বীমা আইন ২০১০ সংশোধনী নিয়ে মতবিনিময় সভা

সংস্কারের জন্য আইন সংশোধন নয়, প্রয়োজন বিদ্যমান আইনের সঠিক প্রয়োগ

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিদ্যমান আইনের সঠিক প্রয়োগ হলে বীমা খাতের উন্নয়ন ও সংস্কার সম্ভব। বীমা কোম্পানিতে নিরীক্ষা, তদন্ত, প্রশাসক নিয়োগ, আইন লঙ্ঘন ও অর্থ আত্মসাতে দোষী ব্যক্তিদের অপসারণ ও আত্মসাতকৃত অর্থ উদ্ধারের বিধান রাখা হয়েছে বীমা আইন- ২০১০ –এ। ফলে বীমা খাত সংস্কারের জন্য প্রয়োজন বীমা আইন ২০১০ এর সঠিক প্রয়োগ। আর এ জন্য বীমা আইনের সংশোধন নয়, আইনের যথাযথ বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন নিয়ন্ত্রক সংস্থার সদিচ্ছা।

শনিবার (২২ নভেম্বর) রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত বীমা আইন- ২০১০ সংশোধনী শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এসব মন্তব্য করেন। ইন্স্যুরেন্স নিউজ বিডি এ মতবিনিময় সভা আয়োজন করে।

আলোচনায় বক্তারা বলেন, বীমা আইনের সংশোধনীতে তফসিল-১ তুলে দেয়াসহ কোম্পানির চেয়ারম্যান নিয়োগ, অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক, সিএফও এবং কোম্পানি সেক্রেটারি নিয়োগ অনুমোদনের ক্ষমতা নিয়ন্ত্রক সংস্থায় দেয়া হলে কোম্পানি পরিচালনায় বিরুপ প্রভাব পড়বে। এতে পরিচালক বা নির্বাচিত চেয়ারম্যান- তাদের সাংবিধানিক অধিকার ক্ষুণ্নের অযুহাতে আদালতের দ্বারস্থ হতে পারেন। যা সংস্কারের পরিবর্তে নতুন সংকট তৈরি করবে।

বক্তারা আরো বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর বীমা খাত সংস্কারের কোন উদ্যোগ নিতে পারেনি আইডিআরএ। তারা বীমা আইন ২০১০ এর সংশোধনী ছাড়া নিয়ন্ত্রণ ও সংস্কারে কোন ভূমিকা রাখতে পারেনি। লাইফ বীমা খাতের যেসব কোম্পানির তহবিল তছরুফ হয়েছে তা উদ্ধার, গ্রাহকদের বকেয়া দাবি পরিশোধ, তহবিল তছরুফে জড়িতদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনী ব্যবস্থা গ্রহণে কোন পদক্ষেপ নেয়নি। নন-লাইফ বীমা খাতেও অবৈধ কমিশন বন্ধ ও দক্ষ জনবল তৈরিতেও কোন ভূমিকা রাখতে পারেনি।

মতবিনিময় সভার বক্তারা বলেন, বীমা আইন ২০১০ প্রণীত হয় ২০১০ সালে। এর মধ্যেই কি কারণে সংশোধনীর প্রয়োজন হলো- সেটিও স্পষ্ট নয়। নিয়ন্ত্রক সংস্থা গঠিত হয় ২০১০ সালে। অথচ নিয়ন্ত্রক সংস্থা এখনো চলছে প্রেষণে আসা সরকারি কর্মকর্তাদের দ্বারা। যাদের বেশিরভাগের-ই বীমা বিষয়ক অভিজ্ঞতা নেই। ফলে বীমা আইন-২০১০ এর সঠিক প্রয়োগ হয়েছে কিনা- আইন সংশোধনের আগে সে বিষয়টি আরো ব্যাপকভাবে পর্যালোচনা প্রয়োজন।

বক্তারা বলেন, বীমা কোম্পানি তদন্তের জন্য বীমা আইন ২০১০ এর ৪৮ ধারা, বিশেষ নিরীক্ষার জন্য ২৯ ধারা, প্রশাসক নিয়োগের জন্য ৯৫ ধারা, চেয়ারম্যান, পরিচালক ও মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তার গ্রাহক স্বার্থ ক্ষুণ্ন করার অপরাধে অপসারণ করার বিধান ৫০ ধারায় এবং বীমা কোম্পানির আত্মসাতকৃত অর্থ পুনরুদ্ধারের জন্য ১৩৫ ও ১৩৬ ধারায় স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। এসব বিধানের সঠিক প্রয়োগ হলে বীমা খাতের বিদ্যমান সংকট নিরসন করা সম্ভব। তাই বীমা আইন ২০১০ সংশোধনীর এই প্রস্তাবনা আরো ব্যাপক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার প্রস্তাবও করেন বক্তারা।

মতবিনিময় সভায় অংশ নেন- বিআইপিডি’র মহাসচিব কাজী মো. মোরতুজা আলী, অর্থকাগজ পত্রিকার সম্পাদক প্রণব মজুমদার, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি’র সভাপতি গাজী আনোয়ারসহ অন্যান্যরা। মতবিনিময় সভা সঞ্চালনা করেন ইন্স্যুরেন্স নিউজ বিডি’র সম্পাদক ও প্রকাশক মোস্তাফিজুর রহমান টুংকু।

সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আইডিআরএ’র সাবেক সদস্য (লাইফ) সুলতান-উল-আবেদীন মোল্লা।

মূল প্রবন্ধে সুলতান-উল-আবেদীন মোল্লা বলেন, বীমা আইন-২০১০ -এ ১৬০টি ধারা আছে এবং প্রতিটি ধারায় কম-বেশি একাধিক উপধারা আছে। আইডিআরএ কর্তৃক আনিত সংশোধনী প্রস্তাবে মূল ১৬০টি ধারার মধ্যে ৯৯টি মূল ধারা অপরিবর্তিত রেখেছে। কিন্তু সেগুলোর উপধারাগুলো পরিবর্তনের প্রস্তাব করা হয়েছে।

বাকী ৬১টি ধারার উপধারাসহ তাদের পরিবর্তন, পরিমার্জন, সংযোজন ও বিয়োজনের সংশোধনী প্রস্তাব করা হয়েছে। মূল ১৬০টি ধারার মধ্যে- কয়েকটি বিলুপ্ত বা বাতিলের প্রস্তাব করেছে। অধিকন্তু ৬৪ নতুন ধারা, উপ-ধারাসহ সংশোধনী প্রস্তাব করা হয়েছে।

বীমা আইনের সংশোধনীর বিষয়ে তিনি বলেন, বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ শুধু যে বীমা শিল্পকে নিয়ন্ত্রণ বা কন্ট্রোল করার জন্য তৈরী করা হয়েছে তা কিন্তু নয়। যেহেতু বীমা খাত অনুন্নত এবং অবহেলিত, জনগণ বীমা সম্পর্কে সচেতন নয় এবং বীমার জ্ঞান নেই- তাই এই শিল্পের বিকাশে নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি উন্নয়নের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু প্রস্তাবিত সংশোধনী আইনে বীমা উন্নয়নে কোন ধরনের প্রস্তাব করা হয় নাই।

যে দেশের বীমা শিল্প যত উন্নত সে দেশের অর্থনীতি ততো সমৃদ্ধ। সেহেতু বীমাশিল্পকে উন্নত করতে হবে। বীমার সুফল প্রতিটি নাগরিক যাতে পেতে পারে সেজন্য বীমাকে সর্বজনীন করতে হবে এবং এটাকে রিটেইল পর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে। এই কর্মকান্ডে বীমাকারীর যে ভূমিকা আছে সাথে সাথে নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষেরও ভূমিকা থাকতে হবে। আইন প্রণিত হতে হবে জনবান্ধব। প্রস্তাবিত আইনে পলিসিহোল্ডারদের স্বার্থের কথা উল্লেখ করলেও প্রকৃতপক্ষে কর্তৃপক্ষ আরও ক্ষমতায়নের প্রস্তাব করা হয়েছে।

ক্ষমতার যদি অপব্যবহার করা হয় তাহলে বীমাশিল্প আরো ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং এই শিল্পে কর্মরত ব্যক্তিবর্গের মধ্যে অসাধু ব্যক্তিগণ কর্তৃপক্ষের সাথে সমঝোতা করে জনগণের অর্থ আরও লুটপাট করবে এবং এক সময় মানুষ আর বীমা পন্য কিনতে আগ্রহী হবে না।

বীমা আইন ২০১০-এ সংশোধনী প্রস্তাবনার বিষয়ে তিনি বলেন, বীমা আইন-২০১০ বীমাশিল্প নিয়ন্ত্রণে যথেষ্ট নয়। কর্তৃপক্ষ প্রস্তাবিত আইনে আরও ক্ষমতা বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছে। ব্যাংকিং আইন-১৯৯১ অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংক, ব্যাংক নিয়ন্ত্রণে যে ক্ষমতা ব্যবহার করে, বীমাশিল্প নিয়ন্ত্রণে কর্তৃপক্ষ একইরূপ ক্ষমতা ধারণ করতে চায়। কর্তৃপক্ষ নন-লাইফ বীমা কোম্পানির চেয়ে লাইফ বীমা কোম্পানিকে বেশি বেশি নিয়ন্ত্রণ করতে চায়। যদিও পলিসিগ্রহীতার স্বার্থ সংরক্ষণের কথা বিবেচনা করে পরিবর্তন চাচ্ছে। কিন্তু বীমা গ্রহীতার দাবি পরিশোধে ৯০ দিনের বিধান অপরিবর্তিত রেখেছে।

বীমা আইন অমান্যকারীদের ক্ষেত্রে ৫ লাখ টাকা থেকে ১ কোটি টাকা জরিমানার প্রস্তাব করেছে। বীমা আইন-২০১০ এর মূল ধারার বিপরীতে যে সকল বিধি-প্রবিধান করা হয়েছে বা করতে হবে সেগুলোকে বাদ দেয়া হয়েছে। বীমা আইন-২০১০ এর তফসিল-১ বাদ দিয়েছে। তদপরিবর্তে কর্তৃপক্ষের সময় সময় নির্দেশনা দিবে তার প্রস্তাব করেছে।

বীমা কোম্পানির চেয়ারম্যান, পরিচালকদের নিয়োগ অনুমোদন ও তাদের সর্বোচ্চ সময়কাল ৬ বছর প্রস্তাব করেছে। বীমা কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের কনস্টিটিউশন পরিবর্তন করেছে। উদ্যোক্তা ৭ জন, শেয়ারহোল্ডার ৭ জন ও নিরপেক্ষ পরিচালক ৭ জনের প্রস্তাব করা হয়েছে।

কোম্পানির ৫% শেয়ারহোল্ডারকে ‘উল্লেখযোগ্য শেয়ারহোল্ডার’ ঘোষণা করেছে। পরিবারের সংজ্ঞায় জামাতা এবং পুত্রবধূ সংযোজন করেছে। সিনিয়র ম্যানেজমেন্ট টিম অর্থ বীমাকারীর চেয়ারম্যান, পরিচালক, মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা বা ব্যবস্থাপনা পরিচালক, অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক, প্রধান অর্থ কর্মকর্তা ও কোম্পানি সেক্রেটারিকে বোঝানো হয়েছে এবং তাদের নিয়োগে কর্তৃপক্ষের অনুমোদন লাগবে বলে প্রস্তাব করা হয়েছে।

যেসকল আইনের ধারা ইতোমধ্যেই বিধি বা প্রবিধিতে আছে সেগুলোকে মূল আইনে সংযোজনের প্রস্তাব করেছে। উল্লেখযোগ্য শেয়ারহোল্ডারদের শেয়ার হস্তান্তরে কর্তৃপক্ষের অনুমোদন লাগবে- প্রস্তাব করেছে।

কাজী মো. মোরতুজা আলী বলেন, সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। যেসব সংজ্ঞা দেয়া হয়েছে তা স্পষ্ট নয়। তাই সংজ্ঞা যদি বুঝতে না পারা যায় তাহলে বাস্তবায়ন সম্ভব হবে না। যেসব সংশোধন প্রস্তাব দেয়া হয়েছে তা উন্নয়ন বান্ধব না, নিয়ন্ত্রণ বান্ধব।

আমি যতটুকু বুঝতে পেরেছি, উন্নয়নের গুরুত্ব কম দেয়া হয়েছে, নিয়ন্ত্রণকে গুরুত্ব বেশি দেয়া হয়েছে। যদিও বলা হচ্ছে, গ্রাহকের স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য এই আইনের প্রবর্তন।

আমাদের কাছে যে প্রশ্নটি এসেছে, বর্তমান বীমা খাত যে সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে এই আইন সংশোধন করা হলে বিদ্যমান সমস্যার কতটুকু প্রতিকার সম্ভব?

তিনি আরো বলেন, আইডিআরএ প্রতিষ্ঠার আগে কোম্পানির সংখ্যা কম ছিল, ব্যবসা বেশি ছিল। আইডিআরএ প্রতিষ্ঠার পর কোম্পানির সংখ্যা বেড়ে গেলেও ব্যবসা কমে গেল। যেখানে লাইফ বীমা খাতে এক কোটি পলিসিহোল্ডার ছিল, সেটি এখন ৫০ লাখে নেমে এসেছে।

তাহলে ২০১০ সালে নতুন বীমা আইন হলো, আইডিআরএ গঠন হলো কিন্তু আমরা উন্নয়ন করতে পারলাম না। আর অধিক নিয়ন্ত্রণ করা হলে তা নিবর্তন হতে পারে, যা উন্নয়নে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।

কাজী মো. মোরতুজা আলী বলেন, সংশোধনী আইনে ‘অনুসন্ধানকারী’ একটি নতুন শব্দ আনা হয়েছে এবং তার অনেক যোগ্যতার কথা বলা হয়েছে কিন্তু ঝুঁকি বিজ্ঞান, রিস্ক ম্যানেজমেন্টের প্রতি গুরুত্ব দেয়া হয়নি।

পরিবারের সংজ্ঞায় নাতি-পুতি পর্যন্ত অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এইটা পরিবারের ব্যাপক সংজ্ঞা। এটা না করে যে বিধান রয়েছে সেটাই সুবিধাজনক। ২০১০ সাল বীমা আইন প্রণয়ন করা হয়েছিল ১০ বছর ধরে।

তিনি বলেন, তদন্ত, অনুসন্ধান, বিশেষ নিরীক্ষার পরিবর্তে আইডিআরএ থেকেই পরিচালক বা নিরপেক্ষ পরিচালক বা যে নামেই ডাকা হোক না কেন- বীমা কোম্পানিতে নিয়োগ দিতে পারেন, যাতে তিনি জবাবদিহী করতে পারেন।

সংশোধনী প্রস্তাবনায় মাইক্রোক্রেডিট প্রতিষ্ঠানগুলোকেও বীমা ব্যবসা করতে উৎসাহিত করা হয়েছে, যা বীমা ব্যবসার ওপর বিরুপ প্রভাব পরবে। কেননা বীমা কোম্পানি ছাড়া অন্য কোন প্রতিষ্ঠান বীমা ব্যবসা করতে পারে না। ইন্স্যুরটেক কোম্পানির একটা সংজ্ঞা দেয়া হয়েছে কিন্তু তার গঠন পদ্ধতি ও পরিচালনা পদ্ধতি কি হবে তা উল্লেখ করা হয়নি। করপোরেট এজেন্টের সংজ্ঞা দেয়া হয়েছে কিন্তু করপোরেট এজেন্ট নিয়োগ করা হয়নি। ব্যাংকাস্যুরেন্সে ব্যাংক করপোরেট এজেন্ট হিসেবে কাজ করছে।

সংশোধনী প্রস্তাবনায় টপ ম্যানেজমেন্টের কথা বলা হয়েছে, যেখানে বলা হচ্ছে- সিএফও পর্যন্ত নিয়োগ অনুমোদন করবে আইডিআরএ। কিন্তু তাদের যোগ্যতা বা অন্যান্য শর্তাবলী কি হবে তা স্পষ্ট নয়। কিন্তু আমাদের প্রশ্ন হচ্ছে, প্রতিটি কোম্পানিকে কেন বিভাগীয় কর্মকর্তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হলো না।

শেয়ারহোল্ডার ফান্ড ও পলিসিহোল্ডারের ফান্ডের কথা বীমা আইন ২০১০ এ বলা হয়েছে। কিন্তু আইন সংশোধনী প্রস্তাবে তা নতুন সংশোধন কেন বলা হলো তা বোধগম্য নয়। আমাদের প্রশ্ন- ২০১০ থেকে ২০২৫ সাল এই পনের বছরেও কেন পলিসিহোল্ডার ফান্ড গঠন করা হলো না।

সংশোধনী আইনের ধারা ৩৯(গ)-তে বলা হয়েছে, ‘চেয়ারম্যান যদি যৌক্তিক মনে করেন’- কিন্তু চেয়ারম্যানের যৌক্তিকতার ভিত্তি কি তা স্পষ্ট করা হয়নি। বর্তমান চেয়ারম্যান যা যৌক্তিক মনে করছেন, পরবর্তী চেয়ারম্যান তা যৌক্তিক নাও মনে করতে পারেন। তাই এটি চেয়ারম্যান না হয়ে হওয়া উচিত ‘কর্তৃপক্ষ’।

আমরা সংস্কার করব ভালোর জন্য। সংশোধনী আইনে পরিচালনা পর্ষদ বাতিলের প্রস্তাব করা হয়েছে। কিন্তু নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইডিআরএ পরিচালনা পর্ষদ বাতিল করে নতুন যে পরিচালনা পর্ষদ গঠন করবেন সেই পর্ষদও ব্যর্থ হলে তার দায় কে নেবে!

বীমা আইন ২০১০ এর অধীনে রুলস-রেগুলেশন করার এখতিয়ার দেয়া আছে নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে। আপনারা হয়তো মনে করছেন, ব্যাংক রেজল্যুশন অধ্যাদেশ হয়েছে তাই বীমাকারীর রেজল্যুশন অধ্যাদেশ হওয়া প্রয়োজন।

অন্যদিকে আইন পার্লামেন্টে পাস হয়ে প্রণিত হয়। এক্ষেত্রে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময় আইন সংশোধন করা হলে তা পরবর্তী পার্লামেন্ট রাখবে কিনা সেটি তাদের এখতিয়ার। তাই এখন কাঠ-খড় পুড়িয়ে আইন করা হলে পরবর্তী পার্লামেন্ট যদি তা না রাখে তাহলে আইন প্রণয়নের পরিশ্রমটি ভেস্তে যাবে। অপরদিকে সংস্কারকেও বিলম্বিত করবে।