বীমার টাকা পেতে ভারতে বোনকে হত্যা
ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক: জীবন বীমার টাকা পেতে নিজের বোনকে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। ভারতের উত্তর দিল্লির বুরারি শহরে এই হত্যাকাণ্ড হয়েছে। লাশ উদ্ধারের দু'দিন পর পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে এসেছে এমন নৃশংসতা।
পুলিশ জানিয়েছে, নিহতের নাম অনিতা। বয়স ৪৫ বছর। স্বামীকে নিয়ে বুরারিতে নিজ বাসায় থাকতেন অনিতা। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে পাশেই আরেকটি বাসায় ভাড়া থাকতেন তার ভাই কমল। দুই স্ত্রী ও ৮ সন্তান নিয়ে সংসার কমলের।
চরম অনটনে চলছে তাদের দিনকাল। ছোট্ট ভাড়া বাসায় পরিবারের সদস্যদের বসবাসের উপযুক্ত নয়, উপলব্ধি করেন কমল। অন্যদিকে একই এলাকায় অনিতার ছোট দু'টি বাড়ি। যার একটিতে থাকেন অনিতা, আরেকটিতে কমলের বিবাহিত কয়েক সন্তান।
এছাড়া অনিতার নামে ৫০ লাখ রুপির জীবন বীমা পলিসিও রয়েছে। বোন অনিতার জন্য রক্ষাবন্ধন গিফট নামে এই বীমা পলিসি করেছিলেন কমল নিজেই। বর্তমানে চরম অভাবে কমল, তাই নজর পড়েছে বোনের সম্পদের দিকে।
তদন্ত কর্মকর্তারা বলছেন, হত্যাকাণ্ডের ঘটনা মঙ্গলবারের। সেদিন রাতে বোনের বাসায় ঘুমাতে যান কমল। অন্যদিকে অনিতার স্বামী গান্ধরি (৫১) দিনভর শ্রমিকের কাজ শেষে সেদিন রাতে দেরিতে বাসায় ফেরেন। ঘুমিয়ে পড়েন বাসার নিচ তলাতেই।
এদিকে অনিতা ও তার স্বামী গান্ধরি ঘুমিয়ে পড়েছেন, এমনটি নিশ্চিত হওয়ার পর কমল তার দ্বিতীয় স্ত্রীর দু'ভাই চন্দন এবং কুন্ডনকে বাসায় প্রবেশ করান। পুলিশ বলছে, তাদের দু'জনের বিরুদ্ধেই অপরাধের রেকর্ড রয়েছে।
ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় তিনজনে মিলে মাংশ কাটার ছুড়ি দিয়ে অনিতার গলা কেটে ফেলে। এসময় অনিতার রক্ত ঘরে ছড়িয়ে পড়া বন্ধ করতে তারা বালিশ ব্যবহার করে। খুনের পর অনিতার মৃত্যু নিশ্চিত হলে সেখান থেকে বেরিয়ে যায় হত্যাকারীরা।
পরদিন ঘুম থেকে জেগে ওঠার পর হত্যাকাণ্ডের কথা জানতে পারেন অনিতার স্বামী গান্ধরি। এসময় তিনি অনিতার ভাই কমলকে ডাকেন এবং পুলিশ কন্ট্রোল রুমকে বিষয়টি জানান।
তবে হত্যাকাণ্ডের জন্য অনিতার স্বামী গান্ধরিকেই দায়ি করেন কমল। তিনি অভিযোগ করেন, গান্ধরি মাদকাসক্ত এবং নিয়মিতই অনিতাকে প্রহার করতেন। তবে প্রতিবেশিদের সঙ্গে কথা বলে কমলের অভিযোগের মিথ্যা প্রমাণ পায় পুলিশ।
পরে অবশ্য জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন কমল।
শুধুমাত্র বীমার টাকা নয় বরং সম্পত্তিও আত্মসাৎ করার উদ্দেশ্য ছিল এই হত্যাকাণ্ডের। এর সত্যতা খুঁজে পেয়েছেন এসিপি (সিভিল লাইনস) অশোক তেয়াগি এবং এসএইচও (বুরারি) মনজ কুমারের নেতৃত্বে তদন্ত দল। (সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া)