জ্ঞান বিতরণ ও বন্টন প্রসঙ্গে
এ কে এম এহসানুল হক, এফসিআইআই: কথায় বলে ‘জ্ঞানই শক্তি (Knowledge is power) । জ্ঞান অন্যের মাঝে বিতরণের জন্য। নিজের মধ্যে কুক্ষিগত বা বন্দী করে রাখার জন্য নয়। যে জ্ঞান মানুষের কল্যানে আসে না সে জ্ঞান অর্থহীন, মূল্যহীন।
দুঃখজনক হলেও এ কথা সত্য যে, আমাদের মাঝে অনেক লোক আছে যারা এ ব্যপারে অত্যন্ত কৃপন এবং হীনমনা।
আমাদের মাঝে জ্ঞানী ও গুণী লোকের অভাব নাই। কিন্তু যে কোন কারণেই হোক এই সমস্ত ব্যক্তি তাদের জ্ঞান অন্যের মাঝে বিতরণ বা বন্টন করতে নিরুৎসাহী এবং অনিচ্ছুক।
আমাদের মাঝে এক ধরনের ভুল ধারনা বিদ্যমান, আর তা হচ্ছে জ্ঞান বিতরণ করলে জ্ঞানের ভাণ্ডার হ্রাস পায়। কথাটা সত্য নয়।
পক্ষান্তরে জ্ঞানের চর্চা বৃদ্ধির মাধ্যমে এর পরিধি বিস্তৃতি লাভ করে। এটা যেন অনেকটা সারা বছর সুগন্ধি বিতরণের মতো।
‘লেখনিকে’ জ্ঞান বিতরণের একটি অন্যতম প্রধান মাধ্যম বা হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। এই কনসেপ্ট বা ধারণাটি যেমন অন্য সকল ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, তেমনি বীমাখাতের বেলাতেও সমানভাবে প্রযোজ্য।
ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যায় অতীতে জ্ঞানী ও চিন্তাবিদগণ যেমন সমাজবিজ্ঞানী, দার্শনিক প্রভৃতি তাদের লেখার মাধ্যমে জ্ঞান প্রচার করে গেছেন, যার দ্বারা সমাজের উপকার এবং মানবজাতির কল্যান সাধিত হয়েছে।
এ কথা ভুললে চলবে না যে, সৃষ্টিকর্তা আমাদের কাউকে তুলনামূলকভাবে অধিক জ্ঞান দান করেছেন। সবাই এ ব্যাপারে সমান সৌভাগ্যবান নয়। নিজের মধ্যে জ্ঞান ধরে রাখা কোন গর্ব বা গৌরবের কথা নয়। এই ধরনের প্রবণতা এবং মনোবৃত্তি স্বার্থপরতা এবং হীনমন্যতার পরিচয় বহন করে।
আমাদের চারপাশে অনেক লোক আছে যাদের জ্ঞানের অভাব রয়েছে। আমাদের দায়িত্ব তাদের মাঝে জ্ঞান বিতরন করা। আর আমরা এ ব্যাপারে তাদের নিরাশ বা হতাশ করতে পারি না।
এ কথা অস্বীকার করার উপায় নাই যে আমরা যারা এ ব্যপারে সৌভাগ্যবান, আমাদের পবিত্র দায়িত্ব হচ্ছে আমাদের চারপাশের কুসংস্কারাছন্ন, অন্ধকারাছন্ন মানুষগুলোকে জ্ঞান প্রদান ও প্রচারের মাধ্যমে আলোকিত করা।
তবেই আমাদের জীবনের সার্থকতা আসবে এবং জীবন অর্থময় হয়ে উঠবে।