প্রাইমের রিইন্স্যুরেন্স রিকভারিতে ২৬ কোটি টাকার গড়মিল

নিজস্ব প্রতিবেদক: সাধারণ বীমা করপোরেশন (এসবিসি)’র কাছে ক্লেইম রিকভারি নিয়ে কোনো সঠিক তথ্য দিতে পারছে না প্রাইম ইন্স্যুরেন্স। একদিকে এসবিসি বলছে ক্লেইম রিকভারি বাবদ কোম্পানিটির পাওনা ১১ কোটি টাকা। অন্যদিকে প্রাইম ইন্স্যুরেন্সের দাবি এসবিসি’র কাছে তাদের পাওনা ২৫ কোটি টাকা। অথচ আর্থিক প্রতিবেদনে দেখানো হয়েছে ৩৭ কোটি টাকা।

এসবিসির তথ্য ও কোম্পানিটির আর্থিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, রিইন্স্যুরেন্সের ক্লেইম বাবদ ২৬ কোটি টাকার গড়মিল, আবার কোম্পানির মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তার বক্তব্য অনুসারে গড়মিল ১৩ কোটি টাকার। তাই প্রশ্ন উঠেছে, আসলেই এসবিসি’র কাছে প্রাইম ইন্স্যুরেন্সের পাওনা কত ?

নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, ম্যাক এন্টারপ্রাইজ নামের একাটি প্রতিষ্ঠানের পুনর্বীমা দাবি প্রাইম ইন্স্যুরেন্স উপস্থাপন করলেও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিল করতে পারেনি। ফলে তা নাকচ করে দেয় এসবিসি। কিন্তু এরপরও দাবিটি কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে বলে অভিযোগ আছে।

এ প্রসঙ্গে প্রাইম ইন্স্যুরেন্সের মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদী খানম বলেন, আমাদের দাবি পরিশোধে কালক্ষেপণ করছে এসবিসি। এরইমধ্যে আমরা বিষয়টি আইডিআরএ’কে লিখিতভাবে জানিয়েছি।

এসবিসির পুনর্বীমা বিভাগের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার জাকির হোসেন বলেন, কোম্পানিটি যা দাবি করছে তা চূড়ান্ত নয়। আমাদের হিসাব অনুযায়ী প্রাইম ইন্স্যুরেন্সের পুনর্বীমা দাবির পরিমাণ ১১ কোটি টাকার মতো।

সূত্র মতে, প্রাইম ইন্স্যুরেন্স যে পরিমাণ টাকা সাধারণ বীমা করপোরেশনের কাছে পায় বলে দাবি করছে সে টাকা ইতোমধ্যেই গ্রাহককে পরিশোধ করেছে কোম্পানিটি। এ অবস্থায় এসবিসি’র কাছে আইনগতভাবে টাকা আদায় করতে না পারলে নিজস্ব ফান্ড থেকে ক্লেইম বাবদ এ ব্যয় মেটাতে হবে কোম্পানিটিকে। এতে মোটা অংকের লোকসানে পড়বে প্রাইম ইন্স্যুরেন্স।

প্রাইম ইন্স্যুরেন্সের ২০১৮ সালের আর্থিক প্রতিবেদনের ব্যালান্সশীটের তথ্য অনুসারে, রিইন্স্যুরেন্স ক্লেইম বাবদ পাওনা দেখানো হয়েছে ৩৭ কোটি ৩৪ লাখ ৫ হাজার ২৩১ টাকা। তবে এর মধ্যে কত টাকা সাধারণ বীমা করপোরেশনের কাছে, আবার কত টাকা বিদেশি রিইন্স্যুরেন্সে কোম্পানির কাছে পাওনা তা পৃথকভাবে উল্লেখ করা হয় নাই।

এছাড়া, ব্যালান্সশীটের তথ্য অনুসারে, ২০১৪ সাল পর্যন্ত রিইন্স্যুরেন্স ক্লেইম রিকভারি বাবদ পাওনা ছিল ৯ কোটি ১৩ লাখ ৩৮ হাজার ১২২ টাকা। ২০১৭ সালের এই পাওনার পরিমাণ  বেড়ে দাঁড়ায় ২৫ কোটি ৩৭ লাখ ৫ হাজার ৭৭ টাকা। এই টাকার পুরোটাই পাওনা দেখানো হয় শুধু সাধারণ বীমা করপোরেশনের কাছে।

 আবার ২০১৮ সালের আর্থিক প্রতিবেদনে রেভিনিউ একাউন্টে ক্লেইম পেইড রিকভারেবল অন রিইন্স্যুরেন্স হেড এ দেখানো হয়েছে  ১৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা।