৫০% পুনর্বীমার বাধ্যবাধকতা তুলে দেয়ার প্রস্তাব, আন্দোলনে করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী

নিজস্ব প্রতিবেদক: সাধারণ বীমা করপোরেশনে পুনর্বীমা করার আইনী বাধ্যবাধকতা ও সরকারি সম্পত্তির ৫০ শতাংশ প্রিমিয়ামের বীমা দাবি বেসরকারি নন-লাইফ বীমা কোম্পানিকে পরিশোধ করার প্রস্তাবসহ আইনের ১৭টি স্থানে সংশোধনীর প্রস্তাব করে বীমা করপোরেশন আইন পরিবর্তনের প্রস্তাব করেছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) ।
অপরদিকে জাতীয় নির্বাচনের আগে তড়িঘরি করে বীমা করপোরেশন আইন সংশোধন বন্ধ করার দাবি জানিয়ে আন্দোলনে নেমেছে সাধারণ বীমা করপোরেশন কর্মচারি ইউনিয়ন। গত কয়েকদিন ধরেই তারা এ আন্দোলন করে আসছে।
আইনের সংশোধনীতে ১৩ নং প্রস্তাবে ২০১৯ সালের বীমা করপোরেশন আইনের ১৭ নং ধারা বিয়োজনের প্রস্তাব করা হয়েছে। বীমা করপোরেশন আইনের ১৭ ধারাতে বেসরকারি বীমা কোম্পানির পুনর্বীমাযোগ্য প্রিমিয়ামের ৫০ শতাংশ সাধারণ বীমা করপোরেশনে পুনর্বীমা করার বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়েছে।
বীমা করপোরেশন আইন ২০১৯ এর ১৭ নং ধারায় পুনর্বীমার বিষয়ে বলা হয়েছে-
(১) বাংলাদেশে নিবন্ধিত ও বীমা ব্যবসায়রত প্রত্যেক বীমাকারী, সাধারণভাবে প্রচলিত ও গ্রহণযোগ্য শর্তে তার নিজস্ব ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত পুনর্বীমা অংশের পুনর্বীমা করবে।
(২) নন-লাইফ বীমা ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে পুনর্বীমাযোগ্য অংশের ৫০ শতাংশ সাধারণ বীমা করপোরেশনের নিকট করতে হবে এবং অবশিষ্ট ৫০ শতাংশ উক্ত করপোরেশন অথবা বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বা বাইরে অবস্থিত অন্য কোনো বীমাকারীর নিকট করা যাবে:
তবে শর্ত থাকে যে, সরকার প্রয়োজনে সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা উক্ত সীমা পুনর্নির্ধারণ করতে পারবে।
(৩) জীবন বীমা ব্যবসার ক্ষেত্রে পুনর্বীমা অংশের সম্পূর্ণ বা যেকোনো অংশ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বা বাইরে অবস্থিত কোনো বীমাকারীর নিকট করা যাবে:
তবে শর্ত থাকে যে, সরকার প্রয়োজনে সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা তদকর্তৃক সময় সময় নির্ধারিত সীমা মোতাবেক জীবন বীমা করপোরেশনের নিকট পুনর্বীমা করার বাধ্যবাধকতা আরোপ করতে পারবে।
সংশোধনী প্রস্তাবে বলা হয়েছে- ২০১৯ সালের ৮ নং আইনের ধারা ১৭ এর বিয়োজন হবে।
অপরদিকে সরকারি সম্পত্তির বীমা থেকে আয়ের ৫০ শতাংশ বেসরকারি কোম্পানিগুলোকে ভাগ করে দেয়ার বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়েছে বীমা করপোরেশন আইনের ১৬ নং ধারায়। এই ধারা অনুসারে, সকল ধরণের সরকারি সম্পত্তির বীমা করবে সাধারণ বীমা করপোরেশন। পরে সরকারি সম্পত্তির বীমা থেকে আয়ের ৫০ শতাংশ নন-লাইফ বীমা কোম্পানিগুলোকে সমহারে ভাগ করে দেয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
তবে নতুন সংশোধনীতে প্রস্তাব করার হয়েছে, বেসরকারি কোম্পানিগুলোকে ভাগ করে দেয়া ৫০ শতাংশ প্রিমিয়ামের বিপরীতে কোনো পলিসির বীমা দাবি উত্থাপিত হলে সেই দাবি পরিশোধ করবে সংশ্লিষ্ট বেসরকারি নন-লাইফ বীমা কোম্পানি। একইসঙ্গে সরকারি সম্পত্তির সংজ্ঞাতে বড় পরিবর্তনের প্রস্তাব আনা হয়েছে।
১৬ নং ধারার সংশোধনীতে বলা হয়েছে, উপ-ধারা (১) এর ব্যাখ্যা এর পূর্বে “অনুরুপভাবে বীমা পলিসির অধীনে উত্থাপিত দাবী সমূহের ক্ষেত্রে আনুপাতিক হারে বীমা কোম্পানি সমূহ দায় পরিশোধ করিবে। সাধারণ বীমা কর্পোরেশন সরকারি ব্যবসা আহরনের জন্য সরকার/বোর্ড কর্তৃক নির্দিষ্টকৃত ব্যবস্থাপনা খরচ বিয়োজন করিয়া বেসরকারী কোম্পানীর মধ্যে বন্টন করিবে,
তবে নিম্নবর্ণিত ক্ষেত্রে সাধারণ বীমা কর্পোরেশন কর্তৃক ১০০% (শতকরা একশত ভাগ) অবলিখনের বাধ্যবাধকতা সরকার শিথিল করিতে পারিবেঃ
অ) সরকার বা কর্তৃপক্ষের অধীনে পরিচালিত প্রকল্পের আওতায় পরীক্ষামূলকভাবে চালুকৃত বীমা পরিকল্পে;
আ) সরকারি কোনো সম্পত্তিতে বিদেশী অর্থায়ন সংশ্লিষ্ট থাকিলে এবং এইরূপ অর্থায়নের শর্ত হিসাবে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ফোন ক্রেডিট রেটিং প্রতিষ্ঠান হতে নির্দিষ্ট মানের ক্রেডিট রেটিং রহিয়াছে এইরূপ বীমাকারী হইতে বীমা গ্রহণ করার বাধ্যবাধকতা আরোপিত হইলে এবং সেই সময়ে সাধারণ বীমা কর্পোরেশনের শর্তের বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী ক্রেডিট রেটিং না থাকিলে” বাক্যসমূহ সংযোজিত হইবে'
তবে বীমা করপোরেশন আইন সংশোধনের এসব প্রস্তাবের বিরোধীতা করে সাধারণ বীমা করপোরেশন কর্মচারি ইউনিয়ন ৭ দফা দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে। কর্মচারি ইউনিয়ন বলছে, জাতীয় নির্বাচনের আগে তড়িঘরি করে বীমা করপোরেশন আইন ২০১৯ সংশোধন বন্ধ করতে হবে।

 (1).gif)


