১৪২৯ কোটি টাকা অবৈধ বিনিয়োগ

ফারইষ্ট ইসলামী লাইফের নথি তলব

নিজস্ব প্রতিবেদক: ফারইষ্ট ইসলামী লাইফের মোট বিনিয়োগ ২ হাজার ৬১৭ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। এর মধ্যে ১ হাজার ৪২৯ কোটি টাকাই বিনিয়োগ করেছে অবৈধভাবে। বীমা আইন লঙ্ঘন করে এ বিনিয়োগ করা হয়েছে জমি, বিল্ডিংসহ অন্যান্য খাতে। অন্যদিকে গ্রাহকের স্বার্থ্য রক্ষায় সরকারি বন্ডে বিনিয়োগের বাধ্যবাধকতা থাকলেও তা মানেনি কোম্পানিটি। মাত্র ৩ মাসের ব্যাবধানে অন্যান্য খাতে বিনিয়োগ দেখানো হয়েছে ৯০০ কোটি টাকা।

সম্প্রতি ফারইষ্ট ইসলামী লাইফের অবৈধ বিনিয়োগ নিয়ে ইন্স্যুরেন্স নিউজ বিডিসহ অন্যান্য গণমাধ্যমে একাধিক সংবাদ প্রকাশিত হয়। বিষয়টি নজরে আসে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)’র। এরপরই কোম্পানিটির বিরুদ্ধে তদন্ত করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে উদোগ নেয় বীমা খাতের এ নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

এরইমধ্যে বিনিয়োগের সংক্রান্ত নথিপত্র, জমি ও অন্যান্য খাতে বিনিয়োগে আইডিআরএ’র অনুমোদনপত্রসহ সংশ্লিষ্ট সকল প্রয়োজনীয় নথি তলব করছে কর্তৃপক্ষ। একই সাথে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে না, তারও ব্যাখা দিতে বলা হয়েছে। এ ছাড়াও কোম্পানিটির অধীনে সাবসিডিয়ারি কোম্পানিসমূহের নামে কেনা সম্পদের বিস্তারিত বিবরণও চাওয়া হয়েছে। গত ৩ ডিসেম্বর কোম্পানিটিকে এ সংক্রান্ত চিঠি দেয় আইডিআরএ।

আইডিআরএ’র তথ্য অনুসারে, ২০১৮ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে ফারইষ্ট ইসলামী লাইফের মোট বিনিয়োগ দাঁড়ায় ২ হাজার ৬১৭ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। এরমধ্যে স্থাবর সম্পত্তি তথা জমি, বিল্ডিং, ফ্লোর, ফ্ল্যাট ইত্যাদি খাতে কোম্পানিটি বিনিয়োগ করে ৮৯৯ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। যা মোট বিনিয়োগের ৩৪.৩৬ শতাংশ।

অথচ বীমা বিধিমালা, ১৯৫৮ এর বিধি ১০এ’র উপ-বিধি (ছ) এর বিধান মোতাবেক বিনিয়োগের পরিমাণ বীমা গ্রাহকদের দায়ের ২০% এর অধিক হবে না। সে হিসাবে কোম্পানিটি অবৈধভাবে স্থাবর সম্পত্তিতে ৩৪১ কোটি ৪৪ লাখ টাকা বেশি বিনিয়োগ করেছে। যা মোট বিনিয়োগের ১৪.৩৬ শতাংশ।

কর্তৃপক্ষ অনুমোদিত অন্যান্য খাতে কোম্পানিটির দ্বিতীয় প্রান্তিকে বিনিয়োগ দাঁড়িয়েছে ৯০১ কোটি ৬১ লাখ টাকা। যা মোট বিনিয়োগের ৩৪.৪৪ শতাংশ। অথচ ১৯৫৮’র বিধিমালা অনুসারে এ খাতে বিনিয়োগ করতে পারে সর্বোচ্চ ৭.৫ শতাংশ। এই হিসাবে কোম্পানিটি ২৬.৯৪ শতাংশ বেশি বিনিয়োগ করেছে। যা টাকার অংকে দাঁড়ায় ৭০৫ কোটি ২৬ লাখ টাকা।

অন্যদিকে সরকারি সিকিউরিটিজ খাতে কোম্পানিটি বিনিয়োগ করেছে ২৯৮ কোটি ২৩ লাখ টাকা। যা দ্বিতীয় প্রান্তিকে মোট বিনিয়োগের ১১.৩৯ শতাংশ। অথচ ১৯৫৮’র বিধি অনুসারে সিকিউরিটিজ বন্ডে ৩০ শতাংশ বিনিয়োগ বাধ্যতামূলক। সে হিসাবে কোম্পানিটি সরকারি সিকিউরিটিজ খাতে ৩৮২ কোটি ৪৩ লাখ টাকা বা ১৮.০৬ শতাংশ কম বিনিয়োগ করেছে।