দক্ষিণ কোরিয়ায় দরিদ্র শিশু-কিশোরদের জন্য বিনামূল্যে স্বাস্থ্য বীমা উদ্যোগ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: দক্ষিণ কোরিয়ার সুবিধাবঞ্চিত শিশু ও কিশোরদের চিকিৎসা সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এক প্রশংসনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে কোরিয়ান ফেডারেশন অব কমিউনিটি ক্রেডিট কোঅপারেটিভস (কেএফসিসিসি) ও এর সহযোগী প্রতিষ্ঠান সেমাউল গিউমগো ফাউন্ডেশন। সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে তারা দেশজুড়ে ৪৭৭ জন দরিদ্র শিশু ও কিশোরের সম্পূর্ণ বীমা প্রিমিয়াম বহন করবে, যা স্বাস্থ্যসেবায় প্রবেশাধিকার বাড়ানোর পাশাপাশি পরিবারগুলোর আর্থিক বোঝা কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

দক্ষিণ কোরিয়ার জাতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য কোরিয়া নিউজ প্লাস জানিয়েছে, সিউলভিত্তিক কেএফসিসিসি হলো দেশের প্রায় ১,৩০০টি আর্থিক সমবায় প্রতিষ্ঠানের মূল সংগঠন, যার মাধ্যমে বর্তমানে দুই কোটিরও বেশি মানুষ বিভিন্ন আর্থিক সুবিধা পাচ্ছেন। এবার প্রতিষ্ঠানটি মানবিক দৃষ্টিভঙ্গিতে স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নেও অবদান রাখছে।

এই উদ্যোগটি কেএফসিসিসি’র ‘হোপ-শেয়ারিং ইন্স্যুরেন্স’ নামের একটি পাবলিক ইন্স্যুরেন্স কর্মসূচির অংশ, যার মূল লক্ষ্য হচ্ছে দরিদ্র শিশু ও কিশোরদের চিকিৎসা ব্যয় কমিয়ে তাদের সুস্থ বিকাশ নিশ্চিত করা। এই পলিসির আওতায় হাসপাতালে ভর্তি, বহির্বিভাগীয় চিকিৎসা এবং অসুস্থতা বা দুর্ঘটনাজনিত অস্ত্রোপচারের পূর্ণ ব্যয়ভার বহন করা হবে।

এছাড়া পলিসিতে দুর্ঘটনাজনিত পোড়া, হাড় ভাঙা, প্লাস্টার, সড়ক দুর্ঘটনা, খাদ্যে বিষক্রিয়া এবং অন্যান্য নির্দিষ্ট রোগে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা রয়েছে। বীমাটি পাঁচ বছরের জন্য কার্যকর থাকবে এবং নির্ধারিত অঙ্ক অনুযায়ী আর্থিক সহায়তা প্রদান করবে।

২০১৭ সালে প্রথম চালু হওয়া এই উদ্যোগের আওতায় এখন পর্যন্ত ৩,৮২৯ জন শিশু ও কিশোর উপকৃত হয়েছে, যা দক্ষিণ কোরিয়ার স্বাস্থ্যখাতে সামাজিক বীমা ব্যবস্থার সফলতার প্রতীক হয়ে উঠেছে।

সেমাউল গিউমগো ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান কিম ইন বলেন, “এই বীমা কর্মসূচি আমাদের সমাজের অবহেলিত শিশু ও কিশোরদের জন্য এক স্থায়ী নিরাপত্তা বলয় হয়ে উঠবে। আমরা চাই, যারা ‘মেডিক্যাল ব্লাইন্ড স্পটে’ আছে- তাদের জন্য এটি হোক এক নির্ভরযোগ্য রক্ষাকবচ।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা ভবিষ্যতেও আমাদের সামাজিক দায়িত্ব পালন অব্যাহত রাখব এবং এই সহায়তার পরিধি আরও সম্প্রসারিত করব, যাতে কেউ স্বাস্থ্যসেবার বাইরে না থাকে।”

বিশ্লেষকদের মতে, এই উদ্যোগ কেবল মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকেই নয়, বরং একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক স্বাস্থ্যনীতি গঠনের পথে গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। এটি সমাজের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষিত করার পাশাপাশি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মানসম্মত জীবনযাত্রা নিশ্চিতের এক কার্যকর উদাহরণ হয়ে উঠেছে দক্ষিণ কোরিয়ায়। (সংবাদ সূত্র: এশিয়া ইন্স্যুরেন্স রিভিউ)