রধান কার্যালয়ের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। একই সাথে ১০ তলা বিশিষ্ট নিজস্ব বাণিজ্যিক ভবন ফেনীতে এনএলআই টাওয়ার-২, খুলনায় এনএলআই টাওয়ার-৩, ও যশোরে এনএলআই টাওয়ার-৪ এবং দেশের বিভিন্ন জেলায় জেলায় নিজস্ব ফ্লোর স্পেসে অফিস কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।

ব্যবসার এই অসামান্য প্রবৃদ্ধি এবং করপোরেট সুশাসন প্রতিপালনের জন্য ন্যাশনাল লাইফ ২০২১ সালে ‘আইসিএসবি ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড-২০২০ শ্রেষ্ঠ লাইফ বীমা কোম্পানি হিসেবে ‘সাউথ এশিয়ান বিজনেস এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড-২০২১’। মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কাজিম উদ্দিন বীমা খাতে সাউথ এশিয়ার শ্রেষ্ঠ সিইও অ্যাওয়ার্ড-২০২১ লাভ করেন।

শ্রেষ্ঠ জীবন বীমা কোম্পানি হিসেবে RTV বীমা অ্যাওয়ার্ড-২০২১, মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কাজিম উদ্দিন শ্রেষ্ঠ সিইও হিসেবে RTV বীমা অ্যাওয়ার্ড-২০২১ এবং অন্তর্জাতিক পুরস্কার হিসাবে ৩য় ইমার্জিং এশিয়া ইন্স্যুরেন্স অ্যাওয়ার্ড-২০২১, ইমার্জিং এশিয়া ইন্স্যুরেন্স অ্যাওয়ার্ড-২০১৯, ইমার্জিং এশিয়া ইন্স্যুরেন্স অ্যাওয়ার্ড-২০১৮ অর্জন করে।

কোম্পানির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কাজিম উদ্দিন বলেন, আল্লাহর অশেষ রহমতে বেসরকারি খাতের জীবন বীমা শিল্পে একমাত্র ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স দেশী ও অন্তর্জাতিক বিভিন্ন পুরস্কার অর্জনে এই গৌরবময় সাফল্যের অধিকারী হলো। সঞ্চয় বিনিয়োগ কর্মসংস্থানে তিনটি সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা নিয়ে ১৯৮৫ সালের ২৩ এপ্রিল কোম্পানির আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়। 

ন্যাশনাল লাইফ ‘ঘরে ঘরে এনএলআই, জনে জনে এনএলআই’ এই স্লোগান নিয়ে বিপুল জনগোষ্ঠীর সঞ্চয় করার পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সর্বোচ্চ প্রিমিয়াম আয়, দ্রুত বীমা দাবি পরিশোধ ও সঠিক কর্ম পরিকল্পনার মাধ্যমে ন্যাশনাল লাইফ ব্যবসায়ীক অগ্রযাত্রা অব্যাহত রেখেছে।

তিনি আরো বলেন, বীমা খাতে সরকারের কর্মপরিকল্পনার সাথে সামঞ্জস্য রেখে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের উপযোগী নতুন বীমা পরিকল্পনা প্রণয়ন, স্বাস্থ্য বীমার প্রসার, বঙ্গবন্ধু শিক্ষা বীমা, প্রতিবন্ধীদের জন্য বিশেষ বীমা, প্রবাসী কর্মীদের জন্য প্রবাসী বীমা, ব্যাংকাস্যুরেন্স ও বিনিয়োগ বহুমুখীকরণের মাধ্যমে সরকারের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় অংশগ্রহণ, নিজস্ব প্রশিক্ষণ একাডেমি প্রতিষ্ঠা এবং দক্ষ বীমাকর্মী গড়ে তোলার মাধ্যমে দেশব্যাপী জীবন বীমার সুবিধা প্রসারের ভবিষ্যৎ কর্ম পরিকল্পনা রয়েছে। 

কাজিম উদ্দীন বলেন, করোনাকালে যখন অনেক প্রতিষ্ঠান কর্মী ছাঁটাই করেছে তখন আমরা অস্থায়ী কর্মীদের স্থায়ীকরণ করেছি। বর্তমানে ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি স্থায়ী কর্মীর সংখ্যা সাড়ে ৪ হাজার এবং কমিশন ভিত্তিক কর্মীর সংখ্যা প্রায় ৭০ হাজার রয়েছে।