পুনর্বীমা দাবি পরিশোধে এসবিসিকে আইডিআরএ’র চাপ সৃষ্টি প্রসঙ্গে
এ কে এম এহসানুল হক, এফসিআইআই: সম্প্রতি এই অনলাইন পোর্টালে ‘আইন লঙ্ঘন করে বীমা, দাবি পরিশোধে আইডিআরএ’র নির্দেশ’ শীর্ষক সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে। সংবাদটি আমার নজর কেড়েছে এবং সে বিষয়েই আমার আজকের এই লেখা।
সংবাদের ভাষ্য মতে, কন্টিনেন্টাল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি হাল এবং যন্ত্রপাতির (Hull and Machinery) টোটাল লস (Total Loss) বীমার বিপরীতে ‘এমভি আলোর মিছিল’ নামক এক পণ্যবাহী জাহাজ অবলিখন করে।
কন্টিনেন্টাল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি ২০১৭ সালের ৫ নভেম্বর বীমাপত্র নং CIL/PS/MH/P-0081 12017 ইস্যুর মাধ্যমে এ বীমা গ্রহণ করে।
বীমা অঙ্কের মোট টাকার পরিমাণ ৫ কোটি, যার মধ্যে সাধারণ বীমা করপোরেশনের পুনর্বীমার অংশের পরিমাণ ৪ কোটি টাকা।
দুর্ভাগ্যজনকভাবে বীমাপত্র ইস্যুর দিনই অর্থাৎ ২০১৭ সালের ৫ নভেম্বর এক দুর্ঘটনায় জাহাজটি Grounded হয়ে যায় এবং তার দুই দিন পর অর্থাৎ ৭ নভেম্বর ২০১৭ তারিখে ডুবে যায়।
বীমা কোম্পানি দুর্ঘটনার প্রায় এক সপ্তাহ পর ১৩ নভেম্বর ২০১৭ তারিখে সাধারণ বীমা করপোরেশনকে ব্যাপারটি অবহিত করে।
তথ্য মতে, বীমা পলিসির প্রিমিয়াম বীমাকারীর হিসাবে জমা হয়েছে (ক্রেডিট) যথাক্রমে ৬ নভেম্বর ২০১৭ এবং ৭ নভেম্বর ২০১৭ তারিখে।
বীমা আইনের ১৮(৩) ধারা অনুযায়ী প্রিমিয়াম বীমাকারীর হিসাবে জমা হওয়ার তারিখ থেকে বীমা কভারেজ শুরু হয়।
আলোচ্য ক্ষেত্রে দুর্ঘটনা সংঘটিত হয় ৫ নভেম্বর ২০১৭ তারিখে অর্থাৎ বীমা কভারেজ শুরুর পূর্বেই।
বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ সমগ্র বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে অবহিত হওয়া সত্ত্বেও রহস্যজনকভাবে কোন প্রকার আইনগত কারণ দর্শানো ছাড়া ক্রমাগতভাবে সাধারণ বীমা করপোরেশনকে পুনর্বীমা দাবি পরিশোধের জন্য চাপ সৃষ্টি করে চলেছে।
এখন স্বভাবগতই প্রশ্ন জাগে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ জেনেশুনে কিভাবে বীমা আইন ভঙ্গ করার ব্যাপারে উৎসাহ প্রদান করতে পারে, তা মোটেই বোধগম্য নয়।
বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের এই ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীন এবং ক্ষমতার অপব্যবহার সংশ্লিষ্ট মহলে রীতিমতো বিস্ময়ের সৃষ্টি করেছে।
এমনটাই যদি নিয়ন্ত্রক সংস্থার ভূমিকা হয় তাহলে বীমা খাত এবং এর সাথে সংশ্লিষ্ট সবাই তাদের ওপর আস্থা হারাতে বাধ্য।
আশা করি বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) স্বচ্ছতার খাতিরে এ ব্যাপারে তাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করবে।