ঘুরলেন, দেখলেন, শুনলেন আইডিআরএ’র কর্মকর্তারা
আবদুর রহমান আবির: দেশের লাইফ ও নন-লাইফ বীমা কোম্পানিগুলোর শাখা কার্যালয় পরিদর্শন করেছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) । চট্টগ্রাম, সিলেট ও খুলনার প্রত্যন্ত অঞ্চলের শাখা কার্যালয়গুলোতে গত ২৬ নভেম্বর থেকে ২৯ নভেম্বর পর্যন্ত চলে এ পরিদর্শন। কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক, পরিচালক ও কর্মকর্তারা এ পরিদর্শন করেন।
পরিদর্শনকালে বীমা কোম্পানিগুলোর ইনোভেটিভ কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করা হয়। স্থানীয় বীমা কর্মকর্তা ও কর্মীদের অভিজ্ঞতার কথা শোনেন আইডিআরএ’র কর্মকর্তারা। কোম্পানিগুলোর একাউন্ট কিভাবে পরিচালনা করা হচ্ছে, সফটওয়্যারে কিভাবে ডাটা ইনপুট দেয়া হচ্ছে এসব বিষয়ও পরিদর্শন করা হয়। এ সময় বিভিন্ন বীমা কোম্পানির উঠান বৈঠকেও তারা অংশ নেন।
আইডিআরএ সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম, সিলেট ও খুলনা অঞ্চলে লাইফ ও নন-লাইফ বীমা কোম্পানিগুলোর শাখা অফিস সরাসরি পরিদর্শনে সম্প্রতি প্রতিনিধি দল পাঠায় কর্তৃপক্ষ। চট্টগ্রাম অঞ্চল পরিদর্শনে কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক (যুগ্ম-সচিব) খলিল আহমদের সঙ্গে ছিলেন পরিচালক -৩ (উপ-সচিব) আবুল কাশেম মোহাম্মদ ফজলুল হক ও কর্মকর্তা হামেদ বিন হাসান।
এ ছাড়াও সিলেট অঞ্চলে বীমা কোম্পানিগুলোর শাখা কার্যালয় পরিদর্শন করেন আইডিআরএ’র পরিচালক (যুগ্ম-সচিব) ড. মহাঃ বশিরুল আলম ও পরিচালক (যুগ্ম-সচিব) ফারুখ আহমেদ। খুলনা অঞ্চলে কর্তৃপক্ষের পরিচালক-২ (উপ-সচিব) কামরুল হক মারুফসহ আরো কয়েকজন কর্মকর্তা বীমা কোম্পানিগুলোর শাখা কার্যালয় পরিদর্শন করেন।
কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক (যুগ্ম-সচিব) খলিল আহমদ বলেন, আমরা মূলত বীমা কোম্পানিগুলোর ইনোভেটিভ কার্যক্রম দেখতে গিয়েছিলাম। তাদের অভিজ্ঞতাগুলো আমরা শোনার চেষ্টা করেছি। একাউন্ট কিভাবে পরিচালনা করছে, সফটওয়্যারে তারা কিভাবে ডাটা ইনপুট দিচ্ছে এসব বিষয়ও আমরা পরিদর্শন করেছি। বিভিন্ন কোম্পানির বীমা দাবি পরিশোধ ও উঠান বৈঠকেও আমরা অংশ নিয়েছি।
তিনি বলেন, এতো দিন আমরা দেখেছি, শুনেছি যে, লাইফ বীমা কোম্পানির এজেন্টরা মানুষের দ্বারে দ্বারে যায় বীমা পলিসি বিক্রি করতে। কিন্তু এবার আমরা দেখতে পেয়েছি যে, নন-লাইফ বীমা কোম্পানির এজেন্টরাও এখন মানুষের দ্বারে দ্বারে বীমা বিক্রির করতে যায়। গ্রীন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্সের এজেন্টদের এ কর্মকাণ্ড আমাদের দৃষ্টি আকৃষ্ট করেছে, বলেন খলিল আহমদ।
বীমা সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে উঠান বৈঠক সবচেয়ে বেশি কার্যকর উল্লেখ করে খলিল আহমদ বলেন, পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্সের একটি উঠান বৈঠকে আমরা ২ কোটি টাকার বেশি বীমা পলিসি বিক্রি করতে দেখেছি। বীমা গ্রাহকরা আমাদের হাত দিয়ে এসব পলিসি কোম্পানিতে জমা দিয়েছে। কোম্পানির সেবায় সন্তুষ্ট বলে জানিয়েছে গ্রাহকরা।
আইডিআরএ’র এই নির্বাহী পরিচালক আরো বলেন, ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্সের একটি শাখায় আমরা দেখেছি বীমা গ্রাহকরা খুব অল্প সময়ের মধ্যেই বীমার টাকা উত্তোলন করতে পারছে। কোম্পানিটির কমপ্লায়ান্স ভালো বলেও উল্লেখ করেন খলিল আহমদ।
তিনি বলেন, মেঘনা লাইফের বীমা কর্মীরা সরকারি আমলা, ব্যাংকার, রাজনীতিবিদসহ বড় বড় গ্রাহক সংগ্রহ করেছে। তাই তাদের বীমা পলিসিগুলোও হয় বড় আকারের। এটাও আমাদের নজর কেড়েছে, বলেন আইডিআরএ’র নির্বাহী পরিচালক (যুগ্ম-সচিব) খলিল আহমদ।
বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্র্রণ কর্তৃপক্ষের পরিচালক -৩ (উপ-সচিব) আবুল কাশেম মোহাম্মদ ফজলুল হক বলেন, চট্টগ্রামে আমরা ন্যাশনাল লাইফ, মেঘনা লাইফ, গ্রীন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্স, প্রগতি ইন্স্যুরেন্স, ফেডারেল ইন্স্যুরেন্স, সিটি জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, ইউনাইটেড ইন্স্যুরেন্স ও প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্সসহ প্রায় সকল লাইফ ও নন-লাইফ বীমা কোম্পানির শাখা কার্যালয় ঘুরেছি।
এসব কোম্পানির কর্মকাণ্ড আমরা পরিদর্শন করেছি। বীমা কর্মীদের অভিজ্ঞতার কথাও শুনেছি। তাদের কর্ম প্রচেষ্টা ও আন্তরিকতা দেখে আমরা মুগ্ধ। বীমা গ্রাহকদের বীমার প্রতি আস্থার পারদের ক্রমবর্ধমান যে লেখচিত্র স্বচক্ষে দেখে আসলাম, আশা করি সকল কোম্পানিই তাদের আস্থার সংকট কাটিয়ে উঠে এ শিল্পকে জিডিপিতে দৃশ্যমান অবদান গড়তে ভূমিকা রাখতে পারবে, বলেন একেএম ফজলুল হক।