বীমা আইন সংশোধনে আরো সময়ের প্রয়োজন: আইডিআরএ

নিজস্ব প্রতিবেদক: বীমা আইন সংশোধনে আরো সময়ের প্রয়োজন বলে জানিয়েছে দেশের বীমাখাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইডিআরএ। সংস্থাটি বলছে, বীমা আইনের সংশোধন একটি বড় কাজ। বিস্তারিত আকারে এবং ভালোভাবে এর সংশোধন করতে হবে। এ জন্য সময় নিয়ে আইন সংশোধনের কাজ চলছে। তবে করোনা পরিস্থিতির কারণে কিছুটা পিছিয়ে গেছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।

তথ্য অনুসারে, ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে বীমাখাত উন্নয়নের লক্ষ্যে সার্বিক অবস্থা পর্যালোচনা করতে বীমা প্রতিষ্ঠানসমূহের চেয়ারম্যান এবং মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বৈঠকের সিদ্ধান্ত মোতাবেক বীমা আইন ২০১০ এর সাথে ব্যাংকিং আইন, মাইক্রো ক্রেডিট রেগুলেটরি আইন, কোম্পানি আইন এবং সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আইনসহ সংশ্লিষ্ট বিধি বিধানের সাংঘর্ষিক ধারাগুলো সংশোধনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

সিদ্ধান্ত অনুসারে, গত বছরের ২৪ নভেম্বর এক চিঠিতে বীমা কোম্পানিগুলোর চেয়ারম্যান ও মূখ্য নির্বাহীসহ ইন্স্যুরেন্স এসোসিয়েশন, ইন্স্যুরেন্স ফোরাম এবং ইন্স্যুরেন্স সার্ভেয়র্স এসোসিয়েশনের কাছে প্রস্তাবনা আহবান করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইডিআরএ। বীমাখাতের উন্নয়ন এবং বীমা গ্রাহকদের স্বার্থ সংরক্ষণে অন্যান্য আইনের সাথে সাংঘর্ষিক বিষয়সমূহ নিরসনের জন্য বীমা আইন ২০১০ এর প্রয়োজনীয় সংশোধনের প্রস্তাব পাঠাতে বলা হয়।

এরই ধারাবাহিকতায় বীমা আইন ২০১০ সংশোধনের প্রস্তাবনা পাঠাতে লাইফ ও নন-লাইফ বীমা কোম্পানিগুলোর মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তাদের চিঠি দেয় বীমা মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স এসোসিয়েশন (বিআইএ) । গত বছরের ১ ডিসেম্বর পাঠানো ওই চিঠির প্রেক্ষিতে ১৫টি লাইফ ও নন-লাইফ বীমা কোম্পানির পক্ষ থেকে বীমা আইন ২০১০ সংশোধনে প্রস্তাব পাঠানো হয়। এরপর ১২ ডিসেম্বর কোম্পানিগুলো থেকে প্রাপ্ত প্রস্তাবনা তুলে ধরে বিআইএ।

বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স এসোসিয়েশনের তথ্য মতে, ২০১৯ সালের ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের ১৫টি লাইফ ও নন-লাইফ বীমা কোম্পানির পাঠানো সংশোধনী প্রস্তাবে বীমা আইন ২০১০ এর বেশ কিছু ধারা ও তফসিল সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়েছে। সংশোধনের জন্য প্রস্তাবিত উল্লেখযোগ্য ধারাসমূহ হলো- ৬, ৭, ৮, ২১, ২৩, ২৭, ৩২, ৫৮, ৭১, ৭২, ৭৫, ৭৬, ৮০, ৮১, ১১৮, ১১৯,   ১২৪, ১২৫, ১২৬, ১২৮, ১৩০, ১৪০, ১৪৬, ১৪৮, ১৫৫ এবং তফসিল -১।   

এ বিষয়ে আইডিআরএ’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ড. এম মোশাররফ হোসেন বলেন, আইন সংশোধন একটি বড় কাজ। ভালোভাবে এবং বিস্তারিত আকারেই এটি সংশোধন করতে হবে। এখন ১০টি বিষয় সংশোধন করলাম, আবার ২/৩ বছর পর ৫টি সংশোধন করলাম- বিষয়টি এমন নয়। এ জন্য আমরা সময় নিয়ে কাজটি করছি। তবে করোনা পরিস্থিতির কারণে একটু পিছিয়ে গেছে। তবে কাজ চলছে।

ড. এম মোশাররফ হোসেন আরো বলেন, প্রাথমিকভাবে কাজটি বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ করছে। এরপর বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স এসোসিয়েশন ও বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স ফোরামসহ অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের নিয়ে কাজটি করা হবে। এরপর প্রস্তাবিত সংশোধনের খসড়াটি যাবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে। সেখান থেকে যাবে আইন মন্ত্রণালয়ে এবং সবশেষ উঠবে জাতীয় সংসদে।