৪০ লাখ রুপি বীমা দাবি পেতে আত্মীয়কে হত্যা
ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক: জীবন বীমা দাবি বাবদ ৪০ লাখ রুপি হাতিয়ে নেয়ার জন্য নিকটাত্মীয় একজন ফল ব্যবসায়িকে হত্যার ঘটনা ঘটেছে ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের প্রশাসনিক জেলা দাভানগেরে। গত রোববার (৩ নভেম্বর) সংঘটিত এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে নিহতের একজন নিকটাত্মীয়সহ ৪ জনকে আটক করেছে দেশটির পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাদেরকে আটকের পর ১৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
দাভানগেরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিজয়া কুমার সন্তোষী বুধবার (৬ নভেম্বর) জানিয়েছেন, হত্যাকাণ্ডের শিকার ব্যক্তি দুগ্গেশ (৩২) নামে পরিচিত। তিনি প্রচুর মদ্যপানের কারণে প্রায়শই অসুস্থ হয়ে পড়েন। এই সুযোগ কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছেন তারই নিকতাত্মীয় গণেশ (২৪) । তিনি দুগ্গেশের নামে ৪০ লাখ রুপির একটি বীমা পলিসি করেন এবং সেই বীমা পলিসির টাকা পাওয়ার জন্য দুগ্গেশকে হত্যা করার পরিকল্পনা করেছিলেন।
পুলিশ কর্মকর্তা আরো জানান, দুগ্গেশ তার স্বাস্থ্যগত সমস্যার কারণে বেশি দিন বাঁচবেন না এমন ধারণা করে গণেশ চলতি বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি একটি বীমা পলিসি কিনেছিলেন, যার বার্ষিক প্রিমিয়াম ছিল ২ লাখ ৯ হাজার রুপি। গণেশ এই বীমার প্রিমিয়াম প্রদান করেছিলেন এবং দুগ্গেশের মাকে মনোনীতক হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছিলেন।
এদিকে হত্যাকাণ্ডের শিকার দুগ্গেশ, যিনি একটি বাস স্ট্যান্ডের কাছে ফল বিক্রি করতেন, তিনি এই বীমা পলিসি সম্পর্কে অবগত ছিলেন না এবং গণেশকে তার ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ক্ষমতা অর্পণ করেছিলেন। এমনকি তাকে তার পক্ষে নথিতে স্বাক্ষর করার অনুমতিও দিয়েছিলেন বলে জানান দাভানগেরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিজয়া কুমার সন্তোষী।
অভিযুক্ত গণেশ হত্যাকাণ্ডের শিকার দুগ্গেশের মায়ের কাছ থেকে বীমা দাবির টাকা উত্তোলনের জন্য দুটি ফাঁকা স্বাক্ষরিত চেকও নিয়ে রেখেছিলেন। কিন্তু যেহেতু দুগ্গেশ মারা যাননি এবং বীমার পরবর্তী প্রিমিয়াম দেয়ার সময়সীমা ছিল জানুয়ারি ২০২৫, এক্ষেত্রে গণেশ পলিসি বাতিল হওয়ার বিষয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলেন, বলেন ওই পলিশ কর্মকর্তা।
তিনি আরও বলেন, গণেশ এবং তার তিন সহযোগী, অনিল (১৯), শিবকুমার (২৫) এবং মারুতি (২৪), গত রোবার রাতে দুগ্গেশকে একটি বারে নিয়ে গিয়েছিলেন এবং সেখানে তারা তাকে প্রচুর পরিমাণে মদ্যপান করতে বাধ্য করেছিল। পরে, তারা দুগ্গেশকে একটি নির্জন এলাকায় নিয়ে যায় এবং গামছা দিয়ে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।
দুগ্গেশকে খুন করার পর গণেশ অপরাধ ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করে দাবি করে যে দুগেশ অতিরিক্ত মদ্যপানের কারণে ভেঙে পড়েছিল। তারপর তিনি দুগ্গেশকে একটি হাসপাতালে নিয়ে যান যেখানে ডাক্তাররা তার মৃত্যু নিশ্চিত করেন। কিন্তু দুগ্গেশের মুখে সন্দেহজনক আঘাতের চিহ্ন দেখেন ডাক্তাররা পুলিশকে তদন্তের পরামর্শ দেয় বলে জানান সন্তোষী।
এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সোমবার (৪ নভেম্বর) চার অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং তাদের বিরুদ্ধে বিএনএস ধারা ১০৩ (হত্যা) মামলা দায়ের করা হয়। জেএমএফসি আদালতে হাজির হওয়ার পর তাদের ১৪ দিনের জন্য বিচার বিভাগীয় হেফাজতে রাখা হয়েছে বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সন্তোষী।
(সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস, উদয়বাণী)