সশস্ত্র বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থার নন-লাইফ বীমা পলিসি অবলিখনের এখতিয়ার সেনা ইন্স্যুরেন্সকে প্রদানের প্রস্তাব নিয়ে যা বললেন মুখ্য নির্বাহী শফিক শামীম
নিজস্ব প্রতিবেদক: সশস্ত্র বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থার নন-লাইফ বীমা পলিসি অবলিখনের এখতিয়ার সাধারণ বীমা করপোরেশন (এসবিসি)’র পরিবর্তে সেনা ইন্স্যুরেন্স পিএলসি’কে প্রদান করা যায় কিনা এ বিষয়ে খাত সংশ্লিষ্টদের মতামত আহবান করেছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) ।
গত ২৫ মে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি সাধারণ বীমা করপোরেশন, ইন্স্যুরেন্স একাডেমি, ইন্স্যুরেন্স এসোসিয়েশন, ইন্স্যুরেন্স ফোরামসহ বিভিন্ন নন-লাইফ বীমা কোম্পানিকে পাঠিয়েছে বীমা খাতের এই নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
এরইমধ্যে বিষয়টি বেশ আলোচনার সৃষ্টি করেছে দেশের নন-লাইফ বীমা খাতে। মৌখিকভাবে নানান ধরণের মতামত আসছে। এক্ষেত্রের বেশিরভাগ মতামত আসছে নেতিবাচক। সরকারি সম্পত্তির বীমার অবলিখন সেনা ইন্স্যুরেন্সকে দেয়া হলে সেটি কতটা যৌক্তিক হবে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তারা।
প্রতিরক্ষা ক্রয় সংক্রান্ত বীমার অবলিখন নিয়ে সশস্ত্র বাহিনীর প্রস্তাবনার বিষয়ে ইন্স্যুরেন্স নিউজ বিডি’র সাথে আলাপ করেছেন সেনা ইন্স্যুরেন্সের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) মো. শফিক শামীম। আলাপকালে একান্তই নিজের মতামত তুলে ধরেছেন সাবেক এই সেনা কর্মকর্তা।
শফিক শামীম বলেন, একটা চিঠি সম্প্রতি আমরা পেয়েছি বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ থেকে, ‘সশস্ত্র বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থার নন-লাইফ বীমা পলিসি অবলিখনের এখতিয়ার সাধারণ বীমা করপোরেশনের পরিবর্তে সেনা ইন্স্যুরেন্স পিএলসিকে প্রদানের বিষয়ে মতামত’ প্রসঙ্গে ।
তিনি বলেন, চিঠির ভেতরে দ্বিতীয় প্যারাগ্রাফে, “১০০% অবলিখন সাধারণ বীমা করপোরেশন করে ৫০% নিজের কাছে রেখে বাকী ৫০% সকল বেসরকারি নন-লাইফ বীমা কোম্পানির মধ্যে সমহারে বন্টনের বিষয়ে বলা হয়েছে।”
তিনি আরো বলেন, মতামতের মূল বিষয়টা আমরা চিঠির তৃতীয় পারাগ্রাফে দেখি। যেটা হচ্ছে, বীমা করপোরেশন আইন ২০১৯ এর ১৬(১) ধারায় বর্ণিত সরকারি সম্পত্তি সাধারণ বীমা করপোরেশন কর্তৃক ১০০% অবলিখনের হার পরিবর্তন করে প্রতিরক্ষা ক্রয় সংক্রান্ত বীমার অবলিখনের সুযোগ সাধারণ বীমা করপোরেশনের পাশাপাশি সেনা ইন্স্যুরেন্সকে প্রদান করা যায় কিনা !
সেনা ইন্স্যুরেন্সের মুখ্য নির্বাহী শফিক শামীম বলেন, এখানে দুইটা জিনিস আছে। একটা হলো এখানে কোনভাবেই সাধারণ বীমা করপোরেশনকে বাদ দেওয়ার কথা বলা হয় নাই। বিষয়টি শুধুমাত্র প্রতিরক্ষা ক্রয়- সংক্রান্ত। এই প্রস্তাবনায় প্রতিরক্ষা ক্রয়ের ব্যাপারে সাধারণ বীমার পাশাপাশি সেনা ইন্স্যুরেন্স পিএলসিকে অবলিখনের দায়িত্ব দেয়া যায় কিনা, সে বিষয়ে বলা হয়েছে।
সম্ভবত প্রতিরক্ষা ক্রয়ে রাষ্ট্রীয় কিছু গোপনীয়তার ব্যাপার আছে যা সাধারণ বীমা করপোরেশনের পাশাপাশি সেনা ইন্স্যুরেন্স পিএলসি অবলিখনের দায়িত্ব পালন করলে সাধারণ বীমা করপোরেশনের সাথে সমন্বয় করে ব্যাপারটা আরো ভালোভাবে করা যাবে। এক্ষেত্রে সবার মতামত নেয়ার উদ্দেশ্য হলো এটাকে একদম ট্রান্সপারেন্ট ওয়েতে করা।
বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) মো. শফিক শামীম বলেন, শুরু থেকে আমি যেহেতু বিষয়টা জানি তাই বলছি যে, এখানে যেমন মনে হচ্ছে সকল সরকারি সম্পত্তি বীমা করার এখতিয়ার সেনা ইন্সুরেন্স দেওয়া হচ্ছে- ব্যাপারটা সেরকম না। এখানে পরিষ্কার বলা হয়েছে, শুধুমাত্র প্রতিরক্ষা ক্রয় সংক্রান্ত বীমার ব্যাপারটা সাধারণ বীমা করপোরেশনের পাশাপাশি সেনা ইন্স্যুরেন্স পিএলসিকে দেয়ার জন্য।
অন্যথায় কর্তৃপক্ষ সরাসরি একটা চিঠি লিখতে পারতেন সরকারের কাছে। সেটা না করে সম্পূর্ণভাবে সরকারি এবং বীমা আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে আমাদের কর্তৃপক্ষ যেভাবে চিঠি লিখেছে সকলের মতামত নিয়েই যে সিদ্ধান্ত আসবে সেটাই গৃহীত হবে।