ব্যবসা নেই লাইফ বীমা কোম্পানির, তাই গাড়ি বিক্রির নির্দেশ
অনুপ সর্বজ্ঞ: সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের গাড়ির সংখ্যা ১০০টি। তবে গাড়ি প্রতি প্রিমিয়াম আয় হয়েছে মাত্র ৪৩ লাখ টাকা। সানলাইফ ইন্স্যুরেন্সের গাড়ির সংখ্যা ১০২টি, আর গাড়ি প্রতি প্রিমিয়াম আয় হয়েছে ৬৩ লাখ টাকা।
শুধু সোনালী বা সানলাইফ নয় বরং ব্যবসা নেই অধিকাংশ লাইফ বীমা কোম্পানির, কিন্তু এর পরেও চলছে গাড়ি বিলাস। এমনকি কোম্পানির গাড়ি ব্যবহার হচ্ছে কর্মকর্তাদের ব্যক্তিগত কাজে। যার প্রভাব পড়ছে কোম্পানির ব্যবস্থাপনা ব্যয়ে। এ অবস্থায় অপ্রয়োজনীয় গাড়ি বিক্রির নির্দেশ দিয়েছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)।
কোম্পানির গাড়ি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার হচ্ছে না বলে জানান সানলাইফ ইন্স্যুরেন্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম। তিনি বলেন, এরইমধ্যে অপ্রয়োজনীয় ও নষ্ট গাড়িগুলো বিক্রি করে দেয়া হয়েছে। আর যেগুলো আছে সেগুলো প্রতিষ্ঠানের কাজেই ব্যবহার হচ্ছে।
আইডিআরএ বলছে, লাইফ বীমা কোম্পানির প্রিমিয়ামের পরিধি বিবেচনায় গাড়ি ব্যবহার করা প্রয়োজন। কারণ গাড়ি ব্যবহারের ক্ষেত্রে এর রক্ষণাবেক্ষণ, জ্বালানী এবং চালকের বেতন প্রভাব ফেলে কোম্পানির ব্যবস্থাপনা ব্যয়ে।
নিয়ন্ত্রক সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ফারইষ্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের গাড়ির সংখ্যা ১৬৩টি। কোম্পানিটির গাড়ি প্রতি প্রিমিয়াম আয় হয়েছে ৩ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। ডেল্টা লাইফের গাড়ির সংখ্যা ১০৫টি, আর গাড়ি প্রতি প্রিমিয়াম আয় ৩ কোটি ৭২ লাখ টাকা। পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্সের গাড়ির সংখ্যা ১৮৭টি, গাড়ি প্রতি এ কোম্পানির প্রিমিয়াম আয় ৩ কোটি ৩৪ লাখ টাকা।
এদিকে, প্রাইম ইসলামী লাইফের গাড়ি ১২৩টি হলেও গাড়ি প্রতি প্রিমিয়াম আয় হয়েছে মাত্র ১ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ২৮০টি গাড়ি রয়েছে, যদিও গাড়ি প্রতি এর প্রিমিয়াম আয় হয়েছে মাত্র ১ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের গাড়ির সংখ্যা ১৩৫টি ও গাড়ি প্রতি প্রিমিয়াম আয় ১ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। সন্ধানী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের গাড়ির সংখ্যা ১০২টি, গাড়ি প্রতি এর প্রিমিয়াম আয় হয়েছে ১ কোটি ৩ লাখ টাকা।
এ প্রসঙ্গে ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্সের মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা জামাল মোহাম্মদ আবু নাসের বলেন, আমাদের ৯৫ শতাংশ গাড়িই মাইক্রো বাস, প্রাইভেট কার নয়। প্রায় ২০ বছর আগের পুরোনো এই গাড়িগুলো ব্যবসার কাজেই ব্যবহৃত হয়। প্রতিষ্ঠানের গাড়ি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহারের প্রশ্নই আসেনা।
জানা গেছে, গোল্ডেন লাইফ ইন্স্যুরেন্সের গাড়ির সংখ্যা ৭০টি। তবে গাড়ি প্রতি মাত্র ১৩ লাখ টাকা প্রিমিয়াম আয় হয়েছে এ কোম্পানির। বেস্ট লাইফের গাড়ির সংখ্যা ৩০টি, গাড়ি প্রতি এর প্রিমিয়াম হয়েছে ১৯ লাখ টাকা। যমুনা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের গাড়ির সংখ্যা ২৩টি। আর গাড়ি প্রতি এর প্রিমিয়াম আয় হয়েছে ২০ লাখ টাকা। ডায়মন্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্সের গাড়ির সংখ্যা ২৫টি হলেও গাড়ি প্রতি এর প্রিমিয়াম আয় হয়েছে ২৯ লাখ টাকা।