মুখ্য নির্বাহী নিয়োগ প্রবিধানমালার সংশোধন বিষয়ে যা বলছে আইডিআরএ

নিজস্ব প্রতিবেদক: বীমা খাতে মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) পদে যোগ্য মানবসম্পদের সংকট নিরসনে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) বীমা কোম্পানির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়োগ ও অপসারণ প্রবিধানমালা, ২০১২ সংশোধন করেছে। এ সংক্রান্ত সংশোধনী প্রজ্ঞাপন গত ২২ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখে জারি করা হয়।

আইডিআরএ বলছে, বর্তমানে অনেক বীমা কোম্পানিতে মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা পদ দীর্ঘদিন ধরে শূন্য রয়েছে। অথচ অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এডিশনাল এমডি) ও উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) পদে কর্মরত অনেক কর্মকর্তা সিইও হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্য উপযুক্ত। বিদ্যমান পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়োগ প্রক্রিয়া সহজীকরণ ও যোগ্য প্রার্থীর পরিধি বাড়ানোর লক্ষ্যে প্রবিধানমালায় এই সংশোধন আনা হয়েছে।

সংশোধিত প্রবিধানমালায় মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়োগে যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার শর্ত শিথিল করা হয়েছে। এর ফলে সাধারণ বীমা করপোরেশন ও জীবন বীমা করপোরেশনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বীমা কোম্পানির অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও উপব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং আন্তর্জাতিকভাবে সুপরিচিত বহুজাতিক বীমা কোম্পানিতে উর্ধ্বতন ব্যবস্থাপনা পদে কর্মরত ব্যক্তিরাও সিইও পদে নিয়োগের সুযোগ পাবেন।

এছাড়া একচ্যুয়ারি, সিপিএ, সিএফএ, সিএলইউ, আইসিএবি, এসিসিএ ও আইসিএমএবি’র ফেলো বা এসোসিয়েটসহ স্বীকৃত পেশাগত ডিগ্রি বা পদবিধারীদের জন্যও মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়োগের শর্ত শিথিল করা হয়েছে। আইডিআরএ’র মতে, এতে করে উচ্চ পেশাগত যোগ্যতা সম্পন্ন দক্ষ জনবল বীমা খাতে নেতৃত্বের সুযোগ পাবেন।

সংশোধিত প্রবিধানমালায় মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়োগ বা নবায়নের ক্ষেত্রে আবেদন দাখিল এবং আইডিআরএ কর্তৃক সিদ্ধান্ত জানানোর সময়সীমা আগের ১৫ দিনের পরিবর্তে ৬০ দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে নিয়োগ প্রক্রিয়া আরও স্বচ্ছ ও কার্যকর হবে বলে মনে করছে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।

একই সঙ্গে সংশোধনীতে দুর্নীতিবিরোধী কঠোর বিধান যুক্ত করা হয়েছে। কোনো বীমা কোম্পানি বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ক্ষমতার অপব্যবহার, দুর্নীতি, মানিলন্ডারিং বা আর্থিক অনিয়মের কারণে অপসারিত ব্যক্তি কিংবা যাদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ বা নবায়নের আবেদন আইডিআরএ প্রত্যাখ্যান করেছে, তারা অন্য কোনো বীমা কোম্পানিতে মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োজিত হতে পারবেন না।

আইডিআরএ মনে করে, সংশোধিত প্রবিধানমালার মাধ্যমে সম্ভাব্য সিইও পুল সম্প্রসারিত হবে, যোগ্য ও দক্ষ মানবসম্পদের সংকট কমবে এবং বীমা কোম্পানিতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বাড়বে। এর ফলে দীর্ঘমেয়াদে বীমা খাতের ওপর জনআস্থা আরও দৃঢ় হবে বলে আশা প্রকাশ করেছে সংস্থাটি।