জীবন বীমা পলিসিতে লিয়েন প্রয়োগ প্রসঙ্গে
এ কে এম এহসানুল হক:
বহির্বিশ্বে জীবন বীমা পলিসিতে লিয়েন (বিশেষ আরোপিত শর্ত) প্রয়োগের কথা শোনা যায় না। কিন্তু দুঃখজনকভাবে বাংলাদেশে জীবন বীমা কোম্পানি যত্রতত্র এর প্রয়োগ এবং অপব্যবহার করছে।
অনেক সময় পলিসি করার সময় কোন কিছু না বলে, না জানিয়ে চালাকি করে লিয়েন’র কাগজে গ্রাহকের স্বাক্ষর নিয়ে নেয় বীমা কর্মীরা।
জীবন বীমা কোম্পানি এই বিশেষ শর্তটি বিচার বিবেচনা না করে নিজেদের স্বার্থ রক্ষার্থে পলিসি গ্রহীতার লিখিত সম্মতি ছাড়া প্রয়োগ করছে যা বীমা আইনের পরিপন্থি এবং গর্হিত কাজ।
জীবন বীমা পলিসির প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে বীমা গ্রহীতার জীবনের ঝুঁকি আবরণ করা এবং তার মৃত্যুর পর পলিসিতে বর্ণিত বীমাকৃত টাকা কোন প্রকার কাঁট-ছাঁট ব্যতিরেকে তার পরিবারকে প্রদান করা।
অবৈধভাবে লিয়েন প্রয়োগের মাধ্যমে জীবন বীমা পলিসি ক্রয়ের প্রকৃত উদ্দেশ্য পরাজিত হচ্ছে এবং বীমা গ্রহীতার স্বার্থ ক্ষুণ্ন হচ্ছে।
দৃষ্টান্ত স্বরূপ দেশের এক বৃহৎ ইসলামী জীবন বীমা কোম্পানির ২২ বছরের এক তরুণ সুস্থ-সবল বীমা গ্রহিতার ২ কোটি টাকার পলিসিতে ৫০% লিয়েন দিয়েছে। পলিসির মেয়াদ শুরুর ২ বছরের মধ্যে বীমা গ্রহীতার মৃত্যু হলে এই লিয়েন কার্যকরা করা হবে।
বীমা গ্রহীতার স্বার্থ রক্ষার্থে বীমা কর্তৃপক্ষের এ ব্যাপারটি বিশেষভাবে তদন্ত এবং দোষী কোম্পানির বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।
লেখক: এ কে এম এহসানুল হক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রিসহ মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেছেন। প্রায় চার দশক দুবাইয়ে অবস্থানকালে তিনি আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন বিভিন্ন বীমা কোম্পানিতে চাকরি করেছেন।
এ সময় তিনি লন্ডন থেকে ফেলো অফ দি চাটার্ড ইন্স্যুরেন্স ইন্সটিটিউট (এফসিআইআই), এসোসিয়েটস অফ দি ইন্সটিটিউট অফ রিস্ক ম্যানেজমেন্ট (এআইআরএম) এবং এসোসিয়েট অফ দি চাটার্ড ইন্সটিটিউট অফ আরবিট্রেটরস (এসিআইআরবি) ডিগ্রি অর্জন করেন।
ইন্স্যুরেন্সের ওপর এ পর্যন্ত লেখকের অনেকগুলো বই প্রকাশিত হয়েছে, যা দেশে এবং বিদেশে সমাদৃত। পেশায় লেখক একজন চাটার্ড ইন্স্যুরার। বর্তমানে তিনি সরকারী ও বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতায় নিয়োজিত।
ইন্স্যুরেন্সনিউজবিডি'র পাঠকদের প্রয়োজনের দিকে লক্ষ্য রেখে বীমার গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে লিখেছেন এ কে এম এহসানুল হক।