আইডিআরএ’র দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতা প্রসঙ্গে

এ কে এম এহসানুল হক, এফসিআইআই: সাম্প্রতিক কালে এই পত্রিকায় বীমাখাতে সংঘটিত দুর্নীতির চাঞ্চল্যকর খবর একের পর এক প্রকাশিত হয়েছে। এই সমস্ত অভিনব দুর্নীতির খবর বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)’র অজানা থাকার কথা নয়।

বীমা গ্রাহকের স্বার্থ রক্ষা করা বীমা কর্তৃপক্ষের একটি অন্যতম প্রধান দায়িত্ব হলেও অজ্ঞাত এবং রহস্যজনক কারণে বীমা কর্তৃপক্ষ দিনের পর দিন বীমা কোম্পানির মালিক, বীমা কোম্পানি এবং উর্ধ্বতন কর্মকর্তার স্বার্থ রক্ষা করে আসছে, যা সংশ্লিষ্ট মহলে বিস্ময় এবং উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।

সুনির্দিষ্ট প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ অপরাধীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণে নির্লিপ্ত এবং নীরব দর্শকের ভূমিকা পালনে জনমনে তাদের কার্যকলাপ এবং বিশ্বস্ততা নিয়ে রীতিমতো সন্দেহের উদ্রেগ করেছে।

কি সেই রহস্যময় কারণ, যা বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের চেখে ঠুলি এঁটে দিয়েছে এবং তাদের অন্ধ করে দিয়েছে? সেটা বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।

বীমা কর্তৃপক্ষ যদি তাদের উপর ন্যস্ত গুরু দায়িত্ব পালনে অসামর্থ বা অপারগ হয় তবে এই প্রতিষ্ঠানটির প্রয়োজনীয়তা নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই জনমনে প্রশ্ন উঠেছে। বীমাখাতকে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ থেকে রক্ষা করতে হলে এই প্রতিষ্ঠানটির ব্যাপক সংস্কার প্রয়োজন।

আশ্চার্যজনকভাবে বীমাখাতে বিরাজমান দুর্নীতি, অনিয়ম কোন কিছুই যেন বীমা কর্তৃপক্ষের কাছে গুরুত্ব পাচ্ছে না। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে বীমা কর্তৃপক্ষের কারো প্রতি কোন প্রকার দায়িত্ব বা জবাবদিহীতা নাই। নিঃসন্দেহে বীমা কর্তৃপক্ষ তাদের দায়িত্ব পালনে চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে।

বীমা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মহল থেকে নানা ধরণের অভিযোগ রয়েছে। যার মধ্যে দুর্নীতির অভিযোগও রয়েছে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের উচিত সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বর্তমান এবং অতীত উর্ধ্বতন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এই সমস্ত অভিযোগের সত্যতা যাচাই করে দোষী ব্যক্তিদের উপযুক্ত শাস্তি প্রদান করা।

বীমাখাতের সার্বিক উন্নয়ন এবং স্বার্থের কথা চিন্তা করে এবং ব্যাপারটির গুরুত্ব অনুধাবন করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এবং অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থা এ ব্যাপারে তদন্ত কমিশন গঠনসহ প্রয়োজনীয় সকল প্রকার কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এমনটাই তাদের কাছে প্রত্যাশা।