বীমাখাতে দক্ষ জনবলের প্রয়োজনীয়তা প্রসঙ্গে

এ কে এম এহসানুল হক, এফসিআইআই: বীমা এক প্রকার বিশেষায়িত পেশার অন্তর্ভূক্ত। এটি পরিচালনা করার জন্য দক্ষ জনবল প্রয়োজন। এখন আসা যাক দক্ষ জনবল বলতে আমরা কি বুঝি? দক্ষ জনবল বলতে আমরা বীমা ডিগ্রিধারী অভিজ্ঞ জনবল বুঝি।

বীমা ডিগ্রি বলতে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক এবং আঞ্চলিক ডিগ্রি যেমন এসিআইআই (সিআইআই), লন্ডন, এআইআইআই (আইআইআই), ইন্ডিয়া, এএমআইআই (এমআইআই), মালয়েশিয়া, এবিআইএ (বিআইএ), বাংলাদেশ ইত্যাদিকে বুঝায়।

বহির্বিশ্বে বীমাখাতে উচ্চ পদস্থ ও দায়িত্বশীল পদ যেমন ম্যানেজার, জেনারেল ম্যানেজার, মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়োগের পদ্ধতিতে এ ব্যপারে যথেষ্ট কড়াকড়ি রয়েছে।

এ কথা সামগ্রিকভাবে স্বীকৃত যে বীমাখাতে দক্ষ এবং যোগ্য জনবলের কোন বিকল্প নাই। এ ব্যাপারে দ্বিমত পোষণের কোন অবকাশ নাই।

এখানে প্রাসঙ্গিকভাবে উল্লেখ করা যেতে পারে যে, বীমাখাতে মূখ্য নির্বাহী নিয়োগের ব্যাপারে বীমা কর্তৃপক্ষের বর্তমান নীতির পরিবর্তন প্রয়োজন।

বীমা কর্মচারীদের বীমা ডিগ্রি অর্জনের ব্যাপারে উৎসাহিত ও উদ্বুদ্ধ করার জন্য যে সমস্ত কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন তা নিম্নে বর্ণিত করা হলো:

১। বীমা ডিগ্রি অর্জনের ব্যাপারে বীমা কোম্পানির আর্থিক সাহায্য ও সহায়তা প্রদান।

২। চাকরিতে পদোন্নতি।

৩। বেতন-ভাতা বৃদ্ধি ইত্যাদি।

এক পরিসংখ্যান অনুযায়ী বাংলাদেশের বীমাখাতে প্রায় দুই ডজনের অধিক এসিআইআই, ছয় শতাধিকের ওপর এবিআইআই ডিগ্রিধারী কর্মচারী রয়েছে।

এই সমস্ত বীমা ডিগ্রিধারীদের কি সার্বিক মূল্যায়ন হচ্ছে? সরকারী নীতিমালা থাকা সত্বেও দক্ষ জনবল সৃষ্টির ব্যাপারে বীমা কোম্পানি কি তাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করছে? উপরে বর্ণিত বিষয়গুলো গভীরভাবে খতিয়ে দেখার প্রয়োজন রয়েছে। দক্ষ জনবল গঠনের ব্যাপারে সভা-সমিতিতে বড় বড় বক্তৃতা বা ভাষণ দেয়াই যথেষ্ট নয়। প্রয়োজনে বীমা নীতির যথাযথ বাস্তবায়ন।

বীমা উন্নয়ন এবং নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)’র একটি অন্যতম প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে ব্যাপারটি বিশেষ গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা এবং তা দ্রুত বাস্তবায়নে সকল প্রকার পদক্ষেপ গ্রহণ এবং প্রয়োজনে বীমা কোম্পানির উপর চাপ প্রয়োগ করা।

বীমা কর্তৃপক্ষকে এ ব্যাপারে বলিষ্ঠ ভূমিকা গ্রহণ করতে হবে। অন্যথায় বীমাখাতের বর্তমান নৈরাজ্যজনক অবস্থার উত্তরণ এক প্রকার অসম্ভব ব্যাপার।