সম্ভাব্য সর্বোচ্চ ক্ষতির পরিমাণ নিরুপন পদ্ধতি প্রসঙ্গে

এ কে এম এহসানুল হক, এফসিআইআই: বীমা উন্নয়ন এবং নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)’র নির্দেশ অনুযায়ী সম্পত্তি বীমার বেলায় সম্পত্তির মূল্য ৫ কোটি টাকার অধিক হলে পেশাগত সার্ভেয়ার দ্বারা সেই সম্পত্তির প্রি-ইন্সপেকশন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

এসোসিয়েশন অব ব্রিটিশ ইন্স্যুরার (এবিআই) সম্ভাব্য সর্বোচ্চ ক্ষতি (Probable Maximum Loss- PML) নিরুপনের ক্ষেত্রে একটি পদ্ধতির প্রচলন করেছে যা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত এবং গ্রহণযোগ্য।

সম্ভাব্য সর্বোচ্চ ক্ষতি নিরুপন একটি রক্ষণশীল পদ্ধতি। এখানে সার্ভেয়ারের অতি উৎসাহিত হওয়ার কোন সুযোগ নাই। এ পদ্ধতিতে সম্পত্তিস্থলে অগ্নি নির্ণয় (Fire Detection) এবং অগ্নি নির্বাপন (Fire Protection) ইত্যাদি সুবিধা থাকলেও তা বিবেচনা বা গণনায় নেয়া হয় না।

ধরা যাক, একই কম্পাউন্ডে দুই বা ততোধিক বিল্ডিং যেমন ফ্যাক্টরি বিল্ডিং, অফিস বিল্ডিং এবং গোডাউন বিল্ডিং ইত্যাদি অবস্থিত।

এই পদ্ধতিতে সম্ভাব্য সর্বোচ্চ ক্ষতির পরিমাণ নিরুপনের জন্য একটি বিল্ডিং থেকে অন্য একটি বিল্ডিং এর দূরত্ব নূন্যতমপক্ষে ২৫ মিটার অর্থাৎ ৭৫ ফিট হতে হবে।  শুধু এই দূরত্ব থাকাটাই যথেষ্ট নয়। এই খালি বা ফাঁকা জায়গায় কোন প্রকার গাছপালা, ঝোপঝাড় এবং দাহ্যপদার্থ ইত্যাদি অবস্থিত বা উপস্থিতি থাকা চলবে না।  উপরে বর্ণিত শর্ত পূরণ সম্ভব না হলে এই ঝুঁকির বেলায় সম্ভাব্য সর্বোচ্চ ক্ষতির পরিমাণ গিয়ে দাঁড়ায় ১০০ শতাংশ।

উপরে বর্ণিত শর্ত শতভাগ পূরণ সাপেক্ষে নিম্নের দৃষ্টান্ত থেকে সম্ভাব্য সর্বোচ্চ ক্ষতির পরিমাণ নিরুপন করা যেতে পারে।

ধরা যাক, সম্পত্তির সর্বোচ্চ মূল্য ১০০ কোটি টাকা, যা সম্পত্তির প্রকারভেদে নিম্নরুপ বন্টন করা যেতে পারে।

১) ফ্যাক্টরি বিল্ডিং: ৬৫ কোটি টাকা।

২) গোডাউন বিল্ডিং: ২৫ কোটি টাকা।

৩) অফিস বিল্ডিং: ১০ কোটি টাকা।

সম্ভাব্য সর্বোচ্চ ক্ষতি নিরুপণের জন্য এক্ষেত্রে ফ্যাক্টরি বিল্ডিংকে ‘টার্গেট রিস্ক’ হিসেবে চিহ্নিত করতে হবে।

অর্থাৎ উপরের দৃষ্টান্তে এই সম্পত্তির বেলায় সম্ভাব্য সর্বোচ্চ ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় ৬৫ শতাংশ বা ৬৫ কোটি টাকা।

প্রি-ইন্সপেকশন সার্ভেয়ারদের এই বিষয়ে অত্যন্ত সাবধানতা এবং সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে অন্যথায় এর প্রধান উদ্দেশ্য (ঝুঁকির পরিমাণ নিরুপন করা) ব্যর্থতায় পর্যবেশিত হতে বাধ্য।