অসুস্থ প্রতিযোগিতা বন্ধের প্রচেষ্টাই হবে আমার প্রথম উদ্যোগ: আহমেদ সাইফুদ্দিন চৌধুরী
নিজস্ব প্রতিবেদক: নন-লাইফ বীমা খাতের প্রধান সমস্যা অবৈধ কমিশন ও অসুস্থ প্রতিযোগিতা। এই অসুস্থ প্রতিযোগিতা বন্ধ হলেই বীমা খাতের উন্নয়ন সম্ভব। বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স এসোসিয়েশন (বিআইএ)’র নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে আসলে এ লক্ষ্যেই কাজ করবেন নন-লাইফ বীমা খাতের প্রার্থী ও বাংলাদেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা আহমেদ সাইফুদ্দিন চৌধুরী।
ইন্স্যুরেন্স নিউজ বিডি’র সাথে আলাপকালে বিআইএ’র নির্বাচনে বিজয়ী হলে বীমা খাতের সংস্কারে কি কি উদ্যোগ নিবেন- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
আহমেদ সাইফুদ্দিন চৌধুরী ৩৮ বছর ধরে বীমা পেশায় আছেন। এর মধ্যে বাংলাদেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির (বিজিআইসি) মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবেই তিনি দায়িত্ব পালন করছে বিগত ১২ বছর ধরে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিকম এবং এমকম ডিগ্রি অর্জন করার পর ১৯৮৬ সালে জুনিয়র অফিসার হিসেবে বিজিআইসি’তে যোগদানের মধ্য দিয়ে তিনি বীমা পেশায় কর্মজীবন শুরু করেন।
এরপর ১৯৮৮ সালে তিনি একাউন্ট ইনচার্জ হিসেবে কোম্পানিটির চট্টগ্রাম জোনাল অফিসে স্থানান্তর হন। আর ২০০৮ সালে এডিশনাল ম্যানেজিং ডাইরেক্টর (অপারেশন) হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে পুনরায় কোম্পানিটির প্রধান কার্যালয়ে যোগদান করেন। সর্বশেষ ২০১৩ সালে তিনি বিজিআইসি’র মুখ্য নির্বাহীর দায়িত্ব পান।
আহমেদ সাইফুদ্দিন চৌধুরী বলেন, আমাদের নন-লাইফ বীমা খাতের সবচেয়ে বড় সমস্যা অবৈধ কমিশন। এই অবৈধ কমিশন যদি বন্ধ করা যায় তাহলে বীমা খাতের প্রিমিয়াম আয় যেমন বাড়বে, তেমনি কোম্পানিগুলোর বিনিয়োগ ও সম্পদ বাড়বে। সেই সাথে বাড়বে গ্রাহকসেবার মান। তাই আমি মনে করি, অসুস্থ প্রতিযোগিতা বন্ধে আমাদের সকলেই সম্মিলিতভাবে কাজ করা উচিত।
আহমেদ সাইফুদ্দিন চৌধুরী আরো বলেন, বীমা খাতে আমাদের পর্যাপ্ত পরিমাণের দক্ষ জনবলেরও অভাব রয়েছে। দক্ষ জনবল তৈরিতে বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স এসোসিয়েশনের ভূমিকা অন্যতম। আমি নির্বাচিত হয়ে আসলে বিআইএ থেকেই দক্ষ জনবল তৈরির জন্য আরো উন্নত পেশাগত প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নেব।
এবারের নির্বাচনের বিষয়ে তিনি বলেন, দেশের অর্থনীতিতে বীমা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি খাত। এই খাতের উন্নয়নে বিআইএ’র ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাই আমি মনে করি, যারা বীমা খাতের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারবে তাদেরই এবার নির্বাচিত হয়ে আসা উচিত।
বাংলাদেশের বীমা খাত নিয়ে গ্রাহকদের মাঝে নেতিবাচক ধারণাও বীমা খাতের উন্নয়নে একটি প্রধান বাধা। এই নেতিবাচক ধারণা দূর করে বীমার প্রতি গ্রাহকদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে পারলেই এ খাতের উন্নয়ন করা সম্ভব বলে মনে করেন আহমেদ সাইফুদ্দিন চৌধুরী।
তিনি আরো বলেন, বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক উন্নয়নে বীমা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ কারণেই আমাদের বীমা খাতের উন্নয়নের ক্ষেত্রে রি-ইন্স্যুরেন্সের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তাই দেশের টাকা দেশে রাখতে বেসরকারি মালিকানায় একটি পূর্ণাঙ্গ রি-ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি গড়ে তোলা হলে সেটিও বীমা খাতের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
উল্লেখ্য, আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বীমা মালিকদের সংগঠন বিআইএ’র ২০২৫-২০২৬ সালের নির্বাহী কমিটির নির্বাচন। এবারের নির্বাচনে নন-লাইফ বীমা খাতের ১৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে ৯ জন চেয়ারম্যান-পরিচালক এবং ১০ জন মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা।
অপরদিকে লাইফ বীমার ৫ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করায় এ খাতের ১০ নির্বাহী সদস্য পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করা হতে পারে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশনের দপ্তর। এ খাতের নির্বাহী সদস্যদের মধ্যে ৬ জন চেয়ারম্যান-পরিচালক ও ৪ জন মুখ্য নির্বাহী।