করোনা সংক্রান্ত বীমা পলিসি ইস্যু অব্যাহত রাখার নির্দেশ ভারতে

ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক: কোভিড-১৯ তথা করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত স্বাস্থ্য বীমা পলিসি ইস্যু অব্যাহত রাখার নির্দেশ দিয়েছে ভারতের বীমা খাত নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইআরডিএ। সম্প্রতি বীমা গ্রাহকদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে সকল নন-লাইফ এবং হেলথ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিকে এই নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

ইন্স্যুরেন্স রেগুলেটরি এন্ড ডেভেলপমেন্ট অথরিটি অব ইন্ডিয়া বলছে, বীমা কোম্পানিগুলো ‘করোনা কবচ’ এবং ‘করোনা রক্ষক’ নামে স্বল্প মেয়াদী দুটি স্ট্যান্ডার্ড হেলথ ইন্স্যুরেন্স পলিসি ইস্যু করে আসছিল। কিন্তু সম্প্রতি কিছু বীমা কোম্পানির বিরুদ্ধে এসব বীমা পলিসি ইস্যু বন্ধ রাখার অভিযোগ এসেছে।

করোনা কবচ পলিসি হলো একটি স্ট্যান্ডার্ড কোভিড-স্পেসিফিক ইনডেমনিট-ভিত্তিক স্বাস্থ্য বীমা পলিসি, যা কোভিড-১৯ সম্পর্কিত চিকিৎসা ব্যয় বা মেডিকেল এক্সপেন্স এর জন্য বীমা কভারেজ প্রদান করে। এই বীমা পলিসি অনুযায়ী গ্রাহককে কমপক্ষে ২৪ ঘণ্টা হাসপাতালে ভর্তি থাকতে হয়।

এ ক্ষেত্রে হাসপাতালের বিল যাই হোক না কেন, এই পলিসি থেকে প্রদান করা হয়। গ্রাহক তার পুরো পরিবারের জন্যেও এই বীমা করতে পারবে। এতে সর্বোচ্চ ৫ লাখ রুপি কভারেজ নেয়া যায়। এ ছাড়াও হাসপাতালে ভর্তির আগে এবং পরের সমস্ত ব্যয় এই পলিসি থেকে বহন করা হয়।

অন্যদিকে করোন রক্ষক পলিসি হলো একটি স্ট্যান্ডার্ড বেনিফিট-ভিত্তিক স্বাস্থ্য বীমা পলিসি। এই পলিসি অনুযায়ী গ্রাহককে কমপক্ষে ৭২ ঘণ্টা হাসপাতালে ভর্তি থাকতে হয়। আড়াই লাখ রুপি পর্যন্ত এই পলিসির আওয়াতাধীনে কভার করা হয়।

এখানেও হাসপাতালের সমস্ত ব্যয় অন্তর্ভুক্ত আছে। তবে করোনা রক্ষক পলিসিতে অতিরিক্ত প্রিমিয়াম দিয়ে ডেইলি হসপিটাল ক্যাশ কভারেজ নেয়া সুযোগ নেই, যা করোনা কবচ পলিসিতে আছে। এ ছাড়াও এই পলিসিতে একটি শর্ত রয়েছে। তা হলো- গ্রাহককে একটি বৈধ পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে পরীক্ষা করাতে হবে।

গত বছরের জুলাইয়ে বীমা কোম্পানিগুলো এই দু’টি স্ট্যান্ডার্ড পলিসি চালু করেছে। এগুলো মূলত এমন লোকদের লক্ষ্য করে তৈরি করা হয়েছে যাদের কোনও স্বাস্থ্য বীমা কভারেজ নেই। প্রথম দিকে ২০২১ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত এগুলো ইস্যু করার অনুমতি দেয়া হয়েছিল।

তবে কোভিড-১৯ এর দ্বিতীয় ঢেউ দেশটিতে আঘাত হানার সাথে সাথে ইন্স্যুরেন্স রেগুলেটরি এন্ড ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (আইআরডিএ) বীমা কোম্পানিগুলোকে এই স্ট্যান্ডার্ড কোভিড পলিসিগুলো ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২১ পর্যন্ত নতুন করে ইস্যু এবং নবায়ন করার অনুমতি দিয়েছে।

টাইমস অব ইন্ডিয়া’র একটি প্রতিবেদন অনুসারে, দেশটির বীমা শিল্পের একটি সূত্র জানিয়েছে- যখন বীমা এই পলিসিগুলোর মূল্য নির্ধারণ করা হয় এবং বাজারে ছাড়া হয় তখন এই সংখ্যার ওপর কারোই দৃশ্যমানতা যাচাই করা ছিল না।

এ ছাড়াও এক বছরের মধ্যেই এই বীমা পলিসির সংখ্যা এতো বেশি হবে তাও কেউ অনুমান করতে পারেনি। গেলো বছর আমরা একটা ধাক্কা খেয়েছি এবং এভাবে চালিয়ে যাওয়া কঠিন। এ কারণে অনেক বীমা কোম্পানি এখন আর এই পলিসি চালু রাখতে চাচ্ছে না।

বীমা কোম্পানিগুলো জানিয়েছে, চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত দেশটিতে করোনা সংক্রান্ত বীমা পরিকল্পগুলোর ১ কোটি ২৮ লাখ পলিসি ইস্যু হয়েছে। এসব বীমা পলিসি থেকে ১০ বিলিয়ন রুপি তথা ১৩৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রিমিয়াম সংগ্রহ হয়েছে।