মুনাফাজনিত ক্ষতি বা পরিণতিজনিত বীমা

এ কে এম এহসানুল হক, এফসিআইআই: মুনাফাজনিত ক্ষতি বা পরিণতিজনিত বীমা ( Loss of Profit or Consequential Loss) আর্থিক বীমা (Pecuniary Insurance)’র অন্তর্ভুক্ত। অগ্নি বীমা সাধারণত মুনাফাজনিত বা পরিণতিজনিত ক্ষতি বহন করে না। এটি কেবল সম্পত্তির আসল বা প্রকৃত ক্ষতিপূরণ প্রদান করে। অগ্নিকাণ্ডের ফলে সম্পত্তির প্রকৃত ক্ষতি ছাড়াও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নানা ধরনের ক্ষতির সম্মুখিন হয়ে থাকে যার মধ্যে মুনাফাজনিত ক্ষতি একটি প্রধান কারণ।

উদাহরণস্বরূপ:

১। নতুন দালান বা ফ্যাক্টরি ভাড়া নেয়া।

২। কর্মচারিদের বেতন প্রদান।

৩। ব্যাংক সুধ বা ঋণ পরিশোধ।

৪। বিভিন্ন বিল পরিশোধ, যেমন- পানি, বিদ্যুৎ, টেলিফোন, গ্যাস ইত্যাদি।

অগ্নিকাণ্ডের ফলে সম্পত্তি সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। ক্ষতিগ্রস্ত সম্পত্তি সম্পূর্ণভাবে পুনঃপ্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত বা ব্যবসা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে না আসা পর্যন্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে উপরে বর্ণিত খরচ বহন করতে হয়, যা অর্জিত মুনাফার উপর আঘাত হানতে পারে বা বিরুপ প্রভাব ফেলতে পারে। এই সকল কারণে বিশেষ করে অপেক্ষাকৃত বৃহৎ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং শিল্প প্রতিষ্ঠানের বেলায় মুনাফাজনিত বীমা অত্যন্ত প্রয়োজন।

মুনাফাজনিত বা পরিণতিজনিত ক্ষতির বীমা সাধারণত অগ্নি বীমার সাথে পৃথক বা স্বতন্ত্রভাবে অবলিখন করা হয়ে থাকে। অগ্নি বীমা ছাড়া এই বীমা এককভাবে অবলিখন করা সম্ভব নয়। অগ্নি বীমায় সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতির দাবি গ্রহণযোগ্য হলে কেবল তখনই এই বীমা কার্যকর হয়, অন্যথায় নয়।

এই বীমার মূল উপাদান:

১। খরচ বাদ না দিয়ে মুনাফা (Gross Profit- GP)

২। অতিরিক্ত কাজের জন্য বাড়তি খরচ (Increase in cost of working- ICOW)

এই বীমার বহির্ভূত ঝুঁকিসমূহ:

১। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আদেশক্রমে সম্পত্তি জ্বালানো বা পোড়ানো।

২। ভূগর্ভস্থ আগুনের কারণে সম্পত্তির ক্ষতি (Subterranean Fire) ।

৩। স্বাভাবিক কারণে ঝোপ-জঙ্গলে আগুণ লাগার কারণে সম্পত্তির ক্ষতি সাধন বা আগুনের সাহায্যে ভূমি পরিস্কার করা (Bush Fire) ।

৪। সম্পত্তির নিজস্ব গাঁজানোর প্রক্রিয়া (Own Fermentation) ।

৫। স্বাভাবিক তাপে সম্পত্তির স্বতস্ফূর্ত দহন ক্রিয়া (Spontaneous Combustion) ।

৬। যুদ্ধ এবং যুদ্ধজনিত করণে সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি (War) ।

৭। পারমাণবিক বিস্ফোরণ (Nuclear Explosion) ।