দক্ষিণ কোরিয়ায় মৃত্যু দাবির অর্থ অবসরে তোলার সুযোগ পেলেন পলিসিধারীরা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: দক্ষিণ কোরিয়ার আর্থিক নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস কমিশন (এফএসসি) দেশের প্রবীণ নাগরিকদের আর্থিক স্থিতি জোরদার করতে একটি যুগান্তকারী উদ্যোগ ঘোষণা করেছে। আগামী ৩০ অক্টোবর থেকে জীবন বীমা গ্রাহকরা তাদের মৃত্যু দাবির একটি অংশ অবসরকালীন আয় হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন। এই পদক্ষেপকে বীমা খাতের ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য সংস্কার হিসেবে দেখা হচ্ছে।

প্রথম ধাপে স্যামসাং লাইফ, হানহা লাইফ, কিওবো লাইফ, শিনহান লাইফ এবং কেবি লাইফ- এই পাঁচটি শীর্ষস্থানীয় জীবন বীমা কোম্পানি ২৩ অক্টোবর থেকে যোগ্য গ্রাহকদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করবে। এফএসসি জানায়, ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বরের শেষ নাগাদ প্রায় ৪ লাখ ১৪ হাজার জীবন বীমা চুক্তি এই সুবিধার আওতায় আসবে, যার আর্থিক মূল্য দাঁড়াবে প্রায় ১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (২৩.১ ট্রিলিয়ন উয়ন)।

দ্বিতীয় ধাপে, ২০২৬ সালের ২ জানুয়ারি থেকে দেশটির অন্যান্য জীবন বীমা প্রতিষ্ঠানও একই সেবা চালু করবে। এতে যোগ্য চুক্তির সংখ্যা বেড়ে হবে ৭ লাখ ৫৯ হাজার, যার মোট আর্থিক মূল্য প্রায় ২৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (৩৫.৪ ট্রিলিয়ন উয়ন)।

এই নতুন সুবিধা কেবল ৫৫ বছর বা তার বেশি বয়সী পলিসিধারীদের জন্য প্রযোজ্য হবে। আবেদন করতে হবে সরাসরি বীমা কোম্পানির শাখা অফিস বা গ্রাহকসেবা কেন্দ্রে গিয়ে। আবেদন প্রক্রিয়ার সময় গ্রাহকদের জন্য থাকবে সিমুলেশন সেবা, যার মাধ্যমে তারা নির্দিষ্ট অনুপাতে এবং সময়সীমায় কত টাকা পেতে পারেন তা আগেভাগেই জানতে পারবেন।

গ্রাহকরা চাইলে যেকোনো সময় এই প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ বন্ধ, পুনরায় শুরু বা প্রত্যাহার করতে পারবেন। এফএসসি জানিয়েছে, এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য হলো অবসর-পরবর্তী জীবনে প্রবীণ নাগরিকদের আর্থিক নিরাপত্তা ও স্বাধীনতা নিশ্চিত করা।

সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, আগামী দিনে তারা পরীক্ষামূলকভাবে ‘সার্ভিস-টাইপ কনভার্সন’ নামে নতুন ধরনের পণ্য চালু করবে, যার মাধ্যমে মৃত্যু দাবির অর্থকে প্রবীণ পরিচর্যা সেবায় রূপান্তর করা যাবে। পাশাপাশি, ২০২৬ সালের শুরুতেই ‘টন্টিন পেনশন প্ল্যান’ নামে নতুন অবসরকালীন পেনশন সেবা চালুর পরিকল্পনাও রয়েছে।

অর্থনীতি বিশ্লেষকদের মতে, এই পদক্ষেপ বৃদ্ধিশীল জনসংখ্যার দেশ দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রবীণদের আর্থিক সুরক্ষা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে একটি কৌশলগত পরিবর্তন আনবে। এটি একদিকে যেমন বীমা খাতে আস্থা ও স্থিতিশীলতা বৃদ্ধি করবে, অন্যদিকে অবসরকালীন জীবনে আর্থিক পরিকল্পনাকে আরও নমনীয় ও সহায়ক করে তুলবে। (সংবাদ সূত্র: ইন্স্যুরেন্স এশিয়া)