মনগড়া তথ্যে ১৭ নন-লাইফ বীমা কোম্পানিকে ঝুঁকিপূর্ণ বলছে আইডিআরএ!
আবদুর রহমান আবির: নন-লাইফ বীমা খাতের ১৭টি কোম্পানিকে ঝুঁকিপূর্ণ বলছে খাতটির নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইডিআরএ। তবে কোন মানদন্ডের ভিত্তিতে কোম্পানিগুলোকে ঝুঁকিপূর্ণ বলা হচ্ছে তা সুস্পষ্টভাবে প্রকাশ করতে রাজি নয় সংস্থাটি। সংস্থাটির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, বীমা কোম্পানিগুলোর সবকিছু মূল্যায়ন করেই এই ঝুঁকি নিরূপণ করা হয়েছে। ফলে কোন মানদণ্ডের ভিত্তিতে ঝুঁকি নিরূপণ করা হয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে খাত সংশ্লিষ্টদের সাথে আলোচনায় নন-লাইফ বীমা কোম্পানির ঝুঁকি নিরূপণে দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের ভিত্তি পর্যালোচনা করে জানা যায়, নন-লাইফ বীমা কোম্পানির ঝুঁকি নির্ধারণ করার ক্ষেত্রে ক্রেডিট রেটিং ও সলভেন্সি মার্জিনকে বিবেচনায় নেয়া হয়। ক্রেডিট রেটিংয়ে কোন কোম্পানি ঝুঁকিপূর্ণ হলে ঝুঁকি থেকে উত্তরণের সুস্পষ্ট দিক নির্দেশনা থাকে। আইডিআরএ যেসব কোম্পানিকে ঝুঁকিপূর্ণ বলছে ক্রেডিট রেটিং রিপোর্টে এর কোনটিকেই ঝুঁকিপূর্ণ বলা হয়নি।
অপরদিকে বাংলাদেশে নন-লাইফ বীমা কোম্পানির সলভেন্সি মার্জিনের গেজেট প্রকাশ হয়েছে ১৫ অক্টোবর ২০২৪ তারিখে। যা কার্যকর হবে ২০২৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর থেকে। ফলে চলতি বছরের ডিসেম্বরের আগে সলভেন্সি মার্জিনের ভিত্তিতেও কোম্পানিগুলোর ঝুঁকি নিরূপনের সুযোগ নেই। এ ছাড়াও বাংলাদেশে নন-লাইফ বীমা খাতে ঝুঁকি নিরূপনের আর কোন মানদণ্ড নেই।
এই আলাপে আরো জানা যায়, যেসব কোম্পানিকে ঝুঁকিপূর্ণ বলা হচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে দাবি পরিশোধের সক্ষমতা নেই- এমন প্রশ্ন তুলেও নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে কেউ অভিযোগ করেনি। অন্যদিকে দাবি পরিশোধের হারের ওপর ভিত্তি করেও কোন নন-লাইফ বীমা কোম্পানিকে ঝুঁকিপূর্ণ বলার সুযোগ নেই। এর কারণ, নন-লাইফ বীমা কোম্পানিগুলোর দাবি পরিশোধ করা হয় আইনগত প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে। তাই কোন একটি ত্রৈমাসিক বা বার্ষিক প্রতিবেদনে শুধুমাত্র দাবি পরিশোধের নিম্নহারের সূচক ওই কোম্পানির বীমা দাবি পরিশোধের সক্ষমতার মানদণ্ড নিশ্চিত করে না।
নন-লাইফ বীমা কোম্পানির বীমা দাবি পরিশোধ নির্ভর করে সার্ভেয়ারের রিপোর্ট, ফায়ার বিগ্রেড রিপোর্ট ও দাবি সংশ্লিষ্ট গ্রাহকের প্রয়োজনীয় নথিপত্র বা সংশ্লিষ্ট কোন তদন্ত রিপোর্ট, পুনর্বীমা চুক্তির শর্তের ওপর। তাই উত্থাপিত দাবি নিষ্পত্তির হারের ওপর ভিত্তি করে কোনভাবেই কোম্পানিটির দাবি পরিশোধের সক্ষমতা বিবেচনা করা যায় না।
খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশীয় বা আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের বাইরে আইডিআরএ’র নিজস্ব মতামতের ভিত্তিতে কোন নন-লাইফ বীমা কোম্পানিকে ঝুঁকিপূর্ণ বলা উদ্দেশ্য প্রণোদিত। নিয়ন্ত্রক সংস্থার মতো একটি দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে এ ধরণের মতামত বীমা খাতের প্রতি অনাস্থা যেমন বাড়াবে তেমনি সুনাম ক্ষুন্ন করবে বীমা কোম্পানিগুলোর। যা তাদের ব্যবসায়িক অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করবে।
সূত্র মতে, গত ২ জুলাই বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে ১৭টি নন-লাইফ বীমা কোম্পানিকে ঝুঁকিপূর্ণ বলেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান ড. এম আসলাম আলম। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এমন মন্তব্য করেন। তবে এসময় এই ১৭টি কোম্পানির নাম তিনি প্রকাশ করেননি। সেইসাথে কিসের ভিত্তিতে এসব কোম্পানির ঝুঁকি নির্ণেয় করা হয়েছে তাও প্রকাশ করেননি।
পরবর্তীতে ড. এম আসলাম আলমের বরাত দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ১৭টি কোম্পানির নাম উঠে আসে গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে। এতে বীমা দাবি পরিশোধের হার তুলে ধরা হয়।
১৭টি নন-লাইফ বীমা কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে ইন্স্যুরেন্স নিউজ বিডি। এই পর্যালোচনায় দেখা যায়, ঝুঁকিপূর্ণ কোম্পানিগুলোর তালিকায় রয়েছে নিটল ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড। কোম্পানিটির ২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকের প্রতিবেদনে দাবি পরিশোধের হার ৬০.০৪ শতাংশ। এর আগে ২০২৪ সালে কোম্পানিটির দাবি পরিশোধের হার ছিল ৮৭.৯৮ শতাংশ।
কোম্পানিটির ২০২৪ সালের আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুসারে, প্রতিষ্ঠানটির মোট সম্পদ রয়েছে ১৯৩ কোটি ৮ লাখ টাকা। আর মোট বিনিয়োগের পরিমাণ ৪৩ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। এর মধ্যে এফডিআর রয়েছে ২৮ কোটি ৬০ লাখ টাকা। আলোচ্য বছরে কোম্পানিটি দাবি পরিশোধ করেছে ১৩ কোটি ১১ লাখ টাকা আর বকেয়া রয়েছে ১ কোটি ৭৯ লাখ টাকা।
অপরদিকে সাধারণ বীমা করপোরেশনের কাছে উত্থাপিত নিটল ইন্স্যুরেন্সের পুনর্বীমা দাবি বকেয়া রয়েছে ১৯ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। আর পুনর্বীমার প্রিমিয়াম বাবদ বীমা কোম্পানিটির কাছে সাধারণ বীমা করপোরেশনের পাওনা রয়েছে ১৩ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। ক্রেডিট রেটিং অনুসারে নিটল ইন্স্যুরেন্সের মান ‘এএ+’।
ঝুঁকিপূর্ণ বীমা কোম্পানির তালিকায় আরো রয়েছে প্রভাতী ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড। আইডিআরএ’র ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটির দাবি পরিশোধের হার ২৫.৪১ শতাংশ। এর আগে ২০২৪ সালে কোম্পানিটির দাবি পরিশোধের হার ছিল ৫৪.৬৯ শতাংশ।
২০২৪ সালের আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুসারে, কোম্পানিটির মোট সম্পদ রয়েছে ১৭৯ কোটি ৪২ লাখ টাকা। এর মধ্যে এফডিআর রয়েছে ৬৬ কোটি ১৪ লাখ টাকা। আলোচ্য বছরে কোম্পানিটি দাবি পরিশোধ করেছে ৩৭ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। আর বকেয়া রয়েছে ৩১ কোটি ৫ লাখ টাকা।
অপরদিকে পুনর্বীমা দাবি বাবদ এসবিসি’র কাছে প্রভাতী ইন্স্যুরেন্সের পাওনা ২৫ কোটি ১৩ লাখ টাকা। আবার পুনর্বীমার প্রিমিয়াম বাবদ কোম্পানিটির কাছে এসবিসি’র পাওনা রয়েছে ২৫ কোটি ১৩ লাখ টাকা। ২০২৪ সালে কোম্পানিটির মোট প্রিমিয়াম আয় ১১৪ কোটি টাকা। প্রভাতী ইন্স্যুরেন্সের ক্রেডিট রেটিং ‘এএএ ’।
আইডিআরএ’র প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে ইসলামী ইন্স্যুরেন্স বাংলাদেশের দাবি পরিশোধের হার ১১.০০ শতাংশ। এর আগে ২০২৪ সালে কোম্পানিটির দাবি পরিশোধের হার ছিল ৪৫.৮৭ শতাংশ।
ইসলামী ইন্স্যুরেন্স বাংলাদেশকেও ঝুঁকিপূর্ণ কোম্পানির হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে বীমা খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইডিআরএ।
বীমা কোম্পানিটির দেয়া সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, প্রতিষ্ঠানটির এফডিআর রয়েছে ১০৩ কোটি টাকা। বর্তমানে কোম্পানিটির কাছে বীমা গ্রাহকদের পাওনা বকেয়া রয়েছে ১৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা।
পুনর্বীমা দাবি বাবদ এসবিসি’র কাছে ইসলামী ইন্স্যুরেন্স বাংলাদেশের পাওনা রয়েছে ১৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা। আর পুনর্বীমার প্রিমিয়াম বাবদ কোম্পানিটির কাছে এসবিসি’র পাওনা রয়েছে ২৫ কোটি টাকা। ইসলামী ইন্স্যুরেন্স বাংলাদেশের ক্রেডিট রেটিং ‘এএএ ’।
আইডিআরএ’র প্রতিবেদনে আরো দেখা যায়, ২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে ঢাকা ইন্স্যুরেন্সের দাবি পরিশোধের হার ১.৫৯ শতাংশ। এর আগে ২০২৪ সালে কোম্পানিটির দাবি পরিশোধের হার ছিল ৯.২২ শতাংশ।
ঢাকা ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডকে ঝুঁকিপূর্ণ কোম্পানির হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে বীমা খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইডিআরএ।
কোম্পানিটির ২০২৪ সালের আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুসারে, প্রতিষ্ঠানটির মোট সম্পদ রয়েছে ২৫৪ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। আর মোট বিনিয়োগের পরিমাণ ৭৯ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। এর মধ্যে এফডিআর রয়েছে ৪২ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। আলোচ্য বছরে কোম্পানিটি দাবি পরিশোধ করেছে ৬০ লাখ টাকা। আর বকেয়া রয়েছে ৫ কোটি ৯০ লাখ টাকা।
অপরদিকে এসবিসি’র কাছে উত্থাপিত ঢাকা ইন্স্যুরেন্সের পুনর্বীমা দাবি বকেয়া রয়েছে ৩ কোটি ৭০ লাখ টাকা। আর পুনর্বীমার প্রিমিয়াম বাবদ বীমা কোম্পানিটির কাছে এসবিসি’র পাওনা রয়েছে ১৩ কোটি ৯০ লাখ টাকা। ২০২৩ সালের আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুসারে ঢাকা ইন্স্যুরেন্সের ক্রেডিট রেটিং ‘এএ’।
পূরবী জেনারেল ইন্স্যুরেন্সকেও ঝুঁকিপূর্ণ কোম্পানির হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে বীমা খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইডিআরএ।
অথচ সংস্থাটির প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে পূরবী জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের দাবি পরিশোধের হার ৭.০৭ শতাংশ। এর আগে ২০২৪ সালে কোম্পানিটির দাবি পরিশোধের হার ছিল ৩৫.৩২ শতাংশ।
২০২৪ সালের আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুসারে, পূরবী জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের মোট সম্পদের পরিমাণ ১৫৭ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। আর মোট বিনিয়োগের পরিমাণ ৮৫ কোটি ৬ লাখ টাকা। এর মধ্যে এফডিআর রয়েছে ৭২ কোটি ৫ লাখ টাকা।
পূরবী জেনারেল ইন্স্যুরেন্স সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে কোম্পানিটির কোন বীমা দাবি বকেয়া নেই।
তবে এসবিসি’র কাছে পূরবী জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের পুনর্বীমা দাবি বকেয়া রয়েছে প্রায় ১ কোটি ৩২ লাখ টাকা। আর বীমা কোম্পানিটির কাছে এসবিসি’র পুনর্বীমার প্রিমিয়াম পাওনা রয়েছে ১ কোটি ৪ লাখ টাকা। ২০২৩ সালের আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুসারে পূরবী জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের ক্রেডিট রেটিং ‘এএ’।
আইডিআরএ’র প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে ফিনিক্স ইন্স্যুরেন্সের দাবি পরিশোধের হার ৮.৪৬ শতাংশ। এর আগে ২০২৪ সালে কোম্পানিটির দাবি পরিশোধের হার ছিল ৩৬.৬০ শতাংশ।
ফিনিক্স ইন্স্যুরেন্সকেও ঝুঁকিপূর্ণ কোম্পানির হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে বীমা খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইডিআরএ।
২০২৪ সালের আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুসারে, ফিনিক্স ইন্স্যুরেন্সের মোট সম্পদ ২১৬ কোটি ১৭ লাখ টাকা। বিনিয়োগের পরিমাণ ৩৯ কোটি ১৬ লাখ টাকা। এর মধ্যে এফডিআর রয়েছে ৩৭ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। আলোচ্য বছরে কোম্পানিটি দাবি পরিশোধ করেছে ২৯ কোটি ২৮ লাখ টাকা। আর বকেয়া রয়েছে ৫০ কোটি ৭২ লাখ টাকা।
তবে পুনর্বীমা দাবি বাবদ এসবিসি’র কাছে ফিনিক্স ইন্স্যুরেন্সের পাওনা রয়েছে ১৭ কোটি ৭১ লাখ টাকা। আর পুনর্বীমার প্রিমিয়াম বাবদ কোম্পানিটির কাছে এসবিসি’র পাওনা রয়েছে প্রায় ১৬ কোটি ১১ লাখ টাকা। ফিনিক্স ইন্স্যুরেন্সের ২০২৩ সালের আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুসারে ক্রেডিট রেটিং ‘এএএ ’।
যা বললেন মুখ্য নির্বাহীরা:
ঝুঁকিপূর্ণ বীমা কোম্পানিগুলোর সাথে আলাপ করে ইন্স্যুরেন্স নিউজ বিডি। এসময় মুখ্য নির্বাহীরা বলেন, আইডিআরএ’র পক্ষ থেকে বিষয়টি নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করা হয়েছে এবং এ বিষয়ে সংস্থাটির পক্ষ থেকে তাদের জানানো হয়েছে- তারা এ ধরণের তথ্য কাউকে দেননি। তবে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে আইডিআরএ দুঃখ প্রকাশ করেছে এমন কোন তথ্য জানা যায়নি।
নিটল ইন্স্যুরেন্সের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মাহবুবুল করিম বলেন, ৬০ শতাংশের বেশি দাবি পরিশোধ করা একটি নন-লাইফ বীমা কোম্পানি কিভাবে ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে সেটি আমাদের বোধগম্য নয়।
তিনি বলেন, সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্টের বিষয়ে আমরা খোঁজ-খবর নিয়েছি এবং আইডিআরএ চেয়ারম্যানের সাথেও আলাপ করেছি। আসলে বিষয়টা কন্ট্রাডিক্ট করে। আমরা মনে করি, এটি একটি বায়াস রিপোর্ট।
এস এম মাহবুবুল করিম বলেন, আমাদের কোম্পানির চেয়ারম্যান দেশে ফিরলে আইডিআরএ’র ঝুঁকিপূর্ণ তালিকায় থাকা ১৭ কোম্পানির সাথে আলাপ করে এবং বিআইএ’র নির্বাহী কমিটির সাথে আলোচনা করে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন।
প্রভাতী ইন্স্যুরেন্সের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম জাহিদ বলেন, বিষয়টি নিয়ে বিআইএ প্রেসিডেন্ট আইডিআরএ’র সাথে কথা বলেছেন। সংস্থাটির পক্ষ থেকে এ নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করা হয়েছে। এ কারণে আমরা বিষয়টি নিয়ে আর কোন আলোচনা করতে চাচ্ছি না।
ঢাকা ইন্স্যুরেন্সের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা বায়েজীদ মুজতবা সিদ্দিকী বলেন, আমরা বিষয়টিকে তেমন কোন গুরুত্ব দিচ্ছি না। কারণ, আমাদের কোন দুর্বলতা নেই। আমাদের কোম্পানির সম্পদ, ফিক্সড ডিপোজিট ভালো অবস্থানে রয়েছে। তাছাড়া আমাদের সলভেন্সি মার্জিন ৯ এর ওপরে। তাই আমাদের কোম্পানি রেড জোনে যাওয়ার কথা না।
তাছাড়া আইডিআরএ’র সাথে আমরা কথা বলেছি, তারা এ ধরণের কোন তথ্য কাউকে দেয়নি বলে জানিয়েছে; বলেন বায়েজীদ মুজতবা সিদ্দিকী।
যা বলছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইডিআরএ:
বিষয়টি নিয়ে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করা হলে রোববার (১৩ জুলাই) সংস্থাটির মিডিয়া এন্ড কমিউনিকেশন পরামর্শক ও মুখপাত্র সাইফুন্নাহার সুমি বলেন, বীমা কোম্পানিগুলোর সব কিছু মূল্যায়ন করেই এই ঝুঁকি নিরূপণ করা হয়েছে। তবে এই ঝুঁকি নিরূপণের মানদণ্ড কি তা প্রকাশ করতে চাচ্ছে না কর্তৃপক্ষ।
তিনি বলেন, বীমা কোম্পানিগুলোতে নিরীক্ষা পরিচালনা আইডিআরএ’র নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ। তাছাড়া ২০১৯ সাল থেকে কোম্পানিগুলোতে কোন নিরীক্ষা হয়নি। এ কারণে প্রাথমিকভাবে ১৭টি নন-লাইফ কোম্পানির ২০১৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ব্যবসায়িক কার্যক্রমের ওপর নিরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে বাকী কোম্পানিগুলোতেও নিরীক্ষক নিয়োগ করা হবে।