নন-লাইফ বীমা কোম্পানির ব্যবস্থাপনা ব্যয় নিয়ন্ত্রণে কিছু প্রস্তাবনা
নন-লাইফ বীমা কোম্পানিগুলোর ব্যবস্থাপনা ব্যয় কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। উচ্চ হারে কমিশন প্রদান- এখন নন-লাইফ বীমা কোম্পানিগুলো সবচেয়ে বড় সমস্যা। এই সমস্যা সবারই জানা। বীমা সংশ্লিষ্ট আলোচনা সভা, সেমিনারে উচ্চহারে ব্যয় নিয়ে অহরহই আলোচনা হচ্ছে। কিন্তু এতোকিছু করেও ব্যবস্থাপনাখাতে ব্যয় দিনদিন বাড়ছে। ব্যবস্থাপনা ব্যয় নিয়ন্ত্রণে বেসরকারি বীমা কোম্পানি এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা কে এম সাইদুর রহমান কিছু প্রস্তাবনা তুলে ধরেছেন। ইন্স্যুরেন্স নিউজবিডির পাঠকদের জন্য তা হুবহু তুলে ধরা হলো-
১) ক. প্রতিটি বীমা কোম্পানির প্রতিটি ব্যাংকে শুধুমাত্র একটি করে এসটিডি হিসাব থাকবে (For Premimum Collection)। প্রতি মাসের পরবর্তী ১৫ তারিখের মধ্যে ওই এসটিডি হিসাবগুলোর ব্যাংক স্টেটমেন্টের কপি বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের নিকট পাঠাতে হবে। এতে বীমা কোম্পানির একটি ব্যাংকের বিভিন্ন শাখায় অনেকগুলো এসটিডি হিসাবের আর প্রয়োজন হবে না। অর্থাৎ কোনো একটি বীমা কোম্পানির একটি ব্যাংকের একাধিক শাখায় একাধিক এসটিডি হিসাব আর থাকবে না।
কোনো বীমা কোম্পানির ইস্যুকৃত কাভার নোট/সার্টিফিকেট/পলিসির প্রিমিয়াম সংশ্লিষ্ট ব্যাংক/বীমা গ্রাহক তাদের ব্যাংক হিসাব ডেবিট করে বীমা কোম্পানির ওই এসটিডি হিসাবে ক্রেডিট করে দিবে।
খ. কোনো একটি বীমা কোম্পানির যাবতীয় খরচ পরিশোধের জন্য শুধুমাত্র একটি Central Disbursement Account (CD A/c) থাকবে। অর্থাৎ একটি কোম্পানির যে কোনো একটি ব্যাংক শুধুমাত্র CD A/c থাকবে এবং ওই CD A/c হতে কোম্পানির যাবতীয় ব্যয় চেকের মাধ্যমে/Debit Advice এর মাধ্যমে পরিশোধ হবে। শুধুমাত্র প্রধান কার্যালয় ও শাখাগুলোর পেটি ক্যাশ বাবদ একটি নির্ধারিত অঙ্কের টাকা (যেমন ৫০,০০০ টাকা) CD A/c হতে নগদে উত্তোলিত হবে। প্রতি মাসে ওই হিসাবের ব্যাংক বিবরণীসহ খরচের একটি মাসিক তালিকা পরবর্তী মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে আইডিআরএ চেয়ারম্যানের বরাবর জমা দিতে হবে।
গ. কোনো একটি বীমা কোম্পানির সমস্ত পেমেন্ট ব্যাংক হিসাবে ডেবিট করে অ্যাকাউন্ট ট্রান্সফারের মাধ্যমে সম্পাদন করা যেতে পারে (Through Account Debit & Credit)। যেমন বেতন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ব্যাংক হিসাবে ক্রেডিট হবে, দাবি সংশ্লিষ্ট বীমা গ্রাহকদের ব্যাংক হিসাবে ক্রেডিট হবে ইত্যাদি।
২) বীমা কোম্পানিগুলোর শাখা প্রধান ও উন্নয়ন কর্মকর্তাদের বেতন ও অন্যান্য সুবিধাদির একটি অভিন্ন পে-স্কেল তৈরি করা যেতে পারে। কোম্পানিগুলো ওই পে-স্কেল এর কম সুবিধা দিতে পারবে কিন্তু বেশি সুবিধা দিতে পারবে না।
৩) ১৫ শতাংশ এজেন্সি কমিশন পুরোপুরি বন্ধ করতে হবে। কিন্তু বীমা আইনে এজেন্সি কমিশন দেয়ার বিধান আছে। তাই অনেকে মত দেবেন যে তা বন্ধ করা যাবে না। আমি আইনগতভাবে বন্ধ করার পরামর্শ দেব না। আমরা সবাই একমত হয়ে এই এজেন্সি কমিশন না দেয়ার ব্যবস্থা নিতে পারি। এখানে উল্লেখ্য যে বীমা আইনে কোনো খরচ করার অনুমতি থাকলেই তা অবশ্যই খরচ করতে হবে এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। এজেন্সি ব্যতীত সরাসরিও ব্যবসা সংগৃহীত হতে পারে।
৪) বীমা কোম্পানিতে কর্মরত ১৬ হাজার টাকার বেশি বেতনভূক্ত সব কর্মকর্তা ও এজেন্সিগুলোর TIN আইডিআরএ’তে জমা দিতে হবে।
৫) পরিশেষে IDRA, BIA, FBCCI, DCCI ও CCCI এর ৩/৪ জন করে প্রতিনিধি নিয়ে কমিশন বন্ধ করা ও দ্রুত দাবি নিষ্পত্তির গ্যারান্টি দেয়া নিয়ে যৌথ সভা করা ও দুটি বিষয়ে একমত পোষণ করে যৌথ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যেতে পারে।