ভবনের অগ্নি বীমা নবায়নে বীমা অংক নির্ধারণ প্রসঙ্গে

এ কে এম এহসানুল হক, এফসিআইআই: বীমা নীতিমালার (Doctrine of Insurance) মধ্যে ইনডেমনিটি (Indemnity) একটি অন্যতম প্রধান নীতি।

দাবির বেলায় বীমা কোম্পানি সাধারণত নিম্নে বর্ণিত চারটি পদ্ধতির যেকোন একটি পদ্ধতির মাধ্যমে ক্ষতিপূরণ দিয়ে থাকে।

১। নগদ অর্থায়ন (Cash) ।

২। মেরামত (Repair) ।

৩। প্রতিস্থাপন (Replacement) ।

৪। পুনঃপ্রতিষ্ঠা (Reinstatement) ।

অগ্নি বীমার বেলায় পুনঃপ্রতিষ্ঠা (Reinstatement) বলতে বুঝায়- যদি কোন ভবন/ ইমারত (বিল্ডিং) সামগ্রিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত বা সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে যায় তবে তার জায়গায় বা পরিবর্তে প্রতিরূপ (Same Specification) একই নমুনার (Pattern) নতুন বিল্ডিং নির্মাণ বা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা। বীমা কোম্পানি সচরাচর পুনঃপ্রতিষ্ঠা শর্তের মাধ্যমে এই কাজটি সম্পাদন করে থাকে।

পুনঃপ্রতিষ্ঠার (Reinstatement) শর্ত অনুযায়ী বীমা গ্রহীতাকে প্রতিবছর অগ্নি বীমা নবায়ন করার সময় বিল্ডিং এর বর্তমান নির্মাণ মূল্যের ওপর ভিত্তি করে বীমার মূল্য নির্ধারণ করতে হবে।

দৃষ্টান্তস্বরূপ দশ বছর পূর্বে এক ইউনিট বিল্ডিং এর নির্মাণ খরচ ধরা যাক দশ কোটি টাকা। দশ বছর পরও কি এই বিল্ডিংটির নির্মাণ খরচ একই থাকবে?

অগ্নি বীমা নবায়নের বেলায় বিল্ডিং ইমারত পুননির্মাণ বা পুনঃপ্রতিষ্ঠা ক্ষেত্রে যে সমস্ত উপাদানসমূহ বিশেষ বিবেচনায় নিতে হবে তা হচ্ছে মুদ্রাস্ফীতির কারণে (Inflation) নির্মাণ কাজে ব্যবহৃত সামগ্রী বা সরঞ্জাম যেমন- রড, সিমেন্ট, ইট, বালু, ইলেকট্রিক্যাল ফিটিংস, স্যানিটারি ফিটিংস, লেবার খরচ ইত্যাদি।

১০ বছর পূর্বে যে বিল্ডিং বা ইমারত নির্মাণ খরচ করতে ব্যয় হয়েছিল ১০ কোটি টাকা, অগ্নিকাণ্ডের ফলে বিল্ডিংটি সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস (Total Loss) বা সামগ্রিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলে বর্তমান বাজার মূল্যে আলোচিত এই ইউনিটটি পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নাও হতে পারে।

ধরা যাক বর্তমানে বাজার মূল্য অনুযায়ী বিল্ডিংটির পুনর্নির্মাণ বা পুনঃপ্রতিষ্ঠার খরচ বা ব্যয় ১২ কোটি টাকা। এই পরিস্থিতিতে বীমা গ্রহীতার বীমা পলিসি নবায়ন করার সময় ১০ কোটি টাকার পরিবর্তে ১২ কোটি টাকার বীমা করতে হবে। তা না হলে এই সম্পত্তি আন্ডার ইন্সুরেন্স হিসেবে বিবেচিত হবে।