৩ কোম্পানির ব্যবসা হাতিয়ে নিয়েছে অপর ৪ কোম্পানি
নিজস্ব প্রতিবেদক: নন-লাইফ বীমা কোম্পানির চেয়ারম্যান ও মূখ্য নির্বাহীরা বলেছিলেন কেউ ১৫ শতাংশের বেশি কমিশন দিবে না। এক কোম্পানির ব্যবসাও করবে না অন্য কোম্পানি। অথচ নিজেদের দেয়া প্রতিশ্রুতি তারা নিজেরাই রক্ষা করতে পারছেন না। এরইমধ্যে এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্স, ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্স, ফেডারেল ইন্স্যুরেন্স ও সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্সের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে বেশি কমিশন ও প্রিমিয়াম হার কমিয়ে ব্যবসা হাতিয়ে নেয়ার। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, অবৈধ কমিশন বন্ধে ১৫ শতাংশ কমিশন বাস্তবায়নে গত জুনে ৬২ নং সার্কুলার জারি করে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) । এরপরই তা বাস্তবায়নে নন-লাইফ বীমা কোম্পানিগুলোর চেয়ারম্যান ও মূখ্য নির্বাহীদের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত একাধিক সভায় ১৫ শতাংশের বেশি কমিশন না দেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়। এ সময় সংবাদ সম্মেলন করেও বেশি কমিশন নো দেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, চট্টগ্রামে এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্সের জুবিলি রোড শাখা এবং ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্স ৩০ শতাংশ কমিশন দিয়ে ব্যবসা সংগ্রহ করছে। অথচ দীর্ঘদিন ধরে এসব ব্যবসা করে আসছিল অগ্রণী ইন্স্যুরেন্স। অতিরিক্ত কমিশন দিয়ে মেরিন কভার নোট ইস্যুর এ ঘটনায় অভিযুক্ত কোম্পানির বিরুদ্ধে দ্রুত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছে অগ্রণী ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি। অভিযোগটিতে স্বাক্ষর করেছেন কোম্পানির ডিএমডি ও সিএফও বাদল চন্দ্র রাজবংশী।
অন্যদিকে ফেডারেল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির মতিঝিল শাখা বিরুদ্ধে বাকী ও অতিরিক্ত কমিশন দিয়ে ব্যবসা সংগ্রহের অভিযোগ করেছে ইসলামী কমার্শিয়াল ইন্স্যুরেন্স। এ ঘটনায় ফেডারেল ইন্স্যুরেন্সের মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তাকে কয়েকবার নিষেধ করার পরও অতিরিক্ত কমিশন দিয়ে অবৈধভাবে ব্যবসা সংগ্রহ করছে বলে অভিযোগ করেছে বীমা কোম্পানিটি। অভিযোগটিতে স্বাক্ষর করেন কোম্পানির মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মীর নাজিম উদ্দিন আহমেদ।
তবে লিখিত এসব অভিযোগের সাথে কমিশন বেশি দেয়ার কোনো প্রমাণাদি দাখিল করা হয় নাই।
সোনার বাংলা ইন্স্যুরন্সের বিরুদ্ধে প্রিমিয়াম কম নিয়ে আন্ডার রেট-এ কভার নোট ইস্যুর অভিযোগ করেছে “ভু্ক্তভোগী কোম্পানির একজন উন্নয়ন কর্মকর্তা”। অভিযোগে বলা হয়েছে, সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্সের খাতুনগঞ্জ শাখা একটি মেরিন কভার নোটে প্রিমিয়াম রেট নেয়া হয়েছে ০.১৯%-১০%, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এই প্রিমিয়াম রেট হবে ০.৩০%-১০%।
ইসলামী কমার্শিয়াল ইন্স্যুরেন্সের মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মীর নাজিম উদ্দিন আহমেদ বলেন, আইডিআরএ’র কাছে অভিযোগ দায়েরের পর সংশ্লিষ্ট বীমা পলিসিগুলো বাতিল করার কথা জানিয়েছে ফেডারেল ইন্স্যুরেন্স। তবে এসব অভিযোগের বিষয়ে আইডিআরএ’র পক্ষ থেকে সরেজমিন তদন্ত ও কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন। তা না হলে অতিরিক্ত কমিশন দিয়ে অবৈধভাবে ব্যবসা সংগ্রহ বন্ধ হবে না।
অভিযোগের বিষয়ে ফেডারেল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা এএমএম মহিউদ্দিন চৌধুরী’র সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এক মিটিংয়ে আছেন উল্লেখ করে পরে কথা বলবেন বলে জানান।
এসব অভিযোগের বিষয়ে আইডিআরএ’র নির্বাহী পরিচালক (যুগ্ম সচিব) ও সার্ভিলেন্স কমিটির আহবায়ক খলিল আহমদ বলেন, কমিটি সংশোধনের পর অভিযোগের চিঠিগুলো এখনো আমার হাতে আসেনি। তাই এসব অভিযোগের বিষয়ে কিছু বলতে পারছি না। তবে আমরা এ ধরণের অবৈধ ব্যবসা করতে দেব না। খুব শিগগিরই আমরা অভিযোগগুলো নিয়ে বসবো, এরপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।