হোমল্যান্ডের ৫ পরিচালকের পদ সাময়িকভাবে স্থগিতের দাবি
নিজস্ব প্রতিবেদক: হোমল্যান্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্সের লন্ডন প্রবাসী ৫ জন পরিচালকের পদ সাময়িকভাবে স্থগিত রাখার দাবি জানিয়েছেন কোম্পানিটির আরেক লন্ডন প্রবাসী পরিচালক কাজী ফারুক উদ্দিন আহমেদ। সম্প্রতি গণমাধ্যমে ওই ৫ পরিচালকের বিরুদ্ধে প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে তিনি এই দাবি জানান।
বীমা কোম্পানিটির চেয়ারম্যান হান্নান মিয়ার কাছে গত ১৬ সেপ্টেম্বর পাঠানো এক ই-মেইল বার্তায় তিনি বলেন, ওই ৫ পরিচালকের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের বিষয়ে বিস্তারিত তদন্ত করা প্রয়োজন। একইসাথে তদন্ত সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত বোর্ড থেকে তাদের সাময়িকভাবে স্থগিত রাখতে হবে।
হোমল্যান্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্সের অভিযুক্ত ওই ৫ পরিচালকের মধ্যে রয়েছেন- লন্ডন প্রবাসী জামাল মিয়া, কামাল মিয়া, আব্দুল আহাদ, আব্দুল হাই ও জামাল উদ্দিন।
গত ১৫ সেপ্টেম্বর একাত্তর টেলিভিশনে বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধানী সংবাদ প্রকাশ করা হয়। এতে বলা হয়, অভিযুক্ত ওই ৫ পরিচালকের নামে হোমল্যান্ড লাইফে একটিও শেয়ার ছিল না। তারা যেসব শেয়ার দেখিয়ে পরিচালক হয়েছিলেন আসলে সবগুলোর শেয়ারের মালিক কোম্পানির আরেক উদ্যোক্তা পরিচালক কাজী এনাম উদ্দিন আহমেদ।
যিনি নিজের ৮০ হাজার শেয়ার ২০০৫ সালে তৎকালীন ওরিয়েন্টাল ব্যাংক ও বর্তমানের আইসিবি ইসলামি ব্যাংক লিমিটেডে বন্ধক রেখে ঋণ নিয়েছিলেন। বন্ধক থাকায় এসব শেয়ার অন্য কারও কাছে বিক্রির সুযোগ নেই।
এ কারণে অরিজিনাল শেয়ার হারানোর নাটক সাজিয়ে দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে বীমা কোম্পানিটির পরিচালক পদে রয়েছেন। এই সময়ে কোম্পানিটি থেকে বাগিয়ে নিয়েছেন লভ্যাংশ, বোর্ড মিটিং ফি, ঢাকা-লন্ডন আসা যাওয়ার বিমান ভাড়াসহ কোটি কোটি টাকা।
হোমল্যান্ড লাইফের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা ড. বিশ্বজিৎ কুমার মন্ডলের বরাত দিয়ে সংবাদে আরো বলা হয়, ২৬ বছর বয়সী হোমল্যান্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্সে বর্তমানে ১৯ জন পরিচালক। এর মধ্যে ৯ জন থাকেন লন্ডনে। ১৭ বছর ধরে পরিচালনা পর্ষদে আছেন লন্ডন প্রবাসী বাংলাদেশী জামাল মিয়া, কামাল মিয়া, আব্দুল হাই, আব্দুল আহাদ ও জামাল উদ্দিন।
এর মধ্যে দুই পরিচালক আব্দুল হাই ও আব্দুল আহাদের শেয়ার সার্টিফিকেট রহস্যজনকভাবে একই দিনে হারিয়ে যায়। দিনটি ছিলো ২০১৪ সালের ৯ সেপ্টেম্বর। কিন্তু ঘটনার দেড় বছর পর অর্থাৎ ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে থানায় জিডি করেন শেয়ার হারানো ওই দুই ভাই।
হোমল্যান্ড লাইফের লন্ডন প্রবাসী অপর দুই পরিচালক জামাল মিয়া ও কামাল মিয়া। তাদের কোম্পানির মালিকানার শেয়ারগুলোও একই দিনে হারিয়ে যায়। ২০১৪ সালের ১০ মে তাদের শেয়ার হারালেও সিলেটের বালাগঞ্জ থানায় তারা জিডি করেন ঘটনার ১৫ দিন পর।
প্রবাসী আরেক পরিচালক জামাল উদ্দিনেরও ১০ হাজারটি শেয়ার সার্টিফিকেট হারিয়ে যায় ২০১৪ সালের মে মাসে। এর দুই বছর পর ২০১৬ সালের ১২ মে একই দিনে একই পত্রিকায় হারানো বিজ্ঞপ্তি দেন ওই পাঁচ প্রবাসী পরিচালক।
এ বিষয়ে কাজী ফারুক উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমাদের ওই ৫ জন পরিচালকের শেয়ার আইসিবি ব্যাংকে লিয়েন করা আছে সেটা আমি জানতাম না। গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে বিষয়টি জানতে পেরেছি। তাদের মূল শেয়ার নিয়ে আমাদের বোর্ডে আসার জন্য কোম্পানির চেয়ারম্যানের কাছে আমি লিখিত দাবি জানিয়েছি।
তবে এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে হোমল্যান্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্সের চেয়ারম্যান হান্নান মিয়ার সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি কোন সাড়া দেননি।