বিএনপির ১৯ দফায় নেই বীমাখাত
পাপলু রহমান: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)’র ইশতেহারেও স্থান পায়নি দেশের বীমাখাত। ইশতেহারে গণতন্ত্র ও আইনের শাসন, বিচার বিভাগ, মতপ্রকাশের স্বাধীনতাসহ ১৯ অঙ্গীকার করা হয়েছে।
বিএনপির ইশতেহারে গুরুত্বারোপ করা ১৯ দফার অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে রয়েছে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ, অর্থনীতি, মুক্তিযোদ্ধা, যুব নারী ও শিশু, শিক্ষা ও কর্মসংস্থান, জ্বালানি, তথ্য ও প্রযুক্তি, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি, বৈদেশিক ও প্রবাসীকল্যাণ, কৃষি ও শিল্প, স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা, প্রতিরক্ষা ও পুলিশ, আবাসন, পেনশন ফান্ড ও রেশনিং ফান্ড প্রতিষ্ঠা, পরিবেশ, পররাষ্ট্র এবং ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর গুরুত্বারোপ।
মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর হোটেল লেকশোয় বিএনপির নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করা হয়। ইশতেহার ঘোষণা করেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ক্ষমতায় গিয়ে সরকার গঠন করতে পারলে এসব অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
‘ভিশন ২০৩০’-এর আলোকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ইশতেহার তৈরি করেছে বিএনপি। এবারের ইশতেহারে তরুণদের সাম্প্রতিককালের দাবি-কোটা সংস্কার, ভ্যাটমুক্ত শিক্ষা ও নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের বিষয় প্রাধান্য দেয়া হয়েছে।
এর আগে সোমবার জোটগতভাবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশ করা হয়। সেখানেও গুরুত্ব পায়নি অর্থনীতির সম্ভাবনাময় খাত বীমা। বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিয়ে ৩৫ দফা ইশতেহার ঘোষণা করেন ফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন।
বীমা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, স্বাধীনতা পরবর্তী কোন সরকার বা রাজনৈতিক দলেই গুরুত্ব পায়নি দেশের বীমাখাত। সম্ভাবনাময় এ খাতটি নিয়ে কোন পরিকল্পনা গ্রহণ করতেও দেখা যায়নি। সরকার পরিবর্তন হলেও অবহেলিতই রয়েছে দেশের গুরুত্বপূর্ণ এই বীমাখাত।
অথচ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো উন্নত দেশগুলোতে গুরুত্ব পাচ্ছে বীমাখাত। এমনকি ক্ষমতার পালাবদলেও খাতটির প্রভাব দৃশ্যমান। নাগরিক সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে এবং অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেও অগ্রাধিকার পাচ্ছে এ খাত। দারিদ্র্য বিমোচন, কৃষি উন্নয়ন, পশুপালন, স্বাস্থ্যসেবা, জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলায় গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হয়ে উঠেছে বীমাখাত।
বীমাখাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইডিআরএ’র তথ্য অনুসারে, বর্তমানে দেশে সরকারি-বেসরকারি ৩২টি লাইফ ও ৪৬টি নন-লাইফ বীমা কোম্পানি রয়েছে। ২০১৭ সালে এই ৭৮টি কোম্পানি ১১ হাজার ১৫০ কোটি টাকা প্রিমিয়াম সংগ্রহ করে। এরমধ্যে লাইফ খাতে প্রিমিয়াম আয় ৮ হাজার ২১৫ কোটি টাকা এবং নন-লাইফে প্রিমিয়াম আয় ২ হাজার ৯৩৪ কোটি টাকা।
এ ছাড়াও ২০১৮ সালের তৃতীয় প্রান্তিকের তথ্য অনুসারে, বর্তমানে ৩২টি লাইফ বীমা কোম্পানির লাইফ ফান্ডের পরিমাণ ৩১ হাজার ৫৯৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা। এসব কোম্পানির মোট সম্পদের পরিমাণ ৩৬ হাজার ৮২৪ কোটি ৮ লাখ টাকা। বিভিন্ন খাতে কোম্পানিগুলোর বিনিয়োগের পরিমাণ ৩০ হাজার ১২৭ কোটি ৯ লাখ টাকা।
অন্যদিকে ২০১৮ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকের তথ্য অনুসারে ৪৬টি নন-লাইফ বীমা কোম্পানির মোট সম্পদের পরিমাণ ১০ হাজার ৬৫২ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। বিনিয়োগের পরিমাণ ১০ হাজার ৬৪৯ কোটি ৮ লাখ টাকা। এসব কোম্পানির রিজার্ভের পরিমাণ ৯৩০ কোটি ৫২ লাখ টাকা।