জলবায়ু পরিবর্তন: নিউজিল্যান্ডে বীমার ক্ষতি ২৪৮ মিলিয়ন ডলার

ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক: জলবায়ু পরিবর্তনের মারাত্মক প্রভাব পড়েছে দক্ষিণ-পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরের দ্বীপরাষ্ট্র নিউজিল্যান্ডে। চরম আবহাওয়ার কারণে ব্যাপক লোকসানের মুখে পড়েছে দেশটির বীমাখাত। অস্বাভাবিক শিলাবৃষ্টি, বন্যা, খরা, ঘূর্ণিঝড়সহ বিভিন্ন ধরণের প্রাকৃতিক দুর্যোগে গেলো বছর নিউজিল্যান্ডে বীমার খরচ দাঁড়িয়েছে ২৪৮ মিলিয়ন ডলার।

এ কারণে ২০২০ সালকে আবহাওয়াজনিত বীমা দাবির জন্য সবচেয়ে খারাপ বছর বলে আখ্যায়িত করেছেন দেশটির বীমাখাত সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিউজিল্যান্ডবাসীর জন্য খুবই বাস্তবিক। আমাদেরকে অবশ্যই পরিবর্তিত জলবায়ুর সাথে খাপ খাইয়ে নিতে হবে এবং সম্ভাব্য ঝুঁকি কমাতে পদক্ষেপ নেয়াসহ আরও বেশি স্থিতিস্থাপক কমিউনিটি গড়ে তুলতে হবে।

ইন্স্যুরেন্স কাউন্সিল অব নিউজিল্যান্ড’র প্রধান নির্বাহী টিম গ্র্যাফটন জানিয়েছেন, খারাপ আবহাওয়ার কারণে ২০২০ সালে বীমা কোম্পানিগুলোর ২৪৮ মিলিয়ন ডলার খরচের রেকর্ড হয়েছে। তিনি বলেন, আবহাওয়াজনিত ক্ষয়-ক্ষতির কারণে গেলো বছর নিউজিল্যান্ডের ১৩ হাজার ৬শ’র বেশি বাড়ির মালিক বীমা দাবি উত্থাপন করেছেন।

এর মধ্যে ২০২০ সালের ২৯ নভেম্বর থেকে ১ ডিসেম্বর এই সময়ে চরম আবহাওয়া ও বন্যার শিকার হয় নিউজিল্যান্ডের রাজধানী এবং জনসংখ্যার দিক দিয়ে দেশটির তৃতীয় বৃহত্তম শহর ওয়েলিংটন। এ ছাড়াও বক্সিং ডে’তে অস্বাভাবিক শিলাবৃষ্টি আঘাত হানে নেলসন-মার্লবারো অঞ্চলে। শুধু বক্সিং ডে’র আঘাতের কারণে বীমা দাবি উত্থাপিত হয় ৪১ মিলিয়ন ডলার।

আন্তর্জাতিক প্রতিবেদনগুলোতে নিউজিল্যান্ডকে বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বীমাকৃত দেশ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। যদিও লন্ডনের বীমা প্রতিষ্ঠান লয়েডস এর তালিকায় নিউজিল্যান্ডকে বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ঝুঁকি প্রবণ দেশ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এদিকে গ্র্যাফটন বলেছেন, হঠাৎ ও অপ্রত্যাশিত চরম আবহাওয়া ব্যক্তি ও তাদের সম্প্রদায়ের জন্য ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি রেখে যেতে পারে।

ইন্স্যুরেন্স কাউন্সিল অব নিউজিল্যান্ড’র প্রধান নির্বাহী টিম গ্র্যাফটন জানিয়েছেন, অক্টোবরের ওহাউ অগ্নিকাণ্ডে চূড়ান্ত বীমা দাবির খরচ ৩৫ মিলিয়ন ডলার। এ ঘটনায় ১৮০টি বাড়ি ও জিনিসপত্রের বীমা দাবি, ১৫টি ব্যবসায়িক ও বাণিজ্যিক বীমা দাবি এবং ৩১টি ক্ষতিগ্রস্থ বা ধ্বংস হয়ে যাওয়া যানবাহনের জন্য বীমা দাবি উত্থাপন করা হয়েছে।

বছরটিতে আবহাওয়ার ব্যয়বহুল ঘটনাগুলোর মধ্যে রয়েছে- নভেম্বরে নেপিয়ার বন্যা, যাতে বৈধ দাবির অনুমান করা হয় ৭৩ মিলিয়ন ডলার, জুলাই মাসে আপার নর্থ আইল্যান্ডের বন্যা, এতে ৪৪ মিলিয়ন ডলার বীমা দাবি উত্থাপন হয়, ফেব্রুয়ারিতে সাউথল্যান্ড বন্যা, এসময় বীমা কোম্পানিগুলোর ব্যয় ৩০ মিলিয়ন ডলার এবং জুনে আপার নর্থ আইল্যান্ডে ঝড় ও টর্নেডোয় বীমাখাতের ব্যয় ১৭ মিলিয়ন ডলার। (সূত্র: স্টাফ)