প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে বীমা বিক্রি করা যাবে না: এস এম নুরুজ্জামান

নিজস্ব প্রতিবেদক: মিথ্যা কথা বলে বা প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে কোন বীমা পলিসি বিক্রি করা যাবে না বলে কর্মীদের সতর্ক করেছেন জেনিথ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম নুরুজ্জামান। তিনি বলেন, দেশে যত বীমা কোম্পানি আছে তার মধ্যে আমাদের পরিচালকমণ্ডলী সবচেয়ে বেশি স্বচ্ছভাবে কাজ করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।

শনিবার (১৯ নভেম্বর) কক্সবাজারে হোটেল সি প্যালেসে অনুষ্ঠিত কোম্পানির বার্ষিক সম্মেলনে এস এম নুরুজ্জামান এ কথা বলেন। কোম্পানিটির চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা ফরিদুন্নাহার লাইলীর সভাপতিত্বে সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)’র সদস্য (লাইফ) কামরুল হাসান।

জেনিথ ইসলামী লাইফের মুখ্য নির্বাহী বলেন, আমাদের কোম্পানি অনুমোদন পাওয়ার পর থেকেই শরীয়াহ অনুযায়ী গ্রাহক আমানত সংগ্রহ, দাবি পরিশোধ ও বিনিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। এ বিষয়ে আদেশ-নিষেধের জন্য আমাদের রয়েছে দেশের বিশিষ্ট আলেম-ওলামাগণের সমন্বয়ে শরীয়াহ বোর্ড।

তিনি বলেন, আমাদের কোম্পানির ৯৫ শতাংশ কার্যক্রম ইআরপি সল্যুশন এর মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। আমাদের ৯৯ শতাংশ কার্যক্রম পেপারলেস করার চিন্তা আছে। বীমা আইনে ৯০ দিন থাকলেও আমরা ৭ কর্মদিবসের মধ্যে দাবি পরিশোধ করেছি।

এস এম নুরুজ্জামান বলেন, বর্তমানে জেনিথ ইসলামী লাইফের কোন দাবি পেন্ডিং নাই। এরইমধ্যে আমাদের ২৭ কোটি ৬৩ লাখ টাকা এফডিআর করা হয়েছে। আমরা শুরু থেকে প্রায় ১৫ কোটি টাকার বীমা দাবি পরিশোধ করেছি। এর মধ্যে ১১৬টি মৃত্যুদাবি, ২ হাজার ৯৭৪টি এসবি, ৩৭টি গ্রুপ বীমা দাবি, ৯৭টি স্বাস্থ্য বীমা দাবি, ১৫টি মেয়াদোত্তীর্ণ দাবি, ২৩টি পলিসি বিনিয়োগ এবং ১২৪টি সমর্পণ মূল্য পরিশোধ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বিনির্মাণে বাংলা ভাষাকে গুরুত্ব দিয়ে আমরাই প্রথম বীমা কোম্পানি যারা বাংলায় ওয়েবসাইট চালু করতে সক্ষম হয়েছি এবং বীমা গ্রাহকের সুবিধার জন্য বাংলায় অ্যাপস চালু করেছি। আমাদের প্রত্যেকটি অফিসে অনলাইনে পিআর কাটা হয় এবং বীমা গ্রাহক সাথে সাথে এসএমএস পান।

তিনি আরো বলেন, আমাদের সক্ষমতা আছে বলেই বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় তাদের ২৫ হাজার ছাত্র-ছাত্রীর গ্রুপ বীমার চুক্তি করেছে। ইতোমধ্যে আমাদের কোম্পানির সাড়ে ৪ কোটি টাকার প্লেসমেন্ট শেয়ার বিক্রি হয়ে গেছে, যার অন্যতম ক্রেতাদের মধ্যে মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্স ও কর্ণফুলী ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড।

এস এম নুরুজ্জামান বলেন, ডেফার্ড ও নবায়ন প্রিমিয়ামের টাকা নগদ ও মার্কেন্টাইল ব্যাংকের মাধ্যমে জমা দিলে আমাদের অফিস থেকে আর রশিদ নিতে হবে না। তা সরাসরি গ্রাহকের পলিসি হিসাবে জমা হবে। শুধু তাই নয় বিকাশের মাধ্যমেও গ্রাহক সরাসরি ডেফার্ড ও নবায়ন প্রিমিয়াম টাকা জমা দিতে পারবেন, বর্তমানে বিষয়টি নিয়ে কাজ চলছে। এমনকি ঢাকা ব্যাংকের সাথে আমাদের ইএফটিএন কার্যক্রম বাস্তবায়নের কাজ চলছে। যা বাস্তবায়ন হলে গ্রাহকের যেকোন ব্যাংক একাউন্ট থেকে ঢাকা ব্যাংকের ইএফটিএন’র মাধ্যমে অটো-প্রিমিয়াম জমা হয়ে যাবে।

জেনিথ ইসলামী লাইফের মুখ্য নির্বাহী বলেন, আমাদের গ্রাহকরা কোম্পানির ১৫টি ব্যাংক একাউন্টে তাদের প্রিমিয়াম জমা দিতে পারবেন। বিকাশ, নগদ, রকেট ও কোম্পানির নামে একাউন্ট-পেয়ি চেকের মাধ্যমে টাকা জমা দিতে পারেন। আমাদের গ্রাহকের দাবির (এসবি) টাকা বিইএফটিএন’র মাধ্যমে তাদের ব্যাংক হিসাবে সরাসরি জমা হচ্ছে। ইতোমধ্যে আমরা আমাদের এফএ থেকে সকল কর্মী ও কর্মকর্তাকে গ্রুপ ও হেলথ বীমার সুবিধা দিচ্ছি সামান্য প্রিমিয়ামের বিপরীতে।

উন্নয়ন কর্মীদের জন্য ওমরাহ, নেপাল ভ্রমণ, কক্সবাজার ও চেয়ারম্যান অ্যাওয়ার্ড সংক্রান্ত কোম্পানির সার্কুলারের কথা উল্লেখ করে এস এম নুরুজ্জামান বলেন, যারা বীমা পলিসি চালাতে পারবে না বা নবায়ন আসবে না, তাদেরকে বীমা পলিসি করাবেন না। আমরা চেষ্টা করছি খুব তাড়াতাড়ি আইপিও’তে যাওয়ার জন্য এবং পলিসি বোনাস ঘোষণা করতে। এ জন্য আমাদেরকে নবায়ন ব্যবসার প্রতি জোর দিতে হবে।