ডেল্টা লাইফের নতুন পর্ষদ অনুমোদন দিয়েছে আপিল বিভাগ

আবদুর রহমান আবির: ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ গঠনের সমঝোতা চুক্তি অনুমোদন দিয়েছে সুপ্রীম কোর্টের আপীল বিভাগ। আজ সোমবার (২২ আগস্ট) বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিক, বিচারপতি ওবায়দুল হাসান এবং বিচারপতি এম এনায়েতুর রহিমের বেঞ্চ শুনানী শেষে এই অনুমোদন দেন।

এর ফলে ডেল্টা লাইফের প্রশাসক প্রত্যাহার করে নতুন পরিচালনা পর্ষদের দায়িত্ব নেয়ার ক্ষেত্রে আর কোন আইনগত বাধা থাকল না বলে জানিয়েছেন বীমা কোম্পানিটির আইনজীবী ব্যারিস্টার কারিশমা জাহান।

শুনানিতে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)’র পক্ষে অংশ নেন ব্যারিস্টার খান মো. শামিম আজিজ এবং ব্যারিস্টার রিমি নাহরিন। অন্যদিকে ডেল্টা লাইফের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন ব্যারিস্টার তানজিবুল আলম, ব্যারিস্টার মুস্তাফিজুর রহমান খান এবং ব্যারিস্টার কারিশমা জাহান।

এর আগে ২৪ জুলাই ২০২২ তারিখে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)’র কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে সমঝোতার মধ্য দিয়ে নতুন পরিচালনা পর্ষদ গঠনের সিদ্ধান্ত হয়।

ওই বৈঠকে আইডিআরএ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ও ডেল্টা লাইফের সাসপেন্ডেড পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ও নতুন পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে নতুন পরিচালনা পর্ষদ গঠনসহ কোম্পানি পরিচালনায় ১০টি সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

এর আগে ২০২১ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি ডেল্টা লাইফের পরিচালনা পর্ষদ সাসপেন্ড করে বীমা খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইডিআরএ। কর্তৃপক্ষের সাবেক সদস্য সুলতান-উল-আবেদীন মোল্লাকে প্রশাসক নিয়োগ দেয়া হয়। পরে গত দেড় বছরে ৩ দফায় প্রশাসক পরিবর্তন করা হয়। বর্তমানে প্রশাসক হিসেবে দায়িত্বে আছেন আইডিআরএ’র সাবেক সদস্য কুদ্দুস খান।

ডেল্টা লাইফের নতুন পরিচালনা পর্ষদে থাকছেন যারা:

ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের নতুন পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান হাফিজ আহমেদ মজুমদার; ভাইস চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মো. জুনায়েদ শফিক; পরিচালক সুরাইয়া রহমান, তিনি সাসপেন্ডেড পরিচালনা পর্ষদেও ছিলেন; পরিচালক আদিবা রহমান, যিনি কোম্পানিটির সাবেক মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা; পরিচালক জেয়াদ রহমান, তিনি সাসপেন্ডেড পরিচালনা পর্ষদেও ছিলেন; পরিচালক সাকিব আজিজ চৌধুরী এবং পরিচালক চাকলাদার রেজানুল আলম।

ডেল্টা লাইফ পরিচালনায় নেয়া ১০ সিদ্ধান্ত:   

কোম্পানিটি পরিচালনায় নেয়া সিদ্ধান্তগুলো হলো- গত ২৪ জুলাই বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ অনুষ্ঠিত সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক কোম্পানির নতুন পরিচালনা পর্ষদ বিদ্যমান সকল আইন পরিপালনপূর্বক সকল কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে; কোম্পানির আর্থিক বিবরণী সম্পর্কিত তথ্যাদি উদঘাটনে নতুন করে অডিট ফার্মের মাধ্যমে কার্যক্রম সম্পাদন করা যাবে;

ইতোপূর্বে নিরীক্ষণকৃত নিয়মাবলী শুনানি সাপেক্ষে নিষ্পত্তি করা হবে; এক বছরে ব্যবসায়িক কৌশলপত্র প্রদান করা হবে এবং তার অগ্রগতি প্রতি ১ মাস অন্তর অন্তর কর্তৃপক্ষের নিকট দাখিল করা হবে; অতিদ্রুত বীমা আইন ও অন্যান্য আরোপিত বিধি-নিষেধ পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে অনুসরণ করে একজন দক্ষ ও গ্রহণযোগ্য মুখ নিবাহী কর্মকর্তা (সিইও) নিয়োগ করা হবে;

পূর্বে যদি কোন অনিয়ম চিহ্নিত হয়ে থাকে তার কোন পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে সে মতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে; কর্তৃপক্ষ কর্তৃক পূর্বের জরিমানা আইন অনুযায়ী বিবেচিত হবে; পরিচালনা পর্ষদে আগামী ৩০ জুন ২০২৩ পর্যন্ত পর্যবেক্ষক হিসেবে মন্ত্রণালয়ের একজন উপযুক্ত প্রতিনিধি (যুগ্নসচিবের নিম্নে নয়) অন্তর্ভুক্ত থাকবেন;

চলমান মামলাসমূহ আগামী ৩১ আগস্ট ২০২২ তারিখের মধ্যে প্রত্যাহার করার বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।  সেই সাথে কর্তৃপক্ষের মামলাসমূহ নিষ্পত্তির বিষয়ে সহায়তা করা হবে এবং এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রতি মাসে কর্তৃপক্ষের নিকট দাখিল করা হবে; পারস্পারিক সমঝোতায় গঠিত নতুন পরিচালনা পর্ষদ আগামী বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত নিরবিচ্ছিন্নভাবে দায়িত্ব পালন করবে।