বীমাখাতে ব্যাপক সংস্কার প্রয়োজন: একেএম এহসানুল হক
এ কে এম এহসানুল হক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রিসহ মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেছেন। প্রায় চার দশক দুবাইয়ে অবস্থানকালে তিনি আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন বিভিন্ন বীমা কোম্পানিতে চাকরি করেছেন।
এ সময় তিনি লন্ডন থেকে ফেলো অফ দি চাটার্ড ইন্স্যুরেন্স ইন্সটিটিউট (এফসিআইআই), এসোসিয়েটস অফ দি ইন্সটিটিউট অফ রিস্ক ম্যানেজমেন্ট (এআইআরএম) এবং এসোসিয়েট অফ দি চাটার্ড ইন্সটিটিউট অফ আরবিট্রেটরস (এসিআইআরবি) ডিগ্রি অর্জন করেন।
ইন্স্যুরেন্সের ওপর এ পর্যন্ত লেখকের ৮টি বই প্রকাশিত হয়েছে, যা দেশে এবং বিদেশে সমাদৃত। বইগুলোর মধ্যে রয়েছে- বেসিকস অব রিস্ক এন্ড ইন্স্যুরেন্স, ফুটপ্রিন্টস অন রিস্ক ম্যানেজমেন্ট, ইভোল্যুশন অব ইঞ্জিনিয়ারিং ইন্স্যুরেন্স, লায়াবিলিটি ইন্স্যুরেন্স ইন ডিফারেন্ট কালারস এন্ড শেইড, প্রিন্সিপলস এন্ড প্র্যাকটিস অব মেরিন ইন্স্যুরেন্স, প্রিন্সিপলস অব ইন্স্যুরেন্স, ফান্ডামেন্টালস অব ইন্স্যুরেন্স এবং গ্লোসারি অব ইন্স্যুরেন্স।
পেশায় লেখক একজন চাটার্ড ইন্স্যুরার। বর্তমানে তিনি সরকারী ও বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতায় নিয়োজিত।
আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে প্রায় চার দশকের অভিজ্ঞতার আলোকে দেশি ও বিদেশি বীমাখাতের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ইন্স্যুরেন্স নিউজ বিডি’র সাথে আলোচনা করেছেন এ কে এম এহসানুল হক। এ আলোচনা নিয়েই সাজানো হয়েছে সাক্ষাতকারটি। সাক্ষাতকারটি নিয়েছেন আবদুর রহমান আবির।
ইন্স্যুরেন্স নিউজ বিডি:
আপনি তো দীর্ঘ ৪০ বছর দেশের বাইরে ছিলেন এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন বীমা কোম্পানিতে কাজ করেছেন। বিদেশে আপনার কাজের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে কিছু বলুন-
একেএম এহসানুল হক:
হ্যাঁ, আমি প্রায় চার দশক দুবাইতে প্রবাসী জীবন যাপন করেছি। এই সময় আমি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন বীমা কোম্পানিতে যেমন- নেদারল্যান্ড ইন্স্যুরেন্স, ডেল্টা লয়েড ইন্স্যুরেন্স, জেনারেল এক্সিডেন্ট ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে বিভিন্ন পদে চাকরি করেছি। সে সময় জেনারেল এক্সিডেন্ট ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে মোট ২ জন এফসিআইআই (মিডল ইস্ট ম্যানেজার এবং অপারেশন ম্যানেজার) এবং বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টে সর্বমোট ৭ জন এসিআইআই চাকরিতে কর্মরত ছিলেন।
ইন্স্যুরেন্স নিউজ বিডি:
আপনি যেসব কোম্পানিতে কাজ করেছেন সেখানকার ক্লেইম ব্যবস্থাপনা কেমন? আপনার অভিজ্ঞতার আলোকে যদি তা বলতেন-
একেএম এহসানুল হক:
বহির্বিশ্বে বীমা কোম্পানি যে মন্ত্রে দিক্ষিত তা হচ্ছে “Insurance companies are in the business of paying claims” অর্থাৎ বীমা দাবি পরিশোধ করাই বীমা কোম্পানির প্রধান দায়িত্ব। দ্রুত দাবি নিষ্পত্তির ব্যাপারে এসব কোম্পানি অত্যন্ত সচেতন এবং যত্নবান। কোন কোন কোম্পানি যেমন- জেনারেল এক্সিডেন্ট ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি এ ব্যাপারে তাদের আন্তরিক সদিচ্ছা প্রকাশের জন্য বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিত। বিজ্ঞাপনের ভাষাটি হত এমন- “প্রয়োজনীয় দলিল দস্তাবেজ জমা সাপেক্ষে ৭ দিনের মধ্যে বৈধ দাবি পরিশোধ করা হয়”।
আমি সর্বমোট ১৪ বছর জেনারেল এক্সিডেন্ট ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে নিয়োজিত ছিলাম। যার মধ্যে প্রায় ৩ বছর ক্লেইমস ডিপার্টমেন্টে কাজ করি। সে সময় টি. চইতরাম এন্ড সন্স’র একটি ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে আগুন লাগে। আন্তর্জাতিক লস এডজাস্টার মেসার্স গ্রাহাম মিলারকে এই ক্লেইমের অনুসন্ধান এবং ক্ষতিপূরণ নিরূপনের জন্য নিয়োগ দেয়া হয়।
গ্রাহাম মিলারের পরিচালক জনাব ডেভিড ওয়েন, এফসিআইআই, এফসিআইএলএ এই দায়িত্ব অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে ও অল্প সময়ে সম্পন্ন করেন এবং দাবি পূরণের সুপারিশ জানিয়ে আমার কোম্পানিকে ফাইনাল রিপোর্ট জমা দেন। যেখানে ক্ষতির পরিমাণ ছিল প্রায় ১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বীমাগ্রহীতা লস এডজাস্টারের সুপারিশ মেনে নেয় এবং জেনারেল এক্সিডেন্ট ইন্স্যুরেন্স প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ৭ দিনের মধ্যেই দাবি পরিশোধ করে।
এখানে বলা প্রাসঙ্গিক যে, বৈধ দাবি পূরণের বেলায় জেনারেল এক্সিডেন্ট ইন্স্যুরেন্স সব সময় ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করে। যে কারণে অন্যান্য ইউরোপীয়ান বীমা কোম্পানির তুলনায় প্রিমিয়াম অধিক হওয়া সত্ত্বেও জেনারেল এক্সিডেন্ট ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি অধিক জনপ্রিয় ছিল। কোম্পানিগুলো তাদের প্রতিযোগিতার বাজার ধরে রাখতে দাবি পরিশোধকেই সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিত। বৈধ দাবির ক্ষেত্রে কোম্পানিগুলোর মনোভাব এমন যে, কে কত দ্রুত দাবি পরিশোধ করতে পারে।
ইন্স্যুরেন্স নিউজ বিডি:
উন্নত দেশগুলোতে বীমা নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের সাথে বীমা কোম্পানিগুলোর সম্পর্ক কি ধরণের? এ ব্যাপারে কিছু বলুন-
একেএম এহসানুল হক:
উন্নত দেশগুলোতে বীমা নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ অত্যন্ত দক্ষতা এবং দৃঢ়তার সাথে তাদের দায়িত্ব পালন করে থাকে। বীমা কর্তৃপক্ষ বীমা আইনের প্রয়োগের ব্যাপারে আপোষহীন ভূমিকা পালন করে। উন্নত দেশগুলোতে বীমা ব্যবসা সঠিক এবং সুনিয়ন্ত্রিতভাবে সংগঠিত। বীমা কোম্পানি তাদের নিজেদের ব্যবসায়ীক স্বার্থে ও সুনাম অক্ষু্ণ্ন রাখতে কোন প্রকার অনিয়ম বা বীমা আইন লঙ্ঘন করে কর্তৃপক্ষের আক্রোশের দাবানলের মুখে পড়তে চায় না। মূলত কোম্পানগিুলোর শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা মনস্তাত্ত্বিকভাবেই সৎ। তারা কখনো ভাবতেই পারে না যে, জাল-জালয়াতি বা দুর্নীতির মাধ্যমে উপার্জন করা যায়।
তারা বীমা আইন এবং বীমা কর্তৃপক্ষের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে ব্যবসা পরিচালনা করে থাকে। সততা তাদের আত্মসম্মানের সাথে জড়িত। তাদের মধ্যে বীমা আইন বা বীমা কর্তৃপক্ষকে ফাঁকি দেয়ার প্রবণতা নাই বললেই চলে। এ কারণে সেখানে বীমা আইন লঙ্ঘন এবং অনিয়মের অভিযোগ তুলনামূলকভাবে অনেক কম। কঠোর ও দৃঢ় হওয়া সত্ত্বেও বীমা কর্তৃপক্ষ এবং বীমা কোম্পানির মধ্যে এক প্রকার প্রীতিকর সম্পর্ক বিরাজমান। বীমাখাতের সার্বিক উন্নয়নের জন্য তারা একে অপরকে সাহায্য ও সহযোগিতা করে থাকে।
ইন্স্যুরেন্স নিউজ বিডি:
আপনি যেসব কোম্পানিতে কাজ করেছেন সেখানকার আন্ডাররাইটিং ব্যবস্থাপনার ব্যাপারে যদি কিছু বলতেন-
একেএম এহসানুল হক:
বহির্বিশ্বে বীমা কোম্পানি ঝুঁকি অবলিখনের ব্যাপারে অত্যন্ত যত্নবান এবং সচেতন। বৃহৎ এবং জটিল ঝুঁকি বিশেষ করে ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইউনিটের ঝুঁকি গ্রহণের পূর্বে পেশাগত সার্ভেয়ার দ্বারা ঝুঁকি পরিদর্শন, সার্ভেয়ারের সুপারিশ মত ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ইত্যাদির ব্যাপারে গুরুত্ব প্রদান করে থাকে। ঝুঁকির মাত্রার ওপর নির্ভর করে প্রিমিয়াম হার এবং পলিসির বিশেষ শর্তাবলী নির্ধারণ করা হয়।
ইন্স্যুরেন্স নিউজ বিডি:
আন্তর্জাতিক বীমা কোম্পানি তাদের মানবসম্পদ কিভাবে ব্যবহার করে? এ ব্যাপারে যদি কিছু বলতেন-
একেএম এহসানুল হক:
বহির্বিশ্বে বীমা কোম্পানি তাদের মানবসম্পদ (Human Capital) সুষ্ঠুভাবে ব্যবস্থাপনা করে থাকে। কর্মচারীদের নিয়মিত প্রশিক্ষণ (Internal and External Training), পেশাগত ডিগ্রি অর্জনে সর্বোতভাবে উৎসাহ এবং আর্থিক সহায়তা প্রদান, ডিগ্রি গ্রহণের পর চাকরিতে পদোন্নতি, বেতন-ভাতা বৃদ্ধি ইত্যাদি অতিরিক্ত সুযোগ-সুবিধা প্রদান করে থাকে। কোম্পানিগুলো তাদের কর্মকর্তাদের মানসম্মত বেতন দিয়ে থাকে। ব্যাংক ও অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর চেয়ে যা কখনো কখনো বেশি হয়ে থাকে। এছাড়াও শিক্ষাগত যোগ্যতা বা কাজের দক্ষতার উপরও তারা অতিরিক্ত আর্থিক সুবিধা ভোগ করেন।
ইন্স্যুরেন্স নিউজ বিডি:
বহির্বিশ্বে সরকার কর্তৃক কোন কোন ধরণের বীমা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে? এ ব্যাপারে যদি আপনি কিছু বলেন-
একেএম এহসানুল হক:
বহির্বিশ্বে বিশেষ করে ইউরোপ এবং আমেরিকায় সরকারীভাবে কতিপয় বিশেষ ধরণের বীমা যেমন- পেশাগত দায় বীমা (Professional Indemnity Insurance), মেডিকেল ম্যাল প্র্যাকটিস, প্রডাক্ট লায়াবিলিটি ইত্যাদি বীমা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
দৃষ্টান্তসরূপ- পেশাগত দায় বীমা ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, আইনজীবী ইত্যাদির বেলায় বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। নতুন কোম্পানি নিবন্ধন এবং পুরনো কোম্পানির নিবন্ধন নবায়নের সময় কর্তৃপক্ষ প্রমাণ হিসেবে বীমা পলিসির একটি কপি গ্রহণ করে থাকে।
ইন্স্যুরেন্স নিউজ বিডি:
আপনি আপনার অভিজ্ঞতার আলোকে বাংলাদেশের বীমাখাতকে কিভাবে মূল্যায়ন করেন?
একেএম এহসানুল হক:
বাংলাদেশের বীমাখাত সম্পর্কে যতদূর জানতে পেরেছি সেই সুবাদে এ কথা বললে হয়তো ভুল হবে না যে, বিগত ৪৭ বছরে এই খাতের উল্লেখযোগ্য উন্নতি সাধিত হয়নি। এর কারণ একাধিক, যেমন- বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের দূরদৃষ্টির অভাব, বীমা আইনের প্রতি বীমা কোম্পানিগুলোর আনুগত্য ও শ্রদ্ধার অভাব। সর্বোপরি বীমাখাতে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার অভাব এই খাতের বর্তমান নৈরাজ্যজনক অবস্থার জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী।
ইন্স্যুরেন্স নিউজ বিডি:
বীমা কোম্পানি সম্পর্কে সাধারণ মানুষের যে বিরুপ ও নেতিবাচক ধারণা রয়েছে, তা কতটা যুক্তিসঙ্গত বলে আপনি মনে করেন?
একেএম এহসানুল হক:
আমি মনে করি সাধারণ মানুষের এই ধারণা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক বা অমূলক নয়। এর পেছনে অনেক কারণ রয়েছে, যেমন- দাবি নিষ্পত্তির বেলায় বীমা কোম্পানিগুলোর নেতিবাচক মনোভাব, জীবন বীমার বেলায় মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পর সময়মতো পলিসির টাকা পরিশোধে ব্যর্থতা, কাস্টমারকেয়ার সার্ভিস প্রদানে বীমা কোম্পানিগুলোর অনীহা বা উদাসীনতা এই অবস্থার জন্য দায়ী।
ইন্স্যুরেন্স নিউজ বিডি:
বীমাখাতের এই অবস্থার পরিবর্তন আনতে আপনার মতে কি করা প্রয়োজন?
একেএম এহসানুল হক:
আমি মনে করি এই অবস্থার পরিবর্তনের জন্য কতিপয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা আবশ্যক। যেমন- জনগণকে বীমার উপকারিতা সম্পর্কে সচেতন করে তোলা, সময়মতো বৈধ দাবি নিষ্পত্তি করা, মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পর সময়মতো পলিসির টাকা পরিশোধ করা, বীমা প্রতিনিধি বা বীমা এজেন্টের সততা ও নিষ্ঠার সাথে তাদের দায়িত্ব পালন করা ইত্যাদি। এক্ষেত্রে বীমা কোম্পানির প্রতিনিধি বা এজেন্টের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ প্রয়োজন রয়েছে বলে আমি মনে করি।
ইন্স্যুরেন্স নিউজ বিডি:
বীমাখাতের উন্নয়নে গণমাধ্যম কিভাবে সাহায্য করতে পারে?
একেএম এহসানুল হক:
আমি মনে করি গণমাধ্যম এ ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করতে পারে। যেমন- বীমাখাতের বিভিন্ন অনিয়ম, বীমা গ্রাহকের বিভিন্ন অভিযোগ ইত্যাদি নিয়মিতভাবে পত্র-পত্রিকায় তুলে ধরা, বীমা আইন লঙ্ঘনকারী কোম্পানির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের ব্যাপারে বীমা কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা, দায়িত্ব পালনে বীমা কর্তৃপক্ষের ভুল ত্রুটি তুলে ধরা ইত্যাদি।
ইন্স্যুরেন্স নিউজ বিডি:
বীমাখাতের সংস্কারের প্রয়োজনে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের করণীয় কাজ কি?
একেএম এহসানুল হক:
বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের বর্তমান অপর্যাপ্ত জনবল নিয়ে তাদের দায়িত্ব সুচারুরূপে সম্পন্ন করা সম্ভব নয়। এর জন্য চাই উপযুক্ত এবং পর্যাপ্ত জনবল, বীমা গ্রাহকের স্বার্থে বীমা আইন লঙ্ঘনকারী কোম্পানির বিরুদ্ধে কঠোর এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান, প্রয়োজনে নতুন বীমা আইন ও প্রবিধান প্রণয়ন এবং বর্তমান বীমা আইনের সুষ্ঠু প্রয়োগ।
এ ছাড়াও বীমাখাতে পেশাদার এবং যোগ্য জনবল আবশ্যক। এ ব্যাপারে নতুন প্রজন্মকে এগিয়ে আসতে হবে এবং তাদেরকে এই পেশায় আকৃষ্ট করতে সরকারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।
ইন্স্যুরেন্স নিউজ বিডি:
কতিপয় বীমা কোম্পানি অপর্যাপ্ত পরিশোধিত মূলধন নিয়ে ব্যবসা করছে। এ ব্যাপারে আপনার কি মতামত?
একেএম এহসানুল হক:
কিছু কিছু বীমা কোম্পানির পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত স্বল্প। প্রকৃত অর্থে এই সমস্ত কোম্পানির ব্যবসা করার যোগ্যতা আছে বলে আমি মনে করি না। এটি একটি উদ্বেগের কারণও বটে। বীমা গ্রাহকের এবং বীমাখাতের বৃহত্তর স্বার্থে এই সমস্ত কোম্পানির বিরুদ্ধে অবিলম্বে বীমা কর্তৃপক্ষের যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।
ইন্স্যুরেন্স নিউজ বিডি:
বীমাখাতের সার্বিক উন্নয়নের ব্যাপারে আপনি কতটা আশাবাদী?
একেএম এহসানুল হক:
কাজটা এতোটা সহজন নয়। তবে এ ব্যাপারে আমি আশাবাদী। বীমাখাতের সার্বিক উন্নয়নের প্রয়োজনে বীমার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলের যেমন- বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ, বীমা কোম্পানি ইত্যাদির সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও সহযোগিতা প্রয়োজন। এর মাধ্যমেই বর্তমান নৈরাজ্যজনক অবস্থার উত্তরণ সম্ভব। এর কোন বিকল্প ব্যবস্থা নেই বলে আমি মনে করি।