আইডিআরএ-আইআরএফ সেমিনার

অনিবাসী একচ্যুয়ারিকে কাজের সুযোগ দেয়া প্রয়োজন: এস এম জিয়াউল হক

নিজস্ব প্রতিবেদক: বীমা খাতে একচ্যুয়ারি সংকট কাটাতে অনিবাসী তথা বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশি একচ্যুয়ারিদের কাজের সুযোগ দেয়া প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন চার্টার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম জিয়াউল হক। তিনি বলেন, বাংলাদেশের বীমা খাতে বর্তমানে যে একচ্যুয়ারি সংকট তৈরি হয়েছে তা রাতারাতি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে দেশে একচ্যুয়ারি বৃদ্ধির কার্যকর উদ্যোগ নেয়ার পাশাপাশি অনিবাসী একচ্যুয়ারিদের বীমার উন্নয়নে কাজের সুযোগ দেয়া প্রয়োজন।

‘বীমা খাতের সংস্কার ও আমাদের করণীয়’ শীর্ষক এক সেমিনারে এসব কথা বলেন এস এম জিয়াউল হক। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)’র চেয়ারম্যান ড. এম আসলাম আলম। বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ ও  ইন্স্যুরেন্স রিপোর্টার্স ফোরামের যৌথ উদ্যোগে গত বুধবার (১২ মার্চ) আইডিআরএ’র বোর্ড রুমে এই সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

এস এম জিয়াউল হক বলেন, লাইফ বীমা খাতে পলিসি ল্যাপসের হার বেড়ে গেছে। এর ফলে গ্রাহকদের পাশাপাশি বীমা কোম্পানিগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সংস্কারের মাধ্যমে আইনগতভাবে এটাকে কিভাবে কমানো যায় সে বিষয়ে আমাদের উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন। একইসাথে বীমা কোম্পানিগুলোর জন্য গ্রাহকের চাহিদা মতো সময়োপযোগী বীমা পণ্য তৈরিতে গবেষণার ওপর জোর দেয়া প্রয়োজন। এক্ষেত্রে সম্প্রতি আইডিআরএ যে গবেষণার উদ্যোগ নিয়েছে সেটার পাশাপাশি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে এটাকে অন্তর্ভুক্ত করে সমন্নিতভাবে গবেষণার প্রস্তাব করেন তিনি।

চার্টার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্সের মুখ্য নির্বাহী আরো বলেন, বাংলাদেশে বীমার পেনিট্রেশনে শুধু একক বীমাকে গণ্য করা হয়; গ্রুপ বীমাকে গণ্য করা হয় না। এ কারণে দেশের বীমা পেনিট্রেশন আরো কম দেখায়। এক্ষেত্রে বীমা পেনিট্রেশনে গ্রুপ বীমাকে অন্তর্ভুক্ত করা হলে সঠিক চিত্র উঠে আসবে। বাইরের দেশগুলোতে বীমার পেনিট্রেশনে শুধু একক বীমা নয়, গ্রুপ বীমাও গণনা করা হয় বলে তিনি জানান।

এস এম জিয়াউল হক বলেন, আন্তর্জাতিকভাবে দেখা যায়- অর্থনীতিতে বীমা খাতের ৭০ শতাংশ অবদান থাকে নন-লাইফ বীমা খাতের। আর বাকী ৩০ শতাংশ আসে লাইফ বীমা খাত থেকে। কিন্তু বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বীমা খাতের ৬৫ শতাংশ অবদান আসছে লাইফ বীমা থেকে এবং ৩৫ শতাংশ আসছে নন-লাইফ বীমা থেকে। এক্ষেত্রে দেশের লাইফ ও নন-লাইফ বীমা খাতের যথেষ্ট সুযোগ ও সম্ভাবনা রয়েছে। এটাকে আমাদের কাজে লাগানো প্রয়োজন।

লাইফ বীমা খাতের ৫/৭টি কোম্পানি শতভাগ বীমা দাবি পরিশোধ করার চেষ্টা করছে উল্লেখ করে এস এম জিয়াউল হক বলেন, আমরা সব সময়ই খারাপ তথ্যগুলো উদাহরণ হিসেবে দেখি। যেসব কোম্পানি বীমা দাবি পরিশোধ করতে পারছে না সেগুলো নিয়েই পদক্ষেপ নিয়ে থাকি। কিন্তু যারা ভালো করছে তাদেরকে নিয়ে কোথাও আলোচনা করতে দেখি না বা তাদেরকে কোন বিশেষ সুযোগ-সুবিধা দেই না।

তিনি বলেন, যেই বীমা কোম্পানিটি ভালো করছে তাকে যদি ট্যাক্স সুবিধা বা বিশেষ কোন সুবিধা দেয়া যায় অথবা মডেল কোম্পানি হিসেবে ঘোষণা করে তাকে অ্যাওয়ার্ড দিতে পারে কর্তৃপক্ষ তাহলে অন্যরাও ভালো করার চেষ্টা করবে। মডেল কোম্পানি ঘোষণা করলে বা ট্যাক্স সুবিধা দিলে আমিও উৎসাহিত হতাম দ্রুত বীমা দাবি পরিশোধে এবং পরিপূর্ণভাবে কর্তৃপক্ষের আইন-অনুশাসন মেনে কোম্পানি পরিচালনার।