করপোরেট ব্যয় নিয়ন্ত্রণে স্ব-অর্থায়িত স্বাস্থ্য বীমা কার্যকর সমাধান
রাজ কিরণ দাস: বর্তমান সময়ে স্বাস্থ্য বীমার ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানগুলো নতুন একটি ধারা গ্রহণ করছে, যা পরিচিত স্ব-অর্থায়িত স্বাস্থ্য বীমা নামে। এই কাঠামোয় প্রতিষ্ঠান প্রথাগত বীমা কোম্পানিকে পূর্ণ প্রিমিয়াম পরিশোধ না করে নিজের তহবিল থেকে কর্মীদের চিকিৎসা ব্যয় মেটায়। প্রশাসনিক দায়িত্ব পালনের জন্য তৃতীয় পক্ষ প্রশাসককে নিয়োগ দেওয়া হয়, তবে প্রকৃত অর্থে দাবি পরিশোধের দায়িত্ব থাকে প্রতিষ্ঠানের উপর। এর ফলে খরচ ব্যবস্থাপনায় নিয়ন্ত্রণ বৃদ্ধি পায় এবং কর্মীদের জন্য আরও সরাসরি সুবিধা নিশ্চিত করা যায়।
স্ব-অর্থায়িত স্বাস্থ্য বীমা বিশেষভাবে কার্যকর হয় নিয়মিত ও তুলনামূলক কম ব্যয়ের চিকিৎসা ক্ষেত্রে। দাঁতের চিকিৎসা, চোখের পরীক্ষা, ওষুধ কেনা কিংবা সাধারণ চিকিৎসা পরামর্শের মতো ব্যয় প্রতিষ্ঠান সহজেই বহন করতে পারে। এতে অপ্রয়োজনীয় প্রিমিয়াম খরচ এড়ানো সম্ভব হয় এবং প্রতিষ্ঠানের বাজেট আরও কার্যকরভাবে ব্যবহার করা যায়। অন্যদিকে উচ্চ ব্যয়সম্পন্ন ও দীর্ঘমেয়াদি ঝুঁকির ক্ষেত্রে যেমন জীবন বীমা বা গুরুতর দুর্ঘটনা, প্রচলিত পূর্ণ বীমা এখনো অপরিহার্য হিসেবে বিবেচিত হয়।
কানাডার প্রেক্ষাপটে স্বাস্থ্য ব্যয় হিসাব একটি উল্লেখযোগ্য উদাহরণ, যা বাজেটভিত্তিক স্ব-অর্থায়িত সুবিধার অন্তর্ভুক্ত। এখানে প্রতিষ্ঠান কর্মীদের জন্য সীমা নির্ধারণ করে আগেই অর্থ সংরক্ষণ করে। কর্মীরা চিকিৎসা ব্যয় মেটানোর পর দাবি জমা দেয়, আর প্রশাসক যাচাই শেষে ফেরত প্রদান করে। এই সুবিধা করমুক্ত হওয়ায় কর্মীদের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে এবং প্রতিষ্ঠানও তা ব্যবসায়িক ব্যয় হিসেবে প্রদর্শন করতে পারে। ফলে দুই পক্ষের জন্যই এটি একটি লাভজনক ব্যবস্থা হয়ে দাঁড়ায়।
এই ব্যবস্থার প্রধান শক্তি হলো খরচ নিয়ন্ত্রণ ও পরিকল্পনার নমনীয়তা। প্রতিষ্ঠান তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী কাঠামো তৈরি করতে পারে, যা কর্মীদের জন্য স্বাস্থ্যসেবায় নিরাপত্তা এবং প্রতিষ্ঠানের জন্য অর্থনৈতিক সাশ্রয় নিশ্চিত করে। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ ক্ষেত্রগুলোতে পূর্ণাঙ্গ বীমা কাভারেজ বজায় রাখা প্রয়োজন, কারণ কেবল স্ব-অর্থায়িত পরিকল্পনার উপর নির্ভর করলে বড় রকমের আর্থিক ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।