গ্রাহকের বীমা দাবি পরিশোধে জমি বিক্রি করছে পদ্মা ইসলামী লাইফ

নিজস্ব প্রতিবেদক: বীমা গ্রাহকের বকেয়া দাবি পরিশোধ করার জন্য কোম্পানির জায়গা-জমি বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স। এরইমধ্যে জমি বিক্রির অনুমোদন চেয়ে বীমা উন্নয়ন ও  নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)’র কাছে আবেদন জানিয়েছে বেসরকারি এই বীমা কোম্পানি। গত ১০ মার্চ কর্তৃপক্ষের কাছে এই আবেদন পাঠানো হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

তথ্য অনুসারে, ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মৃত্যুদাবি, মেয়াদোর্ত্তীর্ণ দাবি এবং অন্যান্য দাবি বাবদ পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের কাছে বীমা গ্রাহকদের বকেয়া পাওনা রয়েছে ৭০ কোটি ৭৭ লাখ ৫৬ হাজার ৩২৪ টাকা। এদিকে গেলো বছরে প্রিমিয়াম ও বিনিয়োগ আয় থেকে ব্যবস্থাপনা ব্যয় ও দাবি পরিশোধের পর কোম্পানিটির লাইফ ফান্ড দাঁড়িয়েছে ৫ কোটি ১১ লাখ ৭৫ হাজার ৩৩৮ টাকা।

এই অবস্থায় গ্রাহকদের বকেয়া বীমা দাবি পরিশোধ করতে ঢাকাসহ দেশের ৫টি জেলায় অবস্থিত ৬৭৬.৯৭৫ শতাংশ জমি বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে পদ্মা ইসলামী লাইফ। কোম্পানিটির ১৫৮তম এবং ১৬৫তম বোর্ড সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এর আগে ১৫৬তম বোর্ড সভার সিদ্ধান্ত অনুসারে শেয়ারহোল্ডারদের নিকট থেকে ৭০ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে বীমা দাবি পরিশোধ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে কোম্পানিটি।

সিদ্ধান্ত অনুসারে দেশের ৫টি জেলায় অবস্থিত কোম্পানির অলাভজনক ৬৭৬.৯৭৫ শতাংশ জায়গা-জমি বিক্রি করতে যাচ্ছে পদ্মা ইসলামী লাইফ। এর মধ্যে ঢাকার সভারে রয়েছে ৫ শতাংশ, বগুড়া সদরে ৬৭ শতাংশ, লক্ষ্মীপুর সদরে ৯২.৩৭৫ শতাংশ, কুমিল্লার দাউদকান্দিতে ৩৬৫ শতাংশ, সিলেট সদরে ১২৭.৬ শতাংশ এবং কুমিল্লায় রয়েছে আরো ২০ শতাংশ জমি।

২০১৮ সালের ডিসেম্বরে যোগ দেয়া পদ্মা ইসলামী লাইফের মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (সিসি) মো. মোরশেদ আলম সিদ্দিকী এ বিষয়ে ইন্স্যুরেন্সনিউজবিডি’কে বলেন, নতুন পরিচালকদের কাছে কোম্পানি হস্তান্তরের পর প্রিমিয়াম আয় ছাড়াও শেয়ারহোল্ডারদের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে বীমা গ্রাহকদের দাবি পরিশোধ করা হচ্ছে। একইসঙ্গে অফিস ব্যবস্থাপনা এবং কর্মকর্তাদের পেছনে ব্যয়ও কমিয়ে আনা হয়েছে। কোম্পানিতে আরো সংস্কারের কাজ চলছে।

চলতি বছরে ৮০ কোটি টাকা বীমা দাবি পরিশোধের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এই টাকার সংস্থান করতে প্রিমিয়াম আয় বাড়ানো ছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থানে কোম্পানির কেনা জমি বিক্রির অনুমোদন চেয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে এরইমধ্যে আবেদন করা হয়েছে। অনুমোদন পেলে এসব জমি বিক্রি করে বীমা গ্রাহকদের পাওনা পরিশোধ করা হবে। গ্রাহকদের দায় পরিশোধে কোম্পানি সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছে বলে জানান মোরশেদ আলম।