পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তিতে আরো সময় চেয়েছে বীমাকারীরা

আবদুর রহমান আবির: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির জন্য আরো সময় চেয়েছে অতালিকাভুক্ত লাইফ ও নন-লাইফ বীমাকারীরা। গতকাল আইডিআরএ’র সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ দাবি জানানো হয়। কোম্পানিগুলো বলছে, করোনা মহামারীর কারণে তাদের ব্যবসা ভালো হয়নি। যার কারণে বিএসইসি’র শর্তাদি পূরণ করতে আরো কিছুটা সময় লাগবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

তথ্য অনুসারে, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির পদক্ষেপ ও অগ্রগতির সর্বশেষ অবস্থা জানতে অতালিকাভুক্ত ২৬টি লাইফ ও নন-লাইফ বীমা কোম্পানির সঙ্গে গতকাল মঙ্গলবার (২৮ জুলাই, ২০২০) সকাল ১১টায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠকে বসে আইডিআরএ। সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলোর মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তারা বৈঠকে অংশ নেন এবং সর্বশেষ অবস্থা তুলে ধরেন।

বৈঠকের বিষয়ে কর্তৃপক্ষের সদস্য ড. এম মোশাররফ হোসেন ইন্স্যুরেন্সনিউজবিডি’কে বলেন, গতকালকের বৈঠক ফলপ্রসু হয়েছে। তবে বেশিরভাগ বীমা কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির জন্য আরো ২/১টি কোয়ার্টার সময় চেয়েছে। করোনা মহামারীর কারণে এসব প্রতিষ্ঠানের ব্যবসা লাভজনক অবস্থায় যেতে পারেনি। তাই তারা সময় চেয়েছে।

ড. এম মোশাররফ হোসেন আরো বলেন, ৪/৫টি কোম্পানির অবস্থা ভালো; তারা বিএসইসি’তে আবেদন জমা দিতে পারবে। এসব কোম্পানির মধ্যে কেউ জুনের একাউন্ট দিয়ে আবার কেউ সেপ্টেম্বরের একাউন্ট দিয়ে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির জন্য আবেদন করতে পারবে। বাকীরাও চাপের মধ্যেই রয়েছে, কারণ প্রতিদিন তাদের ৫ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হচ্ছে।

এর আগে গত ১৬ সেপ্টেম্বর পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির বিষয়ে অর্থমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক ১৮টি লাইফ ও ৯টি নন-লাইফ বীমা কোম্পানিকে চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার নির্দেশ দেয় আইডিআরএ। অন্যথায় বীমা আইনের সংশ্লিষ্ট বিধান মোতাবেক কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার নির্দেশ পাওয়া ১৮টি লাইফ বীমা কোম্পানি হলো- বায়রা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, গোল্ডেন লাইফ ইন্স্যুরেন্স, হোমল্যান্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স, সানফ্লাওয়ার লাইফ ইন্স্যুরেন্স, বেস্ট লাইফ ইন্স্যুরেন্স, চার্টার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স, এনআরবি গ্লোবাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স, প্রোটেক্টিভ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স;

জেনিথ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, আলফা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ডায়মন্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স, গার্ডিয়ান লাইফ ইন্স্যুরেন্স, যমুনা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, মার্কেন্টাইল ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, স্বদেশ লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ট্রাস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স এবং লাইফ ইন্স্যুরেন্স করপোরেশন অব বাংলাদেশ।

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার নির্দেশ পাওয়া ৮টি নন-লাইফ বীমা কোম্পানি হলো- ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স, মেঘনা ইন্স্যুরেন্স, সাউথ এশিয়া ইন্স্যুরেন্স, ইসলামী কমার্শিয়াল ইন্স্যুরেন্স, ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্স, দেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, সেনা কল্যাণ ইন্স্যুরেন্স এবং সিকদার ইন্স্যুরেন্স।

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত না হওয়া নন-লাইফ বীমা কোম্পানিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি পুরনো মেঘনা ইন্স্যুরেন্স। কোম্পানিটি ১৯৯৬ সালের ৩১ মার্চ নিবন্ধন লাভ করেছে। অর্থাৎ প্রতিষ্ঠানটি সাড়ে ২৩ বছর ধরে ব্যবসা করছে।

অন্যদিকে লাইফ বীমা কোম্পানিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি পুরানো হোমল্যান্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স। কোম্পানিটি ১৯৯৬ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর অনুমোদন লাভ করেছে। সর্বশেষ ২০১৫ সালের ২০ ডিসেম্বর অনুমোদন লাভ করেছে লাইফ ইন্স্যুরেন্স করপোরেশন অব বাংলাদেশ।

উল্লেখ্য, এরইমধ্যে এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্সের প্রাথমিক গণ প্রস্তাব (আইপিও) অনুমোদন করেছে পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) । গত ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত বিএসইসির কমিশন সভয় এ অনুমোদন দেয়া হয়।

বিএসইসি জানিয়েছে, এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্স আইপিওতে ২ কোটি ৬০ লাখ ৭৯ হাজার সাধারণ শেয়ার ছাড়বে। প্রতিটি শেয়ারের অভিহিত মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ টাকা। আইপিও’র মাধ্যমে কোম্পানিটি পুঁজিবাজার থেকে ২৬ কোটি ৭ লাখ ৯০ হাজার টাকা পুঁজি উত্তোলন করবে।