আইডিআরএ’র সাবেক কর্তাদের দ্বিগুণ গাড়িভাতা: ব্যবস্থা নেয়া হয়নি ৪ বছরেও

নিজস্ব প্রতিবেদক: বেতনের প্রায় দ্বিগুণ গাড়িভাতা নিয়েছেন বীমাখাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)’র সাবেক চেয়ারম্যান এম শেফাক আহমেদ ও সদস্যরা। ঘটনাটি ঘটে যাওয়ার ৪ বছর অতিক্রান্ত হতে চললেও এ বিষয়ে আইনগত কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।

এ বিষয়ে আইডিআরএ’র বর্তমান সদস্য গকুল চাঁদ দাসের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘আমি ইন্স্যুরেন্স নিউজ বিডি’র সঙ্গে কথা বলতে চাই না।’

জানা যায়, চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে আইডিআরএ’র এই সাবেক চেয়ারম্যানের বেতন নির্ধারণ করা হয় ৮০ হাজার টাকা । তবে প্রতি মাসে প্রতিষ্ঠান থেকে গাড়িভাতা বাবদ তিনি তুলে নিয়েছেন ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা। সংস্থাটির সাবেক সদস্যদের বেতন ছিল ৭০ হাজার টাকা। আর গাড়িভাতা নিয়েছেন ১ লাখ ২০ হাজার টাকা।

২০১৪ সালে নেয়া এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয় ২০১১ সাল থেকে। সংস্থাটির সাবেক সদস্যরা হলেন- সুলতান-উল-আবেদীন মোল্লা, জুবের আহমেদ ও কুদ্দুস খান।

জানা গেছে, আইডিআরএ'র তৎকালীন চেয়ারম্যান এম শেফাক আহমেদ ও সংস্থাটির সদস্যরা নিজেদের মতো করে এই গাড়িভাতা ঠিক করলেও অর্থমন্ত্রণালয় বা সরকারের অনুমোদনের তোয়াক্কা করেনি। যদিও আইডিআরএ'র চেয়ারম্যান ও সদস্যদের বেতন কাঠামো ঠিক করে দেয় অর্থ মন্ত্রণালয়।

বিশ্লেষকরা বলছেন, পৃথিবীর কোথাও এ ধরনের ঘটনার নজির নেই। প্রতিষ্ঠানের অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে কোনো নিয়ম-কানুনের তোয়াক্কা করেননি সাবেক চেয়ারম্যান শেফাক আহমেদ। নতুন অফিসে না উঠেই আড়াই বছরে ভাড়া গুণেছেন ৫ কোটি টাকা। অফিসের সাজসজ্জায় খরচ করেছেন আরও ৫ কোটি টাকা।

এ ছাড়া আইটি সেকশন বসানোর নামে তিন বছর পর্যন্ত ১০ হাজার স্কয়ারফিটের একটি ফ্লোর নিয়ে ফেলে রাখেন। কিন্তু সেখানে কিছুই করা হয়নি। অথচ প্রতি মাসে ৭ লাখ টাকা হিসাবে ২ কোটি ৫২ লাখ টাকা গচ্ছা দিয়েছে এই নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

অভিযোগ রয়েছে, আইডিআরএ’র কর্মকর্তা নিয়োগ এবং বেসরকারি কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়োগের ক্ষেত্রেও সীমাহীন অনিয়ম করেছেন শেফাক আহমেদ। নিয়ম-কানুনের তোয়াক্কা না করে নিজের পছন্দের লোকদের নিয়োগ দিয়ে এ খাতে লুটপাটের রাজত্ব কায়েম করেছেন।

জানা গেছে, বীমাখাতে শৃংখলা ফেরাতে ২০১১ সালের ২৬ জানুয়ারি যাত্রা শুরু করে আইডিআরএ। পরদিন ২৭ জানুয়ারি থেকেই এ প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পান শেফাক আহমেদ। টানা দুই মেয়াদ সংস্থাটির চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি।