দুর্যোগের এই সময়ে বীমা এজেন্টদের পাশে দাঁড়ানো কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব
নিজস্ব প্রতিবেদক: কভিড-১৯ মহামারীর কারণে বীমা পলিসি বিক্রি ও নবায়ন প্রিমিয়াম সংগ্রহ বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন দেশের লাইফ ও নন-লাইফ বীমা কোম্পানির কমিশন ভিত্তিক বীমা কর্মীরা। এই শিল্পের অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারী মাস শেষে নির্ধারিত বেতন-ভাতা পেলেও কোন কমিশন পাচ্ছেন না এসব এজেন্ট।
কারণ, নিয়ম অনুসারে বীমা পলিসি বিক্রির নির্ধারিত কমিশনের বাইরে কোন বেতন-ভাতা নেই এজেন্টদের। এ অবস্থায় তাদের পাশে দাঁড়ানো এবং আর্থিক সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয়া সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব ও কর্তব্য বলে মনে করেন বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স প্রফেশনালস সোসাইটি’র জেনারেল সেক্রেটারি এ কে এম এহসানুল হক, এফসিআইআই।
ইন্স্যুরেন্সনিউজবিডি’কে তিনি বলেন, করোনা ভাইরাসের মতো চরম দুর্যোগ বা মহাসঙ্কটকালে দীর্ঘ সময়ব্যাপী লকডাউনের কারণে বীমা এজেন্টদের আয় বা জীবিকা অর্জনের পথ সম্পূর্ণভাবে বিকল হয়ে পড়েছে। এই অস্বাভাবিক, অচিন্তনীয় এবং অদ্ভূত পরিস্থিতে মানবিক কারণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব এবং কর্তব্য তাদের পাশে দাঁড়ানো এবং আর্থিক সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয়া।
এ কে এম এহসানুল হক, এফসিআইআই বলেন, বীমা এজেন্ট কেবলমাত্র কমিশনের ভিত্তিতে বীমা কোম্পানির সাথে চুক্তিবদ্ধ হলেও বর্তমান বিশেষ পরিস্থিতে তাদের সর্বপ্রকার সাহায্য প্রদান করা বীমা কোম্পানি এবং নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের এক প্রকার সামাজিক ও নৈতিক দায়িত্ব।
তিনি বলেন, বিহির্বিশ্বে বীমা এজেন্টরা সাধারণত কমিশনের পাশাপাশি নির্দিষ্ট পরিমাণ মাসোহারা (Subsistence Allowance) পেয়ে থাকে। কিন্তু অদ্ভূতভাবে বাংলাদেশে এই চর্চা না থাকার কারণে করোনা ভাইরাসের মতো চরম দুর্যোগে আয়ের পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তাদের স্বপরিবারে খাওয়া-পরা নিয়ে রীতিমতো হিমসিম খেতে হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, আইনগত দিক থেকে বীমা কোম্পানির দায়বদ্ধতা না থাকলেও তাদের এ কথা ভুলে গেলে চলবে না যে, স্বাভাবিক সময়ে বীমা এজেন্ট (বিশেষ করে জীবন বীমার বেলায়) কঠোর পরিশ্রম দ্বারা তাদের জীবিকা অর্জনের পাশাপাশি কোম্পানির জন্য ব্যবসা সংগ্রহের সাথে মুনাফা অর্জনেও সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে থাকে।
এ কে এম এহসানুল হক, এফসিআইআই বলেন, বীমা কোম্পানিগুলো তাদের সিএসআর (Corporate Social Responsibility) তহবিল এবং বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ এজেন্টের মাধ্যমে অর্জিত বাৎসরিক আয়ের একটি অংশ এ ব্যাপারে খরচ করার সক্ষমতা রাখে।
তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বীমা এজেন্টদের এই চরম আর্থিক সঙ্কটের কথা বিবেচনা করে এবং লাভ-লোকসানের খতিয়ান না করে তাদের বাঁচা-মরার সংগ্রামে অন্তত আর কিছু না হোক কেবলমাত্র মানবিক কারণে তাদের প্রতি সাহায্যের হাত প্রসারিত করবে এমনটাই প্রত্যাশা এবং কাম্য।