ক্যান্সার চিকিৎসার খরচ যোগাতে গুরুত্ব বাড়ছে বীমার
পাপলু রহমান: মরণব্যাধি ক্যান্সার রোগীর সংখ্যা সারাবিশ্বেই বাড়ছে। স্তন ক্যান্সার, ত্বক ক্যান্সার, কোলন ক্যান্সার, মূত্রস্থলীর ক্যান্সার, পাকস্থলীর ক্যান্সারসহ বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারে মানুষ প্রতিনিয়ত আক্রান্ত হচ্ছে। ক্যান্সারের জন্য সাধারণত দায়ী তামাক সেবন, মদ্যপান, স্থূলতা, অস্বাস্থ্যকর ও অপর্যাপ্ত খাবার। এছাড়া ব্যায়াম না করা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের কারণেও ক্যান্সার হয়।
আমাদের পাশ্ববর্তী দেশ ভারতেও এই রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি। দেশটিতে প্রতিবছর প্রায় সাত লাখ মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়। এদের বড় একটা অংশই চিকিৎসা ও সচেতনতার অভাবে মারা যায়। অনেকেরই স্বাস্থ্য বীমা করা থাকে না। আর ক্যান্সার রোগের চিকিৎসা খরচও দিন দিন বাড়ছে।
এডেলওয়েস টোকিও লাইফ ইন্স্যুরেন্সের এক জরিপে বলা হয়েছে, ভারতে ৫০ শতাংশ ক্যান্সার রোগীই কোনো স্বাস্থ্য বীমার আওতায় নেই। দেশটির ১৫টি শহরের ক্যান্সার রোগীদের নিয়ে এডেলওয়েস টোকিও লাইফ ও ইপসোস রিসার্চ সম্মিলিতভাবে ১০০ জন ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ নিয়ে এই জরিপ পরিচালনা করে।
অধিকাংশ ক্যান্সার বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করেন, আগামী পাঁচ বছরে ক্যান্সারের প্রাদুর্ভাব ২৫ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। এরমধ্যে স্তন ক্যান্সারের আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়বে। এছাড়া ফুসফুস, ওরাল ও সার্ভিকাল ক্যান্সারেরও ঝুঁকিও বাড়বে।
এডেলওয়েস টোকিও লাইফের এমডি ও সিইও সুমিত রায় বলেন, ক্যান্সারের আর্থিক প্রভাব বাড়ছে। উন্নত চিকিত্সা থাকলেও তা বেশিরভাগ রোগীর জন্য ব্যয়বহুল। এই গবেষণার মাধ্যমে আমরা মানুষকে ক্যান্সারে সচেতন করার চেষ্টা করেছি এবং অর্থনৈতিকভাবে বীমার গুরুত্বটি তুলে ধরতে চেয়েছি। আমরা বোঝাতে চেয়েছি যে কোনো চ্যালেঞ্জিং সময়ে ‘ইন্স্যুরেন্স মানুষের বন্ধু’ হতে পারে।
বর্তমানে ভারতে প্রাথমিক পর্যায়ে ক্যান্সার চিকিত্সা খরচ হয় প্রায় সাড়ে চার লাখ রুপি। মধ্যম পর্যায়ে ক্যান্সার থেরাপির খরচ ছয় লাখ রুপি। সব ধরনের ক্যান্সারে প্রাথমিক পর্যায়ে উন্নত থেরাপিতে খরচ পড়ে ১০ লাখ রুপি এবং মধ্যম পর্যায়ে খরচ গুণতে হয় ১৪ লাখ রুপি। একজন রোগীর জন্য যা অর্থনৈতিকভাবে বোঝাস্বরূপ।
সুমিত রায় বলেন, কঠিন রোগবিসুখে ভারতে বীমা নিয়ে সচেতনতা কম। ক্যান্সারের মতো রোগের খরচ যোগাতে অনেকেই ঋণ করে, জমিজমা বিক্রি করে। তবুও বীমা করে না। ৯২ শতাংশ চিকিৎসকের মতে, রোগীদের অধিকাংশই আর্থিক সংকটের কারণে ক্যান্সারের সব থেরাপি শেষ করতে পারে না।